জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণে কার্যকর হচ্ছে অটো-ফর্মুলা

জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণে কার্যকর হচ্ছে অটো-ফর্মুলা

জ্বালানিতে ভর্তুকি থাকছে না। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছে জ্বালানি বিভাগ। রবিবার (৩০ এপ্রিল) জ্বালানি বিভাগের সঙ্গে সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দল বৈঠক করেছে। ওই বৈঠকের একটি সূত্র এ খবর নিশ্চিত করেছে।

বৈঠক সূত্র বলছে, শুরুতে জ্বালানি তেলে ভর্তুকি তুলে দেওয়া হবে। চলতি বছরের শেষ নাগাদ এটি বাস্তবায়ন করা হবে। এ জন্য একটি ফর্মুলা করা হচ্ছে। এই ফর্মুলায় প্রতি মাসে তেলের দাম নির্ধারণ করা হবে। যে দামে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে তেল আমদানি করা হবে সেই দামেই তেল বিক্রি করা হবে।

এখন এলএনজি যেভাবে বিক্রি করা হয় ঠিক একইভাবে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করা হবে।

বৈঠকে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান রাহুল আনন্দ আইএমএফ-এর পক্ষে নেতৃত্ব দেন। অন্যদিকে জ্বালানি সচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদারের নেতৃত্বে জ্বালানি বিভাগের কর্মকর্তারা অংশ নেন।

বৈঠকে ছিলেন এমন এক কর্মকর্তা বলেন, ‘আইএমএফ আমাদের কাছে জানতে চেয়েছে আমরা জ্বালানি থেকে ভর্তুকি তুলে দেওয়ার জন্য কী কী করছি। আমরা তাদের বলেছি, ইতোমধ্যে এক দফা গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। একই সঙ্গে আগামী সেপ্টেম্বর নাগাদ আমরা আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জ্বালানি তেলের দাম নির্ধারণ করবো। তারা বলেছিল গ্যাসের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের সঙ্গে সংগতি রেখে আমরা বৃদ্ধি করবো কিনা। আমরা বলেছি, জ্বালানি তেলের দর পরিবর্তনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রভাব বিবেচনা করেই গ্যাসের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন খাত সংস্কারে আইএমএফ-এর সুপারিশ বাংলাদেশ কতটা বাস্তবায়ন করছে তা পর্যালোচনাই এই প্রতিনিধি দলের প্রধান লক্ষ্য। আইএমএফ-এর এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের প্রধান রাহুল আনন্দর নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশ সফর করছেন। প্রতিনিধি দল ধারাবাহিকভাবে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বৈঠক করছে। আইএমএফ বাংলাদেশকে ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণ দিচ্ছে। ইতোমধ্যে এর প্রথম কিস্তি দিয়েছে। ঋণ অনুমোদনের তিন মাস পর ঢাকায় স্টাফ কনসালটেশন মিশন পাঠায় আইএমএম।

এখন যেভাবে এলপিজির দাম নির্ধারণ করা হয় সেভাবে প্রতি মাসে তেলের দামও ঘোষণা করা হবে। আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয়ে আন্তর্জাতিক দর বিবেচনা করা হলে প্রতি মাসে মূল্য সমন্বয় করা হবে। তেলের দাম কমলে দাম কমানো হবে, বাড়লে বাড়ানো হবে। তেলের মূল্য নির্ধারণের এই দায়িত্ব বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।

জ্বালানি তেলের মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে এই অটো-ফর্মুলা কার্যকরের চিন্তা বাংলাদেশও অনেক দিন থেকে করছে।