মাইকেল কুগেলম্যানের মূল্যায়ন

কাজের আগ্রহ দেখালেও বাংলাদেশ এখনও যুক্তরাষ্ট্রের ‘টেস্ট কেস’

কাজের আগ্রহ দেখালেও বাংলাদেশ এখনও যুক্তরাষ্ট্রের ‘টেস্ট কেস’

সরকারের সঙ্গে কাজ করার আগ্রহ দেখালেও বাংলাদেশ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের পরিবর্তন হয়নি। বাংলাদেশের মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রের ওপর দৃষ্টি দেয়ার বিষয়টি অব্যাহত থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের। ঢাকা এখনও ওয়াশিংটনের মূল্যায়নভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতিতে ‘টেস্ট কেস’ হিসেবে রয়ে গেছে। অনলাইন দ্য ফরেন পলিসিতে বিভিন্নভাবে এ কথাটিই বলেছেন উইলসন সেন্টারে সাউথ এশিয়া ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাইকেল কুগেলম্যান। তিনি ‘ফরেন পলিসির’ সাপ্তাহিক সংক্ষিপ্ত দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক লেখায় এসব কথা বলেছেন।

তিনি লিখেছেন, কূটনৈতিক সম্পর্ককে শক্তিশালীকরণ এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে অভিন্ন স্বার্থকে এগিয়ে নেয়া সহ বিভিন্ন এজেন্ডাকে সামনে রেখে এ সপ্তাহে বাংলাদেশ সফর করেছেন মার্কিন সরকারের একটি সিনিয়র প্রতিনিধি দল। এই গ্রুপে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের আইলিন লাউবেচার, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপ সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আফরিন আখতার এবং যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন বিষয়ক এজেন্সির মাইকেল শিফার। তাদের আলোচনায় ফোকাস দেয়া হয় জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য, রোহিঙ্গা সঙ্কট এবং শ্রম অধিকার। প্রতিনিধিরা সরকারের সিনিয়র কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী এক্সিকিউটিভ, নাগরিক সমাজের সংগঠন এবং বিরোধী শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

কথার সুর এবং বার্তা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের স্পষ্ট একটি পটপরিবর্তনের মধ্যে হয়েছে এই সফর। ৭ই জানুয়ারি বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কয়েক মাস আগে যুক্তরাষ্ট্র মানবাধিকার ও গণতন্ত্রকে উৎসাহিত করতে শক্তিশালী বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়।

 

এর মধ্যে আছে নিষেধাজ্ঞা, ভিসা নিষেধাজ্ঞা এবং প্রকাশ্যে সমালোচনা। অনুষ্ঠিত ভোট অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি মূল্যায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। যা-ই হোক, ৬ই ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের ‘নতুন অধ্যায়’কে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি লিখেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তবে তাতে অধিকার বা গণতন্ত্রের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
এ সপ্তাহে মার্কিন প্রতিনিধিদের সফরের সময় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদসহ বাংলাদেশি কর্মকর্তারা নতুন করে পথ চলা শুরু করার ওপর জোর দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান এমপি বলেছেন, ‘নির্বাচন এখন একটি অতীতের বিষয়’। উভয় পক্ষের মধ্যে বার্তা বিনিময় ছিল উষ্ণ এবং কার্যকর। এতে প্রচুর রেফারেন্স দেয়া হয়েছে অংশীদারিত্বকে শক্তিশালী করা নিয়ে। এই চিত্র গত এপ্রিলের পুরো বিপরীত। ওই সময় বাংলাদেশের জাতীয় সংসদে দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছিলেন। বলেছিলেন, তারা শাসকগোষ্ঠীর পরিবর্তন করতে চায়।

এই পরিবর্তনের কারণ কি? একটি সম্ভাব্যতা হতে পারে, ঢাকার অভিযুক্ত করার রাজনৈতিক পরিবেশ থেকে নিজের দূরত্ব বজায় রাখতে চায় ওয়াশিংটন। বাংলাদেশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্র নিয়ে মার্কিন কর্মকর্তারা যতই প্রকাশ্যে মত দেন, ততই তারা এতে জড়িয়ে পড়ার ঝুঁকিতে পড়েন। উদাহরণ হিসেবে, গত নভেম্বরে বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে নির্দেশ করে সহিংস হুমকির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে মার্কিন দূতাবাস।

