সেপ্টেম্বর মাসে ৪০২ সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৪১৭

সেপ্টেম্বর মাসে ৪০২ সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত ৪১৭

দেশে সেপ্টেম্বর মাসে ৪০২ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪১৭ জন নিহত ও ৬৫১ জন আহত হয়েছে। এই সময়ে রেলপথে ৪৯টি দুর্ঘটনায় ৫১ জন নিহত ও ২৬ জন আহত হয়েছেন। আর নৌপথে ১৬টি দুর্ঘটনায় ২৮ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছেন, নিখোঁজ রয়েছেন ৩ জন। শনিবার (৭ অক্টোবর) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সেপ্টেম্বরে ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই বিভাগে ১১৪ টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১১৮ জন নিহত ও ১১২ জন আহত হয়েছেন, আর সবচেয়ে কম সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে সিলেট বিভাগে ২৫টি। যেখানে ২৯ জন নিহত ও ১০৬ জন আহত হয়েছেন।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, এসব দুর্ঘটনায় ১০ জন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ১৪৩ জন চালক, ৬৬ জন পথচারী, ৬০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৬৫ জন শিক্ষার্থী, ০৮ জন শিক্ষক, ৭৪ জন নারী, ৪৪ জন শিশু, ০২ জন সাংবাদিক, ০২ জন চিকিৎসক , ০৩ জন বীর মুক্তিযোদ্ধা, এবং ১০ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী রয়েছেন। যাদের পরিচয় মিলেছে।

যেসব দুর্ঘটনা ঘটোছে তার মধ্যে ৫৩৪ টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ৩০.৩০ শতাংশ মোটরসাইকেল, ২৩.৯৭ শতাংশ ট্রাক-পিকাপ-কাভার্ডভ্যান ও লরি, ১৪.৪১ শতাংশ বাস, ১৬.৪৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৪.৮৬ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিক্সা, ৪.৪৯ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৫.৪৩ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস রয়েছে।

দুর্ঘটনার ৬২.১৮ শতাংশ গাড়ি চাপা, ১৫.৮৭ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১৬.৯১ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যাওয়া এবং ২.৯১ শতাংশ বিবিধ কারণে সংঘটিত হয়েছে। তবে সবচেয়ে আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে ০.৪৩ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে যানবাহনের চাকায় ওড়না পেছিয়ে পড়ে যাওয়া।

দুর্ঘটনাগুলোর ৩৭.০৬ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২৭.৬১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২৯.১০ শতাংশ ফিডার রোডে ঘটেছে। এছাড়াও সারা দেশের মোট দুর্ঘটনার ৫.৪৭ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ০.৪৯ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও ০.২৪ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংগঠিত হয়েছে।

সড়ক দুর্ঘটনার উল্লেখযোগ্য কারণ হিসেবে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ হচ্ছে-
১. অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো।
২.ট্রাফিক আইনের অপপ্রয়োগ, দুর্বল প্রয়োগ, ট্রাফিক বিভাগের অনিয়ম দুর্নীতি ব্যাপক বৃদ্ধি।
৩. মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি ও এসব যানবাহন সড়ক মহাসড়কে অবাধে চলাচল।
৪. যানবাহনের ত্রুটি, ট্রাফিক আইন না মানার প্রবণতা।

সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিরোধে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির উল্লেখযোগ্য সুপারিশ হলো-
১. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, ডিজিটাল পদ্ধতিতে যানবাহনের ফিটনেস প্রদান।
২. মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা।
৩. সড়কে চাদাঁবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা।
৪. চলতি বর্ষায় ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তার মাঝে সৃষ্ট ছোট বড় গর্ত দ্রুত ভরাট করে রাস্তার সংস্কার করা।