সীমান্তে আবারো মর্টার শেলের শব্দ, আতঙ্কিত স্থানীয়রা

সীমান্তে আবারো মর্টার শেলের শব্দ, আতঙ্কিত স্থানীয়রা

টেকনাফ সীমান্তের ওপারে রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও সশস্ত্র বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষে ব্যবহ্নত মর্টার শেল ও গুলির শব্দ আবারো আতঙ্কিত কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্তে বসবাসকারীরা।

গতকাল শুক্রবার (৮ মার্চ) মধ্যরাত থেকে সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইনে রাতভর গোলাগুলি চলছে। ফলে এপারে হোয়াইক্যং ইউনিয়নের লম্বাবিল ও উনচিপ্রাং বসবাসরত মানুষের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়।

স্থানীয়রা জানান, টানা কয়েক দিন ধরে থেমে থেমে গোলাগুলির শব্দ শোনা যাচ্ছে। মিয়ানমারের রাখাইনে চলমান সহিংস ঘটনায় নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় মিয়ানমার সরকারি বাহিনীর সাথে আরাকান আর্মির সংঘর্ষ চলছে। এতে টেকনাফের হোয়াইক্যং উত্তরপাড়া, লম্বাবিল, উনচিপ্রাং, কাজ্ঞরপাড়া, হ্নীলা.মৌলভিপাড়া, ওয়াব্রাং, ফুলের ডেইল, চৌধুরীপাড়া, জালিয়াপাড়া এলাকায় সীমান্তের ওপারে থেমে থেমে গুলি ও মর্টার শেলের শব্দ পাওয়া যায়। হোয়াইক্যং ও হ্নীলা সীমান্তের ওপারের মিয়ানমারের কুমিরখালী, নাইচদং, কোয়াংচিগং, শিলখালী, নাফপুরা গ্রামগুলোতে যুদ্ধ চলছে।

উনচিপ্রাং এলাকার বাসিন্দা মোহাম্মদ আলম বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার পর থেকে উনচিপ্রাং সীমান্তে ব্যাপক গোলাগুলি ও মর্টার শেলের শব্দ হয়। মিয়ানমারের অভ্যন্তরে হলেও মনে হচ্ছে এগুলো আমাদের ঘরে পড়ছে। নারী-শিশুরা খুবই আতঙ্কের মধ্যে রাত যাপন করে।

লম্বাবিল এলাকার বাসিন্দা ইসলাম বলেন, রাত থেকে থেমে থেমে গোলাগুলি ও মর্টার শেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে। শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে শনিবার সকাল ৭টা পর্যন্ত টানা মর্টার শেল বিস্ফোরণ হয়। এতে আমাদের সীমান্তে বাসিন্দাদের ঘুম ভাঙে। আমরা অনেক আতঙ্কে আছি।

এদিকে সীমান্ত এলাকায় অযথা না যাওয়ার নির্দেশ দিচ্ছেন আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।

হোয়াইক্যং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও কক্সবাজার জেলা জামায়াতের আমির নুর আহমদ আনোয়ারি বলেন, টানা কয়েকদিন ধরে ভারী অস্ত্রের শব্দ শোনা যাচ্ছে। সীমান্তের কাছাকাছি বাসিন্দাদের সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। সবাই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে। এদিকে টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং থেকে শাহপরীর দ্বীপ পর্যন্ত ৫৪ কিলোমিটার নাফ নদে বিজিবি ও কোস্ট গার্ডের সদস্যরা টহল বৃদ্ধি করেছে।

মিয়ানমারের বিভিন্ন রাজ্যে সশস্ত্র বিদ্রোহীদের সাথে জান্তা বাহিনীর তীব্র লড়াই চলছে। এতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে দেশটির সেনা বাহিনীর। এরই মধ্যে অনেক এলাকা নিয়ন্ত্রণ হারিয়েছে তারা। হারানো এলাকা আবার নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা করছেন মিয়ানমার সেনারা। ড্রোন ব্যবহার করে রাসায়নিক বোমা ফেলে আরাকান আর্মিদের প্রতিহত করার চেষ্টা করছে জান্তা বাহিনী। জান্তার ঘাটিগুলো থেকে আশপাশের এলাকায় গোলা ফেলা হচ্ছে। সামরিক বিমানের মাধ্যমে জান্তা বাহিনী রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করছে বলেও খবর পাওয়া গেছে। সংঘাত বেড়েছে কাজিং রাজ্যেও। প্রতিরোধ যোদ্ধাদের সাথে লড়াইয়ে সেখানকার দুটি সেনা ঘাঁটি ও দশটির বেশি চৌকি নিয়ন্ত্রণ হারানোর পর কাজিং আর্মির সদর দফতর লক্ষ্য করে বোমা বর্ষণ করেছে জান্তা বাহিনী।