বৃষ্টি চলবে আরো ৩ দিন

বৃষ্টি চলবে আরো ৩ দিন

লঘুচাপ ও মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সারা দেশে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। বিদায়ের আগে আগে বাংলাদেশে মৌসুমি বায়ু বেশ সক্রিয়। আগামী তিন দিন পর বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে আসতে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। গত দুই-তিন দিন থেকে অনেকটা নিরবচ্ছিন্ন বৃষ্টি হচ্ছে দেশব্যাপী। দেশের কোথাও কোথাও ২৪ ঘণ্টায় ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়ে গেছে। ভারী বৃষ্টিপাতে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের কিছু কিছু স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।

রাজশাহীতে গত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টির কারণে এত জলাবদ্ধতা হয়েছে যে, শহরের রাস্তায় চলাচল করতে গতকাল নৌকা নামিয়েছেন সাধারণ মানুষ। রাজশাহীতে ২৪ ঘণ্টায় ২৪৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে। রাজশাহী ছাড়াও গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের আরো কমপক্ষে ১০টি স্থানে ১০০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে। রাজধানী ঢাকায় ৫২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

সাধারণত সেপ্টেম্বর শেষে অক্টোবর মাস আসার পর পরই দেশে বৃষ্টিপাত কমে যায়। আকাশে মেঘ থাকলেও তা থাকে সাদা ও ছাড়া ছাড়া, যা থেকে বৃষ্টি হয় না। কিন্তু এ বছরের সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ এবং অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহটি অন্যান্য বছরের তুলনায় ব্যতিক্রম, সারা দেশেই বৃষ্টি হচ্ছে।

আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মৌসুমি বায়ুর পাশাপাশি বর্তমানে যে লঘুচাপটি অব্যাহত আছে এর শুরু গত ২৯ সেপ্টেম্বর। লঘুচাপটির শুরুটা সাগরে হলেও এখন তা আছে স্থলভাগে। এটি ধীরে ধীরে পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে যাচ্ছে। আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে বাংলাদেশের পূর্বাঞ্চলে অর্থাৎ সিলেট এলাকায় বৃষ্টি ঝরিয়ে তা ভারতের আসামের দিকে গিয়ে শেষ হবে। আবহাওয়া অফিস বলছে, দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে লঘুচাপের প্রভাব শেষ হলে মৌসুমি বায়ু তখনো থেকে যাবে। তবে বৃষ্টির পরিমাণ কমে যেতে পারে।

ঢাকা শহরে সকাল থেকেই থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছিল। তবে দুপুরের পর থেকে রাত সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত চলছিল। নিরবচ্ছিন্ন বৃষ্টিতে ঢাকা শহরের অনেক রাস্তায় হাঁটুপানি জমে গেছে। কোথাও কোথাও এর চেয়ে বেশি পানি জমে যায়। সিএনজি চালিত গাড়িগুলোর ইঞ্জিনের ভেতরে পানি ঢুকে রাস্তায় বন্ধ হয়ে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। সারাদিনের বৃষ্টিতে সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ ছিল না। টাউন সার্ভিস বাসগুলোতে তিল ধারণের ঠাঁই ছিল না। গাদাগাদি করে যাত্রী নেয়ার পরও বাসে উঠতে না পেরে উচ্চ ভাড়ায় রিকশায় যাতায়াত করতে বাধ্য হয়েছে অনেকে। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি ছিল নারীদের। অফিসে যেতে অথবা অফিস থেকে ফেরার পথে বৃষ্টি থাকায় সিএনজি অথবা রিকশাওয়ালা উচ্চ ভাড়া আদায় করে নিয়েছে।

কয়েক দিন থেকে অব্যাহত বৃষ্টির কারণে দেশে শাকসবজির উৎপাদন কমে গেছে। ফলে ঢাকার কাঁচা বাজারে শাকসবজি সরবরাহ কম এবং যাও পাওয়া যাচ্ছে, তা বেশ চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় শত মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়েছে টাঙ্গাইলে ১৫০ মিলিমিটার, ফরিদপুরে ১৬৬ মিলিমিটার, ঈশ্বরদীতে ১১৬ মিলিমিটার, তাড়াশে ১০২ মিলিমিটার, নেত্রকোনায় ১০৪ মিলিমিটার, চুয়াডাঙ্গায় ১৫৪ মিলিমিটার, কুমারখালীতে ১২১ মিলিমিটার, ভোলায় ১১৭ মিলিমিটার, খেপুপাড়ায় ১০৭ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশের প্রায় সর্বত্র ৫০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি হয়ে গেছে।