নিয়ন্ত্রণহীন নিত্যপণ্যের বাজার, দিশাহারা ক্রেতারা

নিয়ন্ত্রণহীন নিত্যপণ্যের বাজার, দিশাহারা ক্রেতারা

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বমূল্যে দিশাহারা মানুষ। বাধ্য হয়ে অনেকে মৌলিক খাবারও কাটছাঁট করছেন। এমন পরিস্থিতিতে মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিতে গত মাসে আলু, পেঁয়াজ, ডিমের দাম বেঁধে দেয় সরকার। এরপর তিন সপ্তাহ পার হলেও বাজারে তার কার্যকারিতা মেলেনি। বরং দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। এছাড়া বাজারে ফের বেড়েছে মুরগির দাম। এক সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ টাকা।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সিম বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজিতে, ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা প্রতি পিস।

সরকার আলুর দাম বেঁধে দিলেও তা মানছেন না বিক্রেতারা। গত ১৪ সেপ্টেম্বর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা নির্ধারণ করে দেয়া হয়। তবে বাজার ঘুরে দেখা যাচ্ছে ৪৫ টাকা কেজি দরেও বিক্রি হচ্ছে আলু। বাজারে শালগম ৮০ টাকা কেজি, গাজর ১২০ টাকা, বেগুন ৯০ টাকা, টমেটো ১২০ টাকা ও শসা ৭০ টাকা এবং পেঁপে কেজি প্রতি ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া করলা ১০০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০ থেকে ১০০ টাকা, গোল বেগুন প্রতি কেজি ১২০ টাকা, কচুছড়া ১০০ টাকা কেজি, কাকরোল ৮০ টাকা কেজি, পটল ৭০ টাকা কেজি, লতি ৮০ টাকা কেজি, ঢেড়স ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

মিরপুর-২ নম্বর কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতারা বলেন, গত সপ্তাহে ফুলকপি বিক্রি ছিল ৫০ টাকা, আজ ৬০ টাকা। মূলা আর শালগম ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি গত সপ্তাহে ছিল, বর্তমানে ৮০, একই দাম। এখন শীতকালীন সবজি মৌসুম শুরু হয়েছে। তার মধ্যে বৃষ্টি-বাদল। বৃষ্টির কারণে সবজি বাজারে পর্যাপ্ত আসছে না। তাই শীতকালীন সবজির দাম একটু বেশি।

এদিকে বাজারে মুরগির দাম আরও বেড়েছে। গত সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগির প্রতি কেজির দাম ছিল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৯০ থেকে ২০০ টাকা। সোনালি মুরগির দাম ছিল প্রতি কেজি ৩১০ থেকে ৩২০ টাকা। বাজারে এই মুরগি গতকাল বুধবার বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকায়।

পেয়াজের বাজারেরও একই অবস্থা। বিক্রি হচ্ছে না সরকারের বেঁধে দেয়া দামে। কাওরান বাজার, শ্যামলী, মিরপুর ১০, মিরপুর-২ এ বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতি কেজি পেয়াজ(দেশি) বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকায়। মিরপুর ২-এর উত্তর পীরের বাগের এক বিক্রেতার কাছে জানতে চাওয়া হয়, কেন সরকারের বেঁধে দেয়া দামে বিক্রি হচ্ছে না। তিনি কিছুটা বিরক্ত হয়ে বললেন, আমরা কী করবো ? আমরা আনি আড়ত থেকে। সেখানেও জিজ্ঞাসা করলে তারা কোনো উত্তর দিতে পারে না। ফলে আমরা যে দামে আনি তার থেকে ৫-৬ টাকা বেশি দরে বেচি। এতে ক্রেতাদের সাথে আমার তর্ক-বিতর্ক হয়। লসেতো আর বেচা যায় না।

এদিকে কিছু ক্রেতা অভিযোগ করেন, নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দাম দিয়ে তাদের কিনতে হচ্ছে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এই দাম কি কখনই কমবে না? এভাবে রোজ দাম বাড়লে চলাটাই মুশকিল। একেকদিন একেক পরিস্থিতিতে পড়তে হচ্ছে আমাদের।