অবিলম্বে বিরোধীদলের নেতাকর্মীদের মুক্তি দেবার আহ্বান

বিতর্কিত ও একতরফা নির্বাচন বাংলাদেশে গভীরতর সংকট তৈরি করবে: ৪৭ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

বিতর্কিত ও একতরফা নির্বাচন বাংলাদেশে গভীরতর সংকট তৈরি করবে: ৪৭ বিশিষ্ট নাগরিকের বিবৃতি

আরও একটি বিতর্কিত ও একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠান বাংলাদেশকে গভীরতর সংকটে নিপতিত করবে বলে মনে করেন দেশের ৪৭ বিশিষ্ট নাগরিক।

দেশি-বিদেশি নানা মহলের সংলাপের আহ্বানকে উপেক্ষা করে সরকার যদি আবারও একটি একতরফা নির্বাচনের দিকে যায়, তাহলে এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে বলে বিশিষ্টজনেরা বলেন।

একতরফা তফসিল ও নির্বাচন আয়োজন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে সোমবার এক যৌথ বিবৃতি দিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন দেশের ৪৭ বিশিষ্ট নাগরিক। 

অবিলম্বে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের মুক্তি দিয়ে তাদের এবং অন্যান্য অংশীজনের সাথে আলোচনা করে নির্বাচন উপযোগী একটি পরিস্থিতি সৃষ্টির উদ্যোগ গ্রহণ করার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তারা।

বিশিষ্টজনেরা বলেন, আমরা একই সঙ্গে সংলাপের পথ উন্মুক্ত রাখার স্বার্থে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করার জন্য বিএনপিসহ  বিরোধী দলগুলোকে আহবান জানাচ্ছি।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সরকার সম্প্রতি একটি একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। এরই অংশ হিসেবে গত ২৮ অক্টোবর–পরবর্তী সময়ে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা করা হচ্ছে, তাদের নির্বিচার গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। এরই মধ্যে বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপের সম্ভাবনা নাকচ করা হয়েছে এবং বিভিন্ন প্রচারমাধ্যম ব্যবহার করে বিরোধী দলের প্রতি বিদ্বেষমূলক বক্তব্য প্রচার করা হচ্ছে।

এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়। বলা হয়, ‘আমরা অতীতের দুটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতায় দেখেছি যে একতরফা, বিতর্কিত ও সাজানো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দেশে সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক জবাবদিহি থাকে না। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের আজ্ঞাবহ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। দেশে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম, খুন, দুর্নীতি, লুটপাট, বিদেশে অর্থপাচার ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এই পরিপ্রেক্ষিতে আরও একটি বিতর্কিত ও একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠান বাংলাদেশকে গভীরতর সংকটে নিপতিত করবে।’

দেশি-বিদেশি নানা মহলের সংলাপের আহ্বানকে উপেক্ষা করে সরকার যদি আবারও একটি একতরফা নির্বাচনের দিকে যায়, তাহলে এর দায়-দায়িত্ব সরকারকেই বহন করতে হবে বলে বিশিষ্টজনেরা বলেন।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরদাতাদের মধ্যে আছেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, মানবাধিকার কর্মী শিরিন হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সামিনা লুৎফা, লেখক রেহনুমা আহমেদ, মানবাধিকার কর্মী নূর খান লিটন, লেখক অরূপ রাহী, রাখাল রাহা, মাহবুব মোর্শেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সাঈদ ফেরদৌস, অধ্যাপক মির্জা তসলিমা সুলতানা, অধ্যাপক রায়হান রাইন, লেখক ও নৃবিজ্ঞানী সায়েমা খাতুন, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের অধ্যাপক আ-আল মামুন, কবি সাখাওয়াত টিপু, সিনিয়র আইনজীবী তবারক হোসেইন, সুব্রত চৌধূরী, মানবাধিকার কর্মী হানা শামস আহমেদ, চিকিৎসক ও সমাজকর্মী নায়লা জামান খান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক  ড. মোশরেকা অদিতি হক, সাংবাদিক সায়দিয়া গুলরুখ, গবেষক ও মানবাধিকার কর্মী রেজাউর রহমান লেনিন,  লেখক ড. মারুফ মল্লিক, যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব পিটসবার্গ এর পিএইচডি গবেষক, মাইদুল ইসলাম, নৃবিজ্ঞানী নাসরিন খন্দকার, কথাসাহিত্যিক এহ্সান মাহমুদ, লেখক ও গবেষক মাহা মির্জা, লেখক বাকি বিল্লাহ, রাজনৈতিক ভাষ্যকার মনির হায়দার, শিল্পী ও সংগঠক অমল আকাশ, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক আর রাজী, কথা সাহিত্যিক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন, সঙ্গীতশিল্পী ফারজানা ওয়াহিদ সায়ান, গীতিকবি লতিফুল ইসলাম শিবলী, কবি ও উন্নয়নকর্মী ফেরদৌস আরা রুমী, মানবাধিকার কর্মী রোজিনা বেগম, প্রকাশক সাঈদ বারী, যুক্তরাজ্যের ডারহাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক সাদাফ নূর, চলচ্চিত্র নির্মাতা মুহাম্মদ কাইউম, লেখক জিয়া হাশান, লেখক আসিফ সিবগাত ভূঞা, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারি অধ্যাপক জি এইচ হাবীব এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মোস্তফা নাজমুল মানছুর তমাল।