যাত্রী নেই, গাবতলী থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছাড়েনি

যাত্রী নেই, গাবতলী থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছাড়েনি

বিভিন্ন বাস কোম্পানির টিকিট কাউন্টার খোলা। তবে টিকিট বিক্রির ব্যস্ততা নেই। যাত্রী না থাকায় অলস সময় কাটাচ্ছেন বাস কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধিরা।

বিএনপির তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচির প্রথম দিন আজ মঙ্গলবার সকালে এই চিত্র দেখা গেল রাজধানীর গাবতলী আন্তজেলা বাস টার্মিনালে।

যাত্রী না থাকায় এই টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার একটি বাসও ছেড়ে যায়নি। পাঁচটি বাস পরিবহন কোম্পানির প্রতিনিধিরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

সকাল সাড়ে আটটা থেকে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত সরেজমিন দেখা যায়, যাত্রীর অপেক্ষায় টিকিট কাউন্টার খুলে বসে আছেন পরিবহনকর্মীরা। তবে পুরো টার্মিনালই প্রায় ফাঁকা। সেখানে শুধু রয়েছেন হকার, পরিবহন কোম্পানির প্রতিনিধি ও পরিবহনশ্রমিকেরা। কোনো যাত্রী নেই।

টার্মিনালের সামনের সড়ক ও আশপাশে পাম্পগুলোতেও দূরপাল্লার বাস খুব বেশি দেখা যায়নি। সাধারণত এসব জায়গায় বাসগুলো দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।হানিফ পরিবহনের একটি কাউন্টার ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে খুলে বসে আছেন বলে জানালেন টিকিট বিক্রেতা শুভ ইসলাম। তিনি বলেন, সকাল নয়টার মধ্যে তাঁদের চারটি বাস ছাড়ার কথা, কিন্তু একটিও ছেড়ে যায়নি।

শুভর ভাষ্য অনুযায়ী, টিকিটের জন্য কোনো একজন যাত্রীও কাউন্টারে আসেননি। যাত্রী ছাড়া বাস ছাড়বেন কীভাবে?

ভোর থেকে সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত একটিও বাস ছেড়ে যায়নি সোহাগ পরিবহনের। টিকিট বিক্রেতা উজ্জ্বল হোসেন জানান, গাড়ি ছাড়ার জন্য তাঁরা প্রস্তুত। গাড়ি বসা রাখলেই তো লোকসান। কিন্তু কার জন্য গাড়ি ছাড়বেন? যাত্রীই তো নেই।

একই অবস্থা সাকুরা, শ্যামলী এনআর ও রয়েল এক্সপ্রেস পরিবহনের। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের দেওয়া হিসাব অনুযায়ী, সকাল সাড়ে নয়টা পর্যন্ত সাকুরা পরিবহনের পাঁচটি বাস, শ্যামলী এনআরের সাতটি এবং রয়েল এক্সপ্রেসের চারটি বাস খুলনা, পটুয়াখালী ও বরিশালের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। তবে যাত্রী না থাকায় একটি বাসও ছেড়ে যায়নি।

সাকুরা পরিবহনের কাউন্টার ব্যবস্থাপক বলেন, ‘সকাল থেকে একজন মানুষও টিকিট কিনতে আসেনি। তাহলে গাড়ি ছাড়ব কীভাবে?’ তবে তাদের পরিবহনের সায়েদাবাদ টার্মিনাল থেকে দুটি বাস ছাড়ার কথা তিনি শুনেছেন বলে জানান।

কল্যাণপুর ও গাবতলী থেকে মোট সাতটি বাস ছাড়ার কথা ছিল উল্লেখ করে শ্যামলী এনআর পরিবহনের কাউন্টার ব্যবস্থাপক স্বপন চন্দ্র দাস বলেন, ‘যাত্রীর আশায় কাউন্টার খুলে বসেও আছি। কিন্তু যাদের জন্য বাস ছাড়ব, সেই যাত্রীরাই নেই।’

গোল্ডেন লাইন পরিবহনের কর্মী মো. সালাউদ্দিন এই প্রতিবেদককে দেখেই বলেন, ‘ভাই, পুরাই বেকার। যাত্রী নাই, কোনো কাজ নাই।’

এদিকে বিএনপির অবরোধ প্রতিরোধ করতে গাবতলী টার্মিনালের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন দারুস সালাম থানা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, খুন, ষড়যন্ত্র ও বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন।

আজ সকাল থেকে বিএনপির তিন দিনের অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশব্যাপী রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথে সর্বাত্মক অবরোধের ঘোষণা দিয়েছে দলটি। একই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামীও।