বায়ুদূষণে শীর্ষে বাংলাদেশ

দক্ষিণ এশিয়ায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান অ্যামনেস্টির

দক্ষিণ এশিয়ায় সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান অ্যামনেস্টির

দক্ষিণ এশিয়ায় বায়ু দূষণ সমস্যার সমাধানে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে অধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। বিশ্বের ১৩৪টি দেশের মধ্যে বাতাসের সবচেয়ে খারাপ গুণগত মