হিটস্ট্রোকে ডুমুরিয়ায় ঝরলো স্কুলছাত্রের প্রাণ, রূপসায় ৫ পরীক্ষার্থী হাসপাতালে

হিটস্ট্রোকে ডুমুরিয়ায় ঝরলো স্কুলছাত্রের প্রাণ, রূপসায় ৫ পরীক্ষার্থী হাসপাতালে

পরীক্ষা দিতে যাওয়ার পথে ডুুমুরিয়ায় প্রচন্ড তাপদাহে হিটস্ট্রোকে রংপুর কালিবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র সুরজিত বসাকের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে পরীক্ষা চলাকালে অতিরিক্ত গরম ও বিদ্যুৎ না থাকায় রূপসা বালিকা বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির মুনিয়া, ৬ষ্ঠ শ্রেণির তনুসকা শীল, বৈশাখী, রেক্সনা ও সানজিদা গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাদেরকে রূপসা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।

মঙ্গলবার সকালে বাংলা মূল্যায়ন পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে স্কুলে গিয়ে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়ে সুরজিত বসাক। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। সে উপজেলার রংপুর গ্রামের অনুপতি বসাকের ছেলে এবং রংপুর কালিবাড়ি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণির ছাত্র।

মৃতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবারে সুরজিত বসাক রংপুর কালীবাটী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে যায়। যাওয়ার পথে প্রচন্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়ে সে। অসুস্থ অবস্থায় ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শিক্ষার্থীকে মৃত ঘোষণা করেন। এ সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এলাকাসহ উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শোকের ছায়া নেমে আসে।

স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক অনুদ্যুতি মন্ডল বলেন, আগামীকাল প্রধান শিক্ষকের শেষ কর্মদিবস তাই দায়িত্ব বুঝে নিচ্ছিলাম। এমন সময় ওই ছাত্রটির অসুস্থতার খবর পাই। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে স্থানীয় চিকিৎসকের নিকট নিয়ে অক্সিজেন দেয়া হয়।

কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় দ্রুত এ্যাম্বুলেন্স যোগে তাকে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক সুরঞ্জিতকে মৃত বলে ঘোষণা করে। তিনি আরও বলেন সুরজিত শ্বাসকষ্টের রোগী ছিল। স্কুলছাত্র সুরজিত বসাকের আকস্মিক মৃত্যুতে বিদ্যালয় শিক্ষক-কর্মচারী ও এলাকাবাসীর মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

ডুমুরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার দেবাশীষ বিশ্বাস বলেন, ছাত্রটির মৃত্যুর খবর পেয়েছি। কিন্তু কি কারণে মারা গেছে তা জানতে পারিনি।

ডুমুরিয়া থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেখ কনি মিয়া হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সুরজিত বসাকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
অপরদিকে রূপসা উপজেলায় কাজদিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ে ১৩ জুন পরীক্ষা চলাকালীন বিদ্যুৎ না থাকায় অতিরিক্ত গরম সইতে না পেরে ৫ জন পরীক্ষার্থী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। পরে তাদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা চাঁদ সুলতানা বলেন, বিদ্যুৎ না থাকায় ও তীব্র গরমে পরীক্ষার হলে হঠাৎ এক এক করে পরীক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে ঘুরে পড়তে শুরু করে। এমতাবস্থায় তাৎক্ষণিক অসুস্থ শিক্ষার্থীদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। তখন জরুরি বিভাগে কর্মরত চিকিৎসক অক্সিজেন এবং স্যালাইন পুশের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীদের ভর্তি করে নেয়। পরে অসুস্থ শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের বিষয়টি জানানো হয়।

আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পিকিং সিকদার বলেন, অতিরিক্ত গরমের পাশাপাশি পরীক্ষার চাপ থাকায় মানসিক ও শারীরিক ভাবে তারা অসুস্থ হয়ে পড়ে।

রূপসা পল্লী বিদ্যুৎ ব্রাঞ্চের প্রধান মো. এ হালিম খান বলেন, ঘটনার সময়ে ওই এলাকায় ধারাবাহিকভাবে বিদ্যুৎ চলমান ছিল। ঘটনার পর জানতে পারলাম ওই এলাকার ফিউজটি কেটে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।