এক্ষেত্রে কৌশলগত ভূমিকাও বিবেচনায় নেয়া হতে পারে। বার বার বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র প্রকাশ্যে চাপ দেয়ায় তাতে চীন ও রাশিয়া উজ্জীবিত হয়ে উঠেছে। তারা এটাকে ব্যবহার করে বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র হস্তক্ষেপ করছে বলে অভিযোগ করতে থাকে। এই চাপে হতাশ হয়ে পড়ে ভারত। ভারত হলো যুক্তরাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার এবং বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কযুক্ত। যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ববর্তী প্রচেষ্টা কার্যকরভাবে ঢাকায় সুবিধা দিয়েছে মস্কো এবং বেইজিংকে। আর নয়া দিল্লিকে দিয়েছে পীড়া।

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন উদ্যোগে ভূরাজনৈতিক ফ্যাক্টরগুলোও ভূমিকা রেখেছে। প্রতিবেশী মিয়ানমারে যুদ্ধ তীব্র হয়েছে। কয়েক লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। কিন্তু তাদের প্রত্যাবর্তন চায় বাংলাদেশ। যুক্তরাষ্ট্র এসব স্পর্শকাতর ইস্যুতে ঢাকার সঙ্গে উল্লেখযোগ্য কূটনৈতিক ক্ষেত্রে যুক্ত হওয়া নিশ্চিত করতে চায়। উপরন্তু মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিতিশীলতায় ক্রমবর্ধমানভাবে দৃষ্টি দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি। অন্য যেকোনো স্থানে কূটনৈতিক মাথাব্যথা কমিয়ে আনতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।

যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের পরিবর্তন যতটা তীক্ষ্ণ বলে মনে হচ্ছে, আসলে ততটা তীক্ষ্ণ তা নয়। নির্বাচন নিয়ে উত্তেজনা থাকা সত্ত্বেও সম্পর্ক এরই মধ্যে গভীর হয়েছে। বিশেষ করে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন তার চিঠিতে অগ্রাধিকার দিয়েছেন কিছু ক্ষেত্র। তার মধ্যে আছে বাণিজ্য, প্রতিরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানবাধিকার বিষয়ক ইস্যু। উপরন্তু মানবাধিকার এবং গণতন্ত্রের ওপর দৃষ্টি দেয়ার বিষয়টি অব্যাহত থাকবে। যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস থেকে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এ সপ্তাহে বাংলাদেশের প্রধান বিরোধী দলীয় নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন আফরিন আখতার। এ সময় তিনি জেলে থাকা বিরোধী দলের হাজারো নেতাকর্মীর বিষয়ে আলোচনা করেছেন।

ঢাকা এখনও ওয়াশিংটনের মূল্যায়নভিত্তিক পররাষ্ট্রনীতিতে ‘টেস্ট কেস’ হিসেবে রয়ে গেছে। তবে এ নিয়ে পরীক্ষা বর্তমানে কম কঠোরতার সঙ্গে পরিচালিত হচ্ছে। সরকারি চাপ নয়, সম্পর্কের সুর এবং বার্তা জোরালোভাবে ইতিবাচক ও কার্যকর মনে হচ্ছে। শেষ পর্যন্ত এতে এটাই প্রতিফলিত হয় যে, আপাতত যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে যে- কৌশলগত গুরুত্ব হলো বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের একটি মসৃণ সম্পর্ক বজায় রাখা।

ওদিকে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে পাকিস্তান থেকে ইরান পর্যন্ত একটি কল্পিত গ্যাস পাইপলাইন যাওয়ার কথা। কিন্তু তাতে কোনো অগ্রগতি হয়নি। ফলে সমালোচকরা একে ‘পাইপ ড্রিম’ বা স্বপ্নের পাইপলাইন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। নিজেদের অংশের অবকাঠামো নির্মাণ ইরান সম্পন্ন করেছে কয়েক বছর আগে। কিন্তু পাকিস্তান তার অংশে এই প্রকল্পে অর্থায়নের জন্য অংশীদার খুঁজতে লড়াই করছে। তা ছাড়া আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার আতঙ্কও আছে। গত শুক্রবার নিজেদের অংশে এই পাইপলাইন নির্মাণ শুরুর পরিকল্পনা অনুমোদন দিয়েছে ইসলামাবাদ। পাকিস্তানের গোয়েদার বন্দর থেকে ইরান সীমান্ত পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে এই পাইপলাইন বিস্তৃত প্রায় ৫০ মাইল। ট্যাক্স এবং জ্বালানির ভোক্তাদের কাছ থেকে সম্ভাব্য আহরিত রাজস্ব ব্যবহার করে ১৫ কোটি ৮০ লাখ ডলার খরচ করার পরিকল্পনা নিয়েছে পাকিস্তান। উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো- পাকিস্তানের শক্তিধর সেনা প্রধানের প্রভাবে নতুন সরকারের বিনিয়োগ বিষয়ক ইউনিট এই প্রকল্প অনুমোদন করেছে। যদি প্রকল্প সম্পন্ন হয়, তাহলে অর্থনৈতিকভাবে প্রচণ্ড চাপে থাকা এ দেশটির অর্থনীতিতে বড় রকম সহায়ক হবে। দেশটিতে বর্তমানে চরমভাবে বিদ্যুৎ প্রয়োজন। ব্যয়বহুল তেল আমদানিতে দীর্ঘদিন নির্ভরশীল তারা।

সময়টা কৌতূহলের: উভয় দেশ সীমান্তে আন্তঃসীমান্তে হামলা চালানোর পর গত মাসে সঙ্কটজনক অবস্থা থেকে পুনরুদ্ধার হচ্ছে পাকিস্তান-ইরান সম্পর্ক। মধ্যপ্রাচ্যে ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীলতায় গভীরভাবে ঝুঁকিতে ইরান। যুক্তরাষ্ট্র-ইরান সম্পর্কের উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি তীব্র। যে বিষয়টি পাকিস্তানকে এগিয়ে যেতে অনুপ্রাণিত করেছে তা হল ইসলামাবাদ তার চুক্তিভিত্তিক বাধ্যবাধকতা পূরণ না করলে ইরান ১৮০০ কোটি ডলার জরিমানা করতে পারে, যা পরিশোধ করার সামর্থ তাদের নেই।
এখন পাকিস্তানের জন্য চ্যালেঞ্জ হলো ওয়াশিংটনের কাছ থেকে নিষেধাজ্ঞা না পাওয়ার সুবিধা আদায় করা। সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা এবং যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের বড় রকম সঙ্কট কাটিয়ে উঠা উচিত পাকিস্তানের। একই সঙ্গে ইরানের জরিমানার হুমকিও কাটিয়ে উঠা উচিত। গত বছর রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি শুরু করে পাকিস্তান। এরপর ওয়াশিংটনের সঙ্গে বর্তমান আন্তরিক সম্পর্ক এবং প্রেসিডেন্ট বাইডেন প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা না দেয়ার হুমকির নজিরকে ব্যবহার করবে পাকিস্তান।

ভারতের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উত্তেজনা: নতুন এক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছে ভারত ও সামাজিক যোগাযোগ প্লাটফরম এক্স (সাবেক টুইটার)। গত সপ্তাহে এক্সের গ্লোবাল গভর্নমেন্ট অ্যাফেয়ার্সের একাউন্ট একটি বার্তা পোস্ট করে। তাতে বলা হয়, এই প্লাটফরমকে একাউন্টস এবং বিভিন্ন পোস্ট নামিয়ে ফেলতে নির্বাহী নির্দেশ জারি করেছে ভারত। এক্স বলেছে, তারা ভারতীয় কন্টেন্টগুলোকে আটকে রেখেছে। তবে তা অন্যান্য স্থান থেকে দৃশ্যমান। বলা হয়েছে, তারা বাকস্বাধীনতার ভিত্তিতে ভারতের দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে এবং আপিল করার পরিকল্পনা করছে। বিধিনিষেধ দেয়া একাউন্টসম এবং পোস্টগুলো সম্পর্কে কোনো বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। তবে এগুলো কৃষকদের চলমান প্রতিবাদ বিক্ষোভ সংক্রান্ত। এক্সের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হলো ভারত। সেখানে আছে এক্সের কমপক্ষে ৩ কোটি ব্যবহারকারী। কিন্তু ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সরকারের সঙ্গে এই প্লাটফরমের দীর্ঘদিনের জটিল এক সম্পর্ক বিদ্যমান। এর আগে নয়া দিল্লির বিরুদ্ধে মামলা করেছে তারা। অভিযোগ তুলেছে, সরকার যেসব কন্টেন্টের বিষয়ে আপত্তি করছে তা মুছে ফেলার মাধ্যমে এই সাইটকে বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দিচ্ছে সরকার। ভারতের আদালত থেকে যথেষ্ট সমর্থন পেয়েছে এক্স। শুরুতেই তা খারিজ হয়ে গেছে। জরিমানার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান হয়েছে। যে দেশে ভিন্ন মতাবলম্বীদের জ্য দ্রুত স্থান সংকুচিত হচ্ছে, সেখানে অনলাইন স্বাধীনতাই আঘাতপ্রাপ্ত।

নতুন সরকার গঠনের খুব কাছাকাছি পাকিস্তান। এ মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে কোনো একক দলই সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ার পর গত সপ্তাহে পাকিস্তান মুসলিম লিগ-নওয়াজ (পিএমএলএন) এবং পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) ঘোষণা দিয়েছে যে- তারা একটি জোট সরকার গঠনে একমত হয়েছে। কিন্তু এই ঘোষণা পাকিস্তানের উত্তাল রাজনীতিকে শান্ত করতে পারেনি। নির্বাচনে পিএমএলএন এবং পিপিপি যথাক্রমে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সর্বোচ্চ আসনে বিজয়ী হয়েছে পার্লামেন্টে। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থিত স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সবচেয়ে বেশি আসন পেয়েছেন। নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, ভোটারদের বঞ্চিত করার অভিযোগে ফল প্রত্যাখ্যান করেছে পিটিআই। যদি জালিয়াতি না হতো তাহলে তার সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতো এবং তাদের নিজেদের সাসমনেই তখন নতুন সরকার গঠনের সুযোগ ছিল। তারা নির্বাচনের ডকুমেন্ট প্রকাশ করেছে। তাতে অভিযোগ করা হয়েছে যে, ভোটকেন্দ্রে চূড়ান্ত ভোটের তালিকা এবং পরে সরকারি ফলের মধ্যে বিস্তর ফারাক রয়েছে। পাকিস্তানের উত্তরাঞ্চলের শহর রাওয়ালপিন্ডিতে নির্বাচন তদারকির দায়িত্বে থাকা একজন শীর্ষনেতা বিস্ময়কর এক স্বীকারোক্তি দেন। বলেন, তিনি নির্বাচনের ফল জালিয়াতি করতে সহায়তা করেছেন। এ ঘটনা তদন্তের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন। এখন বিরোধী দলের আসনে বসবেন পিটিআইয়ের স্বতন্ত্র এমপিরা। কিন্তু তারা আদালতে নির্বাচনের ফল নিয়ে লড়াই করছেন। এ সপ্তাহান্তে বিক্ষোভ করার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। নির্বাচনের পর সরকারের বিরুদ্ধে প্রথম সারির সমালোচকদের গ্রেপ্তার করায় উত্তেজনা বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দমনপীড়ন তীব্র হয়েছে। নতুন সরকার আগামী সপ্তাহে ক্ষমতা গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা নতুন সরকারের জন্য হতে পারে বিভ্রান্তি। এ সরকার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতাকে অগ্রাধিকার দিতে আগ্রহী।

এ মাসে শ্রীলঙ্কার পর্যটন উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ একটি নোটিশ ইস্যু করেছে। তাতে বলা হয়েছে, তারা রাশিয়ান ও ইউক্রেনের পর্যটকদের মেয়াদোত্তীর্ণ ভিসা আর নবায়ন করবে না। ২০২২ সালে ইউক্রেনে পূর্ণ মাত্রায় আগ্রাসন চালানোর পর এ দুটি দেশের পর্যটকদের ভিসার মেয়াদ শেষেও অবস্থান করার অনুমতি দিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। কারণ, ওই পর্যটকরা জানেন যুদ্ধের সময় দেশে ফিরে যাওয়া হবে কঠিন। ওই নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, এ দুটি দেশের যেসব নাগরিকের কাছে বৈধ ভিসা আছে তাদেরকে আগামী ৭ই মার্চের মধ্যে শ্রীলঙ্কা ত্যাগ করতে হবে।