সুনামগঞ্জে সাংবাদিকের ওপর হামলাকারী যুবলীগ নেতা সজিব গ্রেফতার

সুনামগঞ্জে সাংবাদিকের ওপর হামলাকারী যুবলীগ নেতা সজিব গ্রেফতার

সুনামগঞ্জ শহরে যমুনা টেলিভিশনের সুনামগঞ্জ প্রতিবেদক আমিনুল ইসলামের ওপর যুবলীগ কর্মীদের হামলার ঘটনায় সদর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিল্লুর রহমান সজিবকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার বিকালে সুনামগঞ্জ শহরে অভিযান চালিয়ে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের পর পুলিশ তাকে আদালতে সোপর্দ করেছে।

এর আগে শুক্রবার দুপুরে যমুনা টেলিভিশনের সুনামগঞ্জ প্রতিবেদক আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে তার উপর হামলাকারী সদর উপজেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিল্লুর রহমান সজিবকে প্রধান আসামি করে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় মামলা করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৫-৭ জনকে আসামি করা হয়।
জিল্লুর রহমান সজিব শহরের তেঘরিয়া এলাকার রফিকুল ইসলামের পুত্র বলে জানা গেছে।

সুনামগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. ইখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সাংবাদিক আমিনুল ইসলামের ওপর হামলার ঘটনায় শুক্রবার বিকালে জিল্লুর রহমান সজিবকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পরে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। মামলার অপর আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যাহত আছে।

প্রসঙ্গত, বৃহস্পতিবার সকালে সদর উপজেলার লালপুর এলাকায় নির্মিতব্য প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর নির্মাণ কাজে অনিয়ম বিষয়ে সম্প্রতি যমুনা টেলিভিশনের করা রিপোর্টে তদন্ত দল সেখানে যায়। তদন্ত কমিটির প্রধান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিজন কুমার স্বাক্ষরিত একটি চিঠির মাধ্যমে সাংবাদিক আমিনুল ইসলামকে তদন্তে সহায়তা করতে অনুরোধ জানালে তিনি সকাল ১০টায় লালপুরে প্রকল্প এলাকায় যান। তদন্ত দলের উপস্থিতিতেই যুবলীগ সভাপতি চপল সাংবাদিক আমিনুল ইসলামের রিপোর্টে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ও তাকে উদ্দেশ করে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।

এ সময় আমিনুল প্রতিবাদ করলে চপল তাকে শহরছাড়া করবেন বলে সবার সামনেই হুমকি দেন। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে চেষ্টা করে তদন্ত কমিটি। এ সময় চপল তার নিজ বলয়ের ছাত্রলীগ ও যুবলীগ কর্মীদের খবর দিলে তদন্ত দলের উপস্থিতিতেই সেখানে মেটরসাইকেলযোগে জড়ো হতে থাকেন নেতাকর্মীরা।

ছাত্রলীগ নেতা দীপংকর কান্তি দেসহ যুবলীগের কর্মীরাও ঘটনাস্থলে পৌঁছে আমিনুল ইসলামকে হেনস্তা করার চেষ্টা করতে থাকেন। দুপুর ১২টার দিকে পরিস্থিতি উত্তপ্ত দেখে তদন্ত দল প্রকল্প এলাকা ত্যাগ করতে থাকে। এ সময় আমিনুলকে নিজের গাড়িতে করে পৌঁছে দেবেন বলে গাড়িতে উঠতে বলেন চপল। তদন্ত দলের প্রধান নিজেও আমিনুলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চপলকে অনুরোধ জানান। 

এদিকে প্রকল্প এলাকা থেকেই চপলের গাড়ির সামনে ও পেছনে শহরের দিকে মোটরসাইকেলে আসতে থাকেন যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। শহরের মল্লিকপুর এলাকায় উপজেলা পরিষদের প্রধান ফটকের সামনে চপল গাড়ি থামিয়ে আমিনুল ইসলামকে গাড়ি থেকে নামিয়ে দেন। এ সময় মোটরসাইকেলে থাকা যুবকরা আমিনুলকে ঘেরাও করে আঘাত করতে শুরু করেন। চপল দ্রুত এসে তাকে একটি মোটরসাইকেলে করে হাসপাতালে পাঠান।