নির্বাচনের দিন ১৮ সাংবাদিক হয়রানির শিকার: সিপিজে

নির্বাচনের দিন ১৮ সাংবাদিক হয়রানির শিকার: সিপিজে

বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন অনিয়ম ও সহিংসতার অভিযোগ কভার করতে গিয়ে অবমাননা অথবা হয়রানির শিকার হয়েছেন কমপক্ষে ১৮ জন সাংবাদিক।

শুক্রবার (২৬ জানুয়ারি) বিভিন্ন সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে এ কথা জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)।

তারা এক বিবৃতিতে বলেছে, বিরোধীদের নির্বাচন বর্জন এবং কম ভোটার ভোট দেয়ার মধ্য দিয়ে পঞ্চমবারের মতো ক্ষমতায় এসেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এ নির্বাচনকে ‘অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি’ বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

নিউ ইয়র্ক টাইমসের দক্ষিণ এশিয়া ব্যুরো প্রধান মুজিব মাশাল সিপিজেকে বলেছেন, নির্বাচনের রিপোর্ট করতে আগেই তারা বাংলাদেশ সরকারের কাছে আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সরকার তাদের আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছে।

নির্বাচনের দিন (৭ জানুয়ারি) বিকেল ২টা ৪০ মিনিটের দিকে ডেইলি স্টার পত্রিকার সংবাদদাতা সিরাজুল ইসলাম রুবেল, একই পত্রিকার রিপোর্টার আরাফাত রহমান রাজধানী ঢাকার একটি ভোটকেন্দ্রে আওয়ামী লীগের সমর্থকদের ব্যালটবাক্স ভর্তি করার রিপোর্ট করতে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টাকালে তাদেরকে ঘিরে ধরে প্রায় ২৫ জন মানুষ। তারা ওই সাংবাদিকদের ফোন কেড়ে নেন। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ও ছবি মুছে দেন।

ডেইলি স্টারের রিপোর্টার দিপন নন্দির সঙ্গে ভোটকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যেতে বাধা সৃষ্টি করেন। ওই ভোটকেন্দ্রের রিপোর্ট সংগ্রহে রুবেল এবং আরাফাত রহমানের সঙ্গে যোগ দিয়েছিলেন দিপন নন্দি। পরে প্রায় ৩টা ৫ মিনিটের সময় পুলিশি সহায়তায় তারা ভোটকেন্দ্র ত্যাগ করতে সক্ষম হন।

অন্যদিকে ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে চট্টগ্রাম শহরে আওয়ামী লীগের সমর্থকরা ব্যালট দিয়ে বাক্স ভর্তি করছেন এমন অভিযোগের পর ছবি ধারণ ও ভিডিও করার পর প্রথম আলোর সংবাদদাতা মোশাররফ শাহকে প্রহার করে ২০ থেকে ২৫ জন মানুষ।

মোশাররফ শাহ বলেছেন, নির্বাচন সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তার সঙ্গে এ ঘটনা নিয়ে কথা বলার সময় ওই ব্যক্তিরা তার দিকে এগিয়ে যায়। তার নোটবুক কেড়ে নেয়। তিনি যা দেখেছিলেন, তার নোট রেখেছিলেন এতে। তার মোবাইল ফোন থেকে পুলিশের উপস্থিতিতে ভিডিও ফুটেজ মুছে দেয়।

ওই সাংবাদিক সিপিজে’কে আরও বলেছেন, প্রায় ৩০ মিনিট পর তিনি ঘটনাস্থল ত্যাগ করতে সক্ষম হন। তার আগে তাকে চড়থাপ্পর ও ঘুষি মারা হয়। তিনি আরও বলেছেন, তার সহকর্মী সাংবাদিকদের সহায়তায় প্রায় এক ঘন্টা পর ফিরে পেয়েছেন ফোন। হামলাকারীদের মধ্যে একজনকে নুরুল আবসার হিসেবে শনাক্ত করতে পেরেছেন সাংবাদিক মোশাররফ শাহ। নুরুল আবসার আওয়ামী লীগের ছাত্রবিষয়ক সংগঠন ছাত্রলীগের স্থানীয় ইউনিটের সাধারণ সম্পাদক। এ বিষয়ে মন্তব্য চাইলে নুরুল আবসার কথা বলতে রাজি হননি। এর আগে মোশাররফ শাহের ওপর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলা চালায় ছাত্রলীগের সদস্যরা।