অবন্তিকার মৃত্যু, ছয় দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

অবন্তিকার মৃত্যু, ছয় দফা দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ফাইরোজ অবন্তিকার মৃত্যুর জন্য দায়ীদের বিচারসহ ছয় দফা দাবি বাস্তবায়নে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (১৬ মার্চ) বিক্ষোভ মিছিল শেষে শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি ঘোষণা করে। তারা বলেন, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি মানা না হলে, সোমবার (১৮ মার্চ) ভাইস চ্যান্সেলরের (ভিসি) কার্যালয় ঘেরাও করা হবে।

শিক্ষার্থীদের ছয় দফা দাবি হলো-
১. হত্যার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত নিশ্চিত করতে হবে।
২. অভিযুক্ত আম্মান সিদ্দিকী ও সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।
৩. জরুরি সিন্ডিকেট আহ্বান করে অভিযুক্তদের স্থায়ী বহিষ্কার করতে হবে।
৪. ভিকটিমের পরিবারকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা দিতে হবে।
৫. বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে বাদী হয়ে মামলা করতে হবে।
৬. বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌন নিপীড়ন সেল কার্যকর করতে হবে।

বিক্ষোভ সমাবেশে ইভান তাহসিব নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, অবন্তিকা যৌন নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রাণটাই দিয়ে দিলো। নিজে আত্মহত্যার বিরোধী ছিল তবুও বিচার না পেয়ে সেই পথেই পা বাড়িয়েছে। তৎকালীন প্রক্টরের কাছে বারবার যেয়েও সমাধান না পেয়ে শেষ পর্যন্ত এই কাজ করতে বাধ্য হয়েছে সে। আমরা দ্রুত এর বিচার চাই।

প্রসঙ্গত, ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর এবং সহপাঠীকে দায়ী করে নিজ বাসা কুমিল্লায় আত্মহত্যা করেছেন অবন্তিকা। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। শুক্রবার (১৫ মার্চ) রাত ১০টার দিকে ওই শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম ও সহপাঠী আম্মান সিদ্দিকীকে দায়ী করে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন। পোস্ট করার কিছুক্ষণ পরই ওই শিক্ষার্থী আত্মহত্যা করেন।

ফাইরুজ আবন্তিকার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়ার পর জবি শিক্ষার্থীরা অভিযুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সর্বোচ্চ বিচারের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক ও ক্যাম্পাসের ভেতর টায়ার জ্বালিয়ে আন্দোলন করে। এ ঘটনায় তাৎক্ষণিক তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। উপাচার্যের নির্দেশে অভিযুক্ত সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলামকে অব্যাহতি ও অভিযুক্ত শিক্ষার্থী আম্মানকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে প্রশাসন।

এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের জন্য চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কমিটিতে আহ্বায়ক হিসেবে রয়েছেন আইন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মাসুম বিল্লাহ, সদস্য সচিব হিসেবে রয়েছেন আইন কর্মকর্তা রঞ্জন কুমার দাস। কমিটির বাকি সদস্যরা হলেন, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আবুল হোসেন, সঙ্গীতের চেয়ারম্যান ঝুমুর আহমেদ।