বাসে আগুন দেয়ার সময় রাস্তায় যুবলীগের নেতা-কর্মী, পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিলো

বাসে আগুন দেয়ার সময় রাস্তায় যুবলীগের নেতা-কর্মী, পুলিশ দাঁড়িয়ে ছিলো

জানা গেছে, ঢাকার মাতুয়াইলে তিশা পরিবহনের একটি বাসে তিন যুবক মোটরসাইকেলে করে এসে পেট্রোল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেবার সময় যুবলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠি হাতে সড়কে অবস্থান নেয়। সড়কে সতর্ক অবস্থানে ছিলো পুলিশ ও র‍্যাব।এর মধ্যেই মাতুয়াইলের শান্ত ফিলিং স্টেশনের সামনে তিন যুবক একটি বাসে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। এ ঘটনা স্বচক্ষে দেখেছে সেখানকার স্থানীয় কয়েকজন।

এছাড়া আগুনে পুড়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্থ বাসটির চালক মো. সানাউল্লাহ শনিবার সাংবাদিকদের বলেন, তিন যুবক মোটরসাইকেলে করে এসেছিল। তাদের কাছে একটি বোতলে পেট্রল ও দেশলাই ছিল। তাদের হুমকির পর তিনি (বাসচালক) লাফ দিয়ে নেমে যান।

এসময় আশেপাশে পুলিশের অবস্থান ছিলো কীনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান রাস্তার দুই পার্শ্বে সে সময় পুলিশ অবস্থান নিয়েছিলো।

তিনি বলেন, যখন বাসে আগুন দেওয়া হয়, তখন আশপাশে পুলিশ ছিল। দুই মিনিটের মধ্যে আগুন দিয়ে মোটরসাইকেলে যুবকেরা চলে যান।

জানা গেছে, পুলিশের হামলার পর ধাওয়া খেয়ে যখন বিএনপির নেতা-কর্মীরা নিরাপদ দূরত্বে চলে যায় তখনি যুবলীগের নেতা-কর্মীরা লাঠি হাতে সড়কে অবস্থান নেয়। সড়কে সতর্ক অবস্থানে ছিলো পুলিশ ও র‍্যাব। পরিস্থিতি তখন অনেকটাই শান্ত। ঠিক তখন মাতুয়াইলের শান্ত ফিলিং স্টেশনের সামনে তিন যুবক একটি বাসে আগুন ধরিয়ে পালিয়ে যায়। বেলা ১টা ৪০ মিনিটের দিকের এই ঘটনায় মাতুয়াইলের বাসিন্দাদের মধ্যে তখন আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।

শনিবার ঢাকার চার প্রবেশমুখে বিএনপির অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ বেধে যায়। সংঘর্ষের পর তিশা পরিবহনের বাসটিতে আগুন দেওয়া হয়, যেটির চালক ছিলেন সানাউল্লাহ। বেলা ১টা ৪০ মিনিটের দিকে ঘটে এই ঘটনা।

সানাউল্লাহর ভাষ্য, তিনি লাফ দিয়ে বাস থেকে নামার পর ওই যুবকেরা বোতল থেকে বাসের ভেতরে পেট্রল ঢালেন এবং দেশলাই দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন। এরপর তারা মোটরসাইকেলে করে উল্টো পথ দিয়ে যাত্রাবাড়ীর দিকে চলে যান। পরে আশপাশের লোকজন বাসের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।

এর আগে দুপুর ১২টার পর যাত্রাবাড়ীর মাতুয়াইল শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সামনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের কর্মসূচিতে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলে বেলা দেড়টা পর্যন্ত। একপর্যায়ে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ধাওয়া খেয়ে শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের গলির ভেতরে চলে যান। আর ইনস্টিটিউটের সামনে পুলিশ, আনসার ও র‍্যাব সদস্যরা অবস্থান নেন।

বাসচালক সানাউল্লাহ বলেন, ঘটনার সময় তিনি বাসটি সড়ক থেকে মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সামনের শান্ত ফিলিং স্টেশনের ভেতরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। তিনি যখন বাস ঘোরাচ্ছিলেন, ঠিক তখন তিন যুবক তাঁর সামনে আসেন।

প্রত্যক্ষদর্শী রাকিব হাসান বলেন, ‘আমাদের চোখের সামনেই যাত্রাবাড়ী থেকে উল্টো পথে আসা তিন যুবক বাসে আগুন দিয়ে পালিয়ে গেছেন।’

ফিলিং স্টেশনের পাশেই দোকান আকবর খানের। তিনি  বলেন, ‘আমরা দেখলাম, তিনজন যুবক চালককে হুমকি দিয়ে বাস থেকে নামতে বাধ্য করার পর বাসের ভেতর পেট্রল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেন। অনেক লোকজনের সামনেই এই তিন দুর্বৃত্ত বাসটিতে আগুন দিয়ে পালিয়েছেন।’

এদিকে শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের সামনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া চলার সময় আরও দুটি বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে ওই আগুন নেভান।