অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে ২৮ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবিতে ২৮ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

রাজধানীতে একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের দাবি জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন দেশের ২৮ বিশিষ্ট নাগরিক। অগ্নিদুর্ঘটনা প্রতিরোধে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনেরও আহ্বান জানিয়েছেন তাঁরা।

আজ মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, ৪ এপ্রিল বঙ্গবাজার এবং ১৫ এপ্রিল নিউ সুপার মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত ও নিঃস্ব হয়েছেন অনেক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। এর মধ্যে গত বৃহস্পতিবার নবাবপুরের একটি মার্কেটের গুদামে, শুক্রবার হাজারীবাগের একটি ট্যানারিতে এবং সোমবার উত্তরার বিজিবি মার্কেটেও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। রাজধানীর দুটি বড় মার্কেটে ভোরবেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সূত্রপাত কোনো পূর্বপরিকল্পনার অংশ কি না, তা নিয়ে জনমনে সন্দেহ রয়েছে। বিশেষ করে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। যেভাবে ভোররাতে দোকান মালিক-কর্মচারী, নৈশপ্রহরীদের অনুপস্থিতিতে প্রায় প্রতিটি অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে তাতে এটি সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আছে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অগ্নিকাণ্ডের পর সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থাসমূহের তৎপরতা নিয়ে অনেকেই গণমাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। বঙ্গবাজারের ব্যবসায়ীদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন, সময়মতো ফায়ার সার্ভিস অভিযানে নামলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যেত। গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদসূত্রে দেখা যাচ্ছে, ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ অগ্নিকাণ্ডের জন্য সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ করছেন। আবার সরকারি সংস্থা ও সিটি করপোরেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ব্যবসায়ীদের দোষারোপ করছেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে অগ্নিকাণ্ডের কারণ এবং এখানে যদি কোনো পক্ষের দায়িত্বে অবহেলা বা গাফিলতির কোনো বিষয় থাকে সেটি যথাযথভাবে উদ্‌ঘাটন করা প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেছেন স্বাক্ষরকারীরা।

বিবৃতিতে নাগরিকেরা বলেছেন, ‘অতীত অভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি, কোনো একটি ঘটনা ঘটলেই সরকারের বিভিন্ন সংস্থা তৎপরতা দেখায়, তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা রোধে কমিটি নানা সুপারিশ প্রদান করে, যেগুলো আর পরে বাস্তবায়িত হয় না। বিশেষজ্ঞদের মতে, সুপারিশ বাস্তবায়িত না হওয়ার কারণ রাজউক, বিস্ফোরক অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলোর জবাবদিহির অভাব। তাদের মতে সিটি করপোরেশন, ফায়ার সার্ভিসসহ জড়িত প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে বড় বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। জনগণের নিরাপত্তা ও সুরক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে অগ্নিদুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি ও ভয়াবহতা রোধে সব সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন অত্যন্ত জরুরি।’

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সুলতানা কামাল, মানবাধিকারকর্মী হামিদা হোসেন, সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার, অধ্যাপক পারভীন হাসান, খুশী কবির, জেড আই খান পান্না, অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, মানবাধিকারকর্মী শিরীন পারভীন হক, আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, সুব্রত চৌধুরী, শাহীন আনাম, লেখক রেহনুমা আহমেদ, শামসুল হুদা, অধ্যাপক মোহাম্মদ তানজিম উদ্দিন খান, আইনজীবী তবারক হোসেইন, সারা হোসেন প্রমুখ।