জবির ছাত্রী হলে নির্যাতনে অজ্ঞান শিক্ষার্থী, সাংবাদিককে মেরে ফেলার হুমকি

জবির ছাত্রী হলে নির্যাতনে অজ্ঞান শিক্ষার্থী, সাংবাদিককে মেরে ফেলার হুমকি

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলে এক ছাত্রীকে নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। এতে অজ্ঞান হয়ে পড়ে নির্যাতিত শিক্ষার্থী। নির্যাতনকারী শিক্ষার্থী তাসমিম সানজানা সৃষ্টির মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সাংবাদিককে মেরে ফেলার হুমকি দেয় অভিযুক্ত শিক্ষার্থী সৃষ্টির ছেলে বন্ধু ফাহিম ইশতিয়াক। হুমকি দাতা ফাহিম ইশতিয়াক মার্কেটিং বিভাগের ২০১৬-১৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী।

বুধবার ৬ই মার্চ রাতে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে গত মঙ্গলবার সকালে জবি ছাত্রীহলে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী ইতি খাতুনকে রান্নাঘরে তুচ্ছ ঘটনায় মারধর করে সংগীত বিভাগের ১২ ব্যাচের শিক্ষার্থী তাসমিম সানজানা সৃষ্টি। এ ঘটনায় ছাত্রী হলের হাউজ টিউটর ও প্রোভোস্টের নিকট লিখিত অভিযোগও দেন আহত শিক্ষার্থী ইতি।

এ বিষয়ে মারধরে ভুক্তভোগী ছাত্রী ইতি খাতুন বলেন, আমি রান্না করছিলাম। পরে চুলা ফাঁকা থাকায় সৃষ্টি আপু ডিম ভাজতে চাইলে ছেড়ে দিই। কিন্তু রান্না শেষ করতে দেরি হওয়ায় ও আমার ক্লাসের সময় হওয়ায় দ্রুত রান্না শেষ করতে বলি। কিন্তু আমি জুনিয়র বলে আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দেয়। আমার মরা বাপ তুলেও গালি দেয়।

আমি প্রতিবাদ করায় আমাকে চড় থাপ্পড়, কিল ঘুসি মারে। এতে অজ্ঞান হয়ে পড়ি। পরের ঘটনা মনে নেই।

মারধর করা অভিযুক্ত তাসমিম সানজানা সৃষ্টি বলেন, জুনিয়র হয়ে ইতি বেয়াদবি করে। আমার দিকে তেড়ে আসে। এজন্য আমি কি বসে থাকবো। আমিও মাইর খাইছি। এজন্য অভিযোগও দিয়েছি।

এ বিষয়ে হল প্রভোস্ট দীপিকা রানী বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। হলের শৃঙ্খলা কমিটিতে এটা তোলা হবে।

অভিযোগ সূত্রে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ইতির বক্তব্য নেয়ার পর অভিযুক্ত সৃষ্টির কাছে ফোন দেন সাংবাদিকরা। এর জেরে সৃষ্টির ছেলে বন্ধু ফাহিম ইশতিয়াক এক সাংবাদিককে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। নিউজ করলে মামলার হুমকি দেয়। হুমকির ঘটনায় কল রেকর্ডে শোনা যায়, ফাহিম ওই সাংবাদিককে মুঠোফোনে বলেন, এই নিউজ যদি হয়, তুই যদি জড়িত থাকিস তোর খবর আছে। তোর নামে মামলা হবে। তোর লাইফ কিভাবে হেল করতে আমি দেখবো। তোর সাহস কি। এই চু.. পোলা। তুই আজ দেখা কর। তোর খবর আছে। তোকে মেরে ফেলবো।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে হুমকি দাতা ফাহিম ইশতিয়াক বলেন, ঐ সাংবাদিক আমার বান্ধবীকে কল দেয়। বান্ধবী কান্নাকাটি করে আমাকে সমস্যা সমাধান করতে বলে। তাই আমি ঐ সাংবাদিককে কল দিয়ে কথা বলি। উত্তেজিত হয়ে তার সঙ্গে খারাপ আচরণ করে ফেলেছি।

হুমকিদাতা ফাহিম ছাত্রলীগের কর্মী বলে পরিচয় দেয়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহিম ফরাজির সঙ্গে তার ছবি আছে। তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ইব্রাহীম ফরাজি বলেন, এই ছেলে ছাত্রলীগের কোনো রাজনীতিই করে না। তাকে আমি চিনিই না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, এটি একটি নিন্দনীয় কাজ। সাংবাদিকরা তাদের পেশাগত কাজ করবে। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।