বাংলাদেশে বিরোধী দল ও সরকার সমালোচকদের হয়রানি অব্যাহত রয়েছে: ফ্রিডম হাউস

বাংলাদেশে বিরোধী দল ও সরকার সমালোচকদের হয়রানি অব্যাহত রয়েছে: ফ্রিডম হাউস

বাংলাদেশে বিরোধী দল ও তাদের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এবং সরকারের বিভিন্ন বিষয়ের সমালোচনা করা গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের হয়রানি অব্যাহত রয়েছে বলে মন্তব্য করেছে ওয়াশিংটনভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ফ্রিডম হাউস। 
ফ্রিডম হাউসের বার্ষিক প্রতিবেদনে এ মন্তব্য করা হয়েছে। ‘ফ্রিডম অব দ্য নেট ২০২৩’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়েছে বুধবার।

প্রতিবেদেন বলা হয়েছে, দমন–পীড়নের মুখে পড়েছেন বিরোধী দল বিএনপির সমর্থকেরা। বিএনপির সভা–সমাবেশের আগে নানা সময়ে ইন্টারনেট ও যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ব্যবহার করে বিরোধী নেতা, সাংবাদিক, সরকারের সমালোচক ও সাধারণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে কর্তৃপক্ষ।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশে আগের বছরের তুলনায় নাগরিকদের ইন্টারনেটে স্বাধীনতা কমেছে।

এতে বলা হয়, ইন্টারনেটে স্বাধীনতার ক্ষেত্রে এ বছর বাংলাদেশের স্কোর ১০০-এর মধ্যে ৪১। ২০২২ সালে তা ছিল ৪৩।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্কোর যত বেশি হবে, সেই দেশ ইন্টারনেট স্বাধীনতার দিক থেকে তত উদার। কোনো দেশের স্কোর ৭০ থেকে ১০০-এর মধ্যে থাকলে সেটিকে ইন্টারনেটে স্বাধীন, ৪০ থেকে ৬৯-এর মধ্যে থাকলে সেটিকে আংশিক স্বাধীন এবং শূন্য থেকে ৩৯-এর মধ্যে থাকলে দেশটি স্বাধীন নয় বলে বিবেচনা করা হয়। সেই হিসাবে বাংলাদেশে ইন্টারনেটে নাগরিকদের আংশিক স্বাধীনতা রয়েছে।

গত বছরের ১ জুন থেকে গত ৩১ মে পর্যন্ত ঘটনাবলি বিবেচনায় নিয়ে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে ফ্রিডম হাউস। এ সময়ে ইন্টারনেটে প্রবেশে বাধার ক্ষেত্রে ২৫-এর মধ্যে ১২, বিষয়বস্তু সীমিত করার ক্ষেত্রে ৩৫-এর মধ্যে ১৮ এবং ব্যবহারকারীর অধিকার লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ৪০-এর মধ্যে ১১ নম্বর দেওয়া হয়েছে বাংলাদেশকে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ সময়ে বাংলাদেশে অনলাইনে সোচ্চার অধিকারকর্মী ও সাংবাদিকদের ওপর শারীরিক সহিংসতার ঘটনা বেড়েছে।

সংস্থাটি বলেছে, বাংলাদেশে দুর্নীতি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছে এবং রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে দুর্নীতি দমনপ্রক্রিয়া দুর্বল হয়েছে।

মোট ৭০টি দেশ নিয়ে ফ্রিডম হাউসের প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে। তাতে বাংলাদেশের প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে ভারতের স্কোর ৫০, পাকিস্তানের ২৬, শ্রীলঙ্কার ৫২ ও মিয়ানমারের ১০। সবচেয়ে বেশি ৯৩ স্কোর নিয়ে ইন্টারনেটের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে ইউরোপের দেশ এস্তোনিয়া। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র ৭৬, কানাডা ৮৮, জার্মানি ৭৭, সৌদি আরব ২৫ ও রাশিয়া ২১ স্কোর করেছে। তালিকায় ৯ স্কোর নিয়ে সবচেয়ে তলানিতে রয়েছে চীন।