সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙেছে ফেব্রুয়ারি

সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড ভেঙেছে ফেব্রুয়ারি

ফেব্রুয়ারি মাসে এ যাবতকালের মধ্যে পৃথিবীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। টানা নবম বারের মতো এই রেকর্ড ভঙ্গ হলো। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের জলবায়ু বিষয়ক এজেন্সি কোপার্নিকাসের তথ্য অনুযায়ী, সার্বিকভাবে পৃথিবী এবং পৃথিবীর সমুদ্রপৃষ্ঠ সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড করেছে। সর্বশেষ এই রেকর্ডভাঙ্গা জলবায়ু পরিবর্তনের ধারায় ফেব্রুয়ারিতে শুধু তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ছিল এমন নয়। এর সঙ্গে যুক্ত ছিল সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা। তা যেকোনো মাসের তাপমাত্রার রেকর্ডকে ঢেকে ফেলেছে। ২০২৩ সালের আগস্টে যে রেকর্ড স্থাপন হয়েছিল, তাকে অতিক্রম করে গেছে এই তাপমাত্রা। বার্তা সংস্থা এপি এ খবর দিয়ে বলছে, মাস শেষের দিকে এসে তাপমাত্রা আরও বাড়ছিল।

কোপার্নিকাস বুধবার এক রিপোর্টে বলেছে, দীর্ঘমেয়াদে উষ্ণতার সতর্কতা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছিল, বিগত শীতের দুটি মাসকে তা অতিক্রম করে গেছে ফেব্রুয়ারি। সর্বশেষ সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড স্থাপন করতে ব্যর্থ হয়েছে ২০২৩ সালের মে মাস।

এটা ছিল কাছাকাছি সময়ে ২০২০ ও ২০১৬ সালের পাশে তৃতীয়- এমন সময়। কোপার্নিকাসের রেকর্ড বলছে, জুন থেকে তাপমাত্রার রেকর্ড নিয়মিতভাবে কমতে শুরু করে। এ বছর ফেব্রুয়ারিতে গড় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৩.৫৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ২০১৬ সালের পুরোনো রেকর্ডের এক অষ্টমাংশ ভঙ্গ করেছে এই রেকর্ড। বিংশ শতাব্দীর তুলনায় এই ফেব্রুয়ারি ছিল ১.৭৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি উষ্ণ।

২০১৫ সালে প্যারিস চুক্তি অনুযায়ী, বৈশ্বিক উষ্ণতাকে বৃদ্ধি ১.৫ ডিগ্রির মধ্যে ধরে রাখার জন্য বা তারও নিচে রাখার লক্ষ্য নির্ধারণ হয়। কোপার্নিকাসের মাসিক ফিগার এবং প্যারিস চুক্তির পরিমাপ পদ্ধতি একেবারে এক নয়। পরিবেশ বিষয়ক বিজ্ঞানীরা বলছেন, বেশির ভাগ উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী মানবসৃষ্ট কার্বন ডাই অক্সাইড এবং মিথেন নির্গমন। কয়লা, তেল এবং প্রাকৃতিক গ্যাস দহনের ফলে এসব গ্যাস নির্গত হয়। এছাড়া প্রাকৃতিক কারণ, যেমন এল নিনোর ফলেও তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়। মধ্য প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলকে উষ্ণ করে তোলার জন্য দায়ী এল নিনো। এর ফলে বৈশ্বিক জলবায়ুর ধরন পরিবর্তন হচ্ছে। উডওয়েল ক্লাইমেট রিসার্চ সেন্টারের জলবায়ু বিষয়ক বিজ্ঞানী জেনিফার ফ্রাঁসিস বলেন, ২০২৩ সালের মধ্যভাগের শক্তিশালী এল নিনোর ফলে বৈশ্বিক তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি। এল নিনো সমুদ্র থেকে তাপমাত্রা ছড়িয়ে দিচ্ছে বায়ুমণ্ডলে। এর ফলে বাতাসের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে যে মাত্রায় রেকর্ড ভঙ্গ করে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে তা উদ্বেগের।