বেগম রোকেয়া দিবস আজ

বেগম রোকেয়া দিবস আজ

শনিবার (৯ ডিসেম্বর) বেগম রোকেয়া দিবস। নারীর ক্ষমতায়ন ও শিক্ষা, আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, অধিকার ও সমতাভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় মহীয়সী নারী বেগম রোকেয়ার অবদান ও নারী জাগরণের অগ্রযাত্রায় অন্তহীন প্রেরণার উৎস হিসেবে প্রতিবছর এই দিবসটি পালন করা হয়। এবারও সারাদেশে যথাযোগ্য মর্যাদায় দিবসটি পালনে বিভিন্ন আয়োজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

যখন সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে কুসংস্কার ও ধর্মীয় গোঁড়ামি। অশিক্ষার অভিশাপ আর পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার চাপে পিষ্ট নারী সমাজ। সেই সময় মুক্তচিন্তা, ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি এবং শাণিত লেখার মধ্য দিয়ে একজন মুসলিম নারী স্বাধীনতার পথ দেখান। তিনি বেগম রোকেয়া। বাঙালি মুসলমান সমাজে নারী স্বাধীনতার পক্ষে প্রথম প্রতিবাদী কণ্ঠস্বর বেগম রোকেয়া। বিশ শতকের প্রথম দিকে বাঙালি মুসলমানদের নবজাগরণের সূচনালগ্নে নারীশিক্ষা ও নারী জাগরণে প্রধান নেতৃত্ব দেন বেগম রোকেয়া। তিনিই প্রথমবারের মতো বাঙালি মুসলিম সমাজে পুরুষের পাশাপাশি নারীর সমান অধিকারের দাবি তুলে ধরেন এবং নারী স্বাধীনতার পক্ষে নিজের মতবাদ প্রচার করেন।

১৯২৭ সালে ‘বঙ্গীয় নারী শিক্ষা সমিতি’র এক সভায় সভানেত্রীর ভাষণের শুরুতেই বেগম রোকেয়া সম্বোধন করলেন ‘ভগিনীগণ’ বলে। তিনি বলেন, ‘ভগিনীগণ! চক্ষু রগড়াইয়া জাগিয়া উঠুন-অগ্রসর হউন। বুক ঠুকিয়া বল মা! আমরা পশু নই; বল ভগিনী! আমরা আসবাব নই; বল কন্যে! আমরা জড়োয় অলঙ্কাররূপে লোহার সিন্ধুকে আবদ্ধ থাকিবার বস্তু নই; সকলে সমস্বরে বল আমরা মানুষ।’ নারী জাতিকে এভাবেই জেগে উঠার আহ্বান জানিয়েছিলেন তিনি। তিনি লিখেছিলেন ‘সুলতানার স্বপ্ন’। সেখানে নারীদের সর্বত্র বিচরণের স্বপ্ন দেখেছিলেন লেখিকা। এছাড়া তার উল্লেখযোগ্য রচনার মধ্যে রয়েছে মতিচূর, পদ্মরাগ, অবরোধবাসিনী প্রভৃতি। ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর তার মৃত্যু হয়।

নারী জাগরণের পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত ১৮৮০ সালের আজকের এই দিনে রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার পায়রাবন্দের এক নিভৃত পল্লীতে জন্ম নেন। এবং ১৯৩২ সালের ৯ ডিসেম্বর দিনটিতেই মৃত্যুবরণ করেন। দিবসটি উপলক্ষে রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থা ব্যাপক কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।