৯ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার ৬,৪০১ জন

৯ মাসে রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার ৬,৪০১ জন

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ হাজার ৪০১ জন রাজনৈতিক সহিংসতার শিকার হয়েছেন। তাদের মধ্যে ৭০ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন ৬ হাজার ৩৩১ জন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে মৃত্যু হয়েছে সাতজনের। বাকি ৬৩ জন ক্ষমতাসীন দলের অন্তর্কোন্দল ও বিরোধী দলের মধ্যে সংঘটিত সংঘর্ষে মারা গেছেন। এ ছাড়া চলতি বছরের প্রথম ১১ মাসে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু হয়েছে ৯৩ জনের।

শুক্রবার আন্তর্জাতিক মানবাধিকার মাস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সেন্টার ফর হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড লিগ্যাল রিসার্চ আয়োজিত সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। ‘মানবাধিকারের ধারণা ও বাস্তবতা : বাংলাদেশ ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট’ শীর্ষক এ সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ কে এম বদরুদ্দোজা। সংগঠনের প্রধান নির্বাহী আইনজীবী মুহাম্মদ শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি আব্দুল মতিন। প্রধান আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ ও বিশেষ অতিথি ছিলেন সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ (অব.) মাসদার হোসেন।

বিচারপতি আব্দুল মতিন বলেন, আমরা সংবিধানের অনেক অধিকার লঙ্ঘন করে যাচ্ছি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে অনেক আপত্তি আছে। আইন তৈরি হয় মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা করার জন্য; কিন্তু আজ দেখা যায় আইন দিয়ে মানুষের অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়। নির্বাচন করলেই গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকার রক্ষা হয় না। কারণ এই নির্বাচনে মানুষ তার মৌলিক নাগরিক অধিকার ভোট দিতে পারে না। 

মাসদার হোসেন বলেন, দেশের জনগণ সবচেয়ে নিগৃহীত, নিপীড়িত। আমরা মুক্ত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করলেও পদে পদে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হচ্ছে। দেশে বাকস্বাধীনতা, নাগরিক অধিকার, সুশাসন, ন্যায়বিচার নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। 

অধ্যাপক নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো মানবাধিকার রক্ষা করা। কিন্তু রাষ্ট্র আজ মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। মানুষ ভোট দিতে পারছে না এবং তাদের নির্বাচন করারও অধিকার নেই। 

এ কে এম বদরুদ্দোজা বলেন, দেশে গুম-খুন, মানবাধিকার লঙ্ঘন ভয়াবহভাবে বিস্তার লাভ করেছে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করতে হবে দাবি করার পর এখন সাইবার নিরাপত্তা আইন করা হয়েছে, যা একটি কালো আইন। সাংবাদিক ও সচেতন নাগরিকদের বাকস্বাধীনতা নেই। মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা বন্ধে ও সংঘটিত অপরাধগুলোর প্রতিকার হিসেবে ১০ দফা প্রস্তাব পেশ করেন তিনি।