বিদ্যুতের দাম বাড়ল ৭০ পয়সা

বিদ্যুতের দাম বাড়ল ৭০ পয়সা

গ্যাসের দাম বাড়ানোর দু’দিনের মাথায় পাইকারি ও খুচরা বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হয়েছে। পাইকারি পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ ও খুচরা পর্যায়ে ৮.৫ শতাংশ বেড়েছে। প্রতি ইউনিটে গড়ে পাইকারিতে ৩৪ পয়সা ও গ্রাহক পর্যায়ে ৭০ পয়সা বেড়েছে। নতুন দর সদ্য সমাপ্ত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে কার্যকর করা হয়েছে। প্রান্তিক গ্রাহক থেকে শুরু করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কৃষি, শিল্প সব খাতেই বেড়েছে দাম। এ নিয়ে গত দেড় দশকে পাইকারি পর্যায়ে ১২ বার ও খুচরা পর্যায়ে ১৪ বার বাড়ানো হলো দাম। 

বৃহস্পতিবার রাতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে এ-সংক্রান্ত একাধিক প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ জানিয়েছেন, ভর্তুকি থেকে বেরিয়ে আসতে ধীরে ধীরে কয়েক বছর ধরে দাম ‘সমন্বয়’ করা হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারণে পণ্যের দাম আরও বাড়বে। এতে মানুষ আরও চাপে পড়বে। ক্রেতার ক্রয়ক্ষমতা কমে যাবে। চাহিদা মেটাতে হিমশিম খাবে ভোক্তারা। ফলে ভোক্তারা পণ্যসেবা কমিয়ে দেবে। সরকারও বিপদে পড়বে। কারণ, ভ্যাট ও ট্যাক্স কমে যাবে। সরকার রাজস্ব হারাবে। 

সেচে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারণে কৃষকের উৎপাদন খরচ বাড়বে। শিল্পে দাম বাড়ানোর ফলে ব্যবসায়ীরা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

তবে সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বিপুল ভর্তুকির চাপ সামলাতে নির্বাহী আদেশে বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। এই মূল্য সমন্বয়ের কারণে ভর্তুকির পরিমাণ তিন হাজার কোটি টাকা কমবে। বিতরণ কোম্পানিগুলোর রাজস্ব আয় ছয় হাজার কোটি বৃদ্ধি পাবে। 

জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিদ্যুতের কোন খাতে কত ব্যয় হচ্ছে, এর কোনো স্বচ্ছ হিসাব নেই। বিশেষ বিধান করে এই খাতের বিনিয়োগকে প্রতিযোগিতাহীন করা হয়েছে। এ খাত চলছে ভুল পরিকল্পনায়। চাহিদা না থাকলেও একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে। এসবের কারণে বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেছে। সেসব ভুল না শুধরে, দুর্নীতি না কমিয়ে দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কেটে খরচ তোলা হচ্ছে। 

দাম বাড়ানোর পর পাইকারি বিদ্যুতের প্রতি ইউনিটের মূল্য ৬ টাকা থেকে ৭০ পয়সা বেড়ে বর্তমান মূল্য দাঁড়িয়েছে সাত টাকা চার পয়সা। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) তথ্য অনুসারে চলতি বছর বিদ্যুতের ইউনিটপ্রতি পাইকারি সরবরাহ ব্যয় ১১ টাকা ৯৬ পয়সা।

খুচরা পর্যায়ে ৮.০৫ শতাংশ দাম বৃদ্ধির ফলে খুচরা গড় মূল্য ৮ টাকা ২৫ পয়সা থেকে ৭০ পয়সা বেড়ে ৮ টাকা ৯৫ পয়সা হয়েছে। পাশাপাশি গ্রাহকদের মাসিক ডিমান্ড চার্জ প্রতি কিলোওয়াটে ৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ টাকা করা হয়েছে। পাওয়ার গ্রিড কোম্পানির (পিজিসিবি) সঞ্চালন মাশুলও বৃদ্ধি পেয়েছে। 

প্রান্তিক বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীদের প্রতি ইউনিটে দাম বেড়েছে ২৮ পয়সা। বাসাবাড়িতে ইউনিটপ্রতি ১ টাকা ৩৫ পয়সা পর্যন্ত দাম বেড়েছে। সেচে ৮৩ পয়সা পর্যন্ত, শিক্ষা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানে ৫৮ পয়সা, রাস্তার বাতিতে ১ টাকা এবং শিল্পে ১ টাকা ৩৫ পয়সা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছে সরকার। কৃষির সেচে ৮৩ পয়সা পর্যন্ত, শিক্ষা ও দাতব্য প্রতিষ্ঠানে ৫৮ পয়সা, রাস্তার বাতিতে ১ টাকা এবং শিল্পে  ১ টাকা ৩৫ পয়সা পর্যন্ত দাম বাড়িয়েছে সরকার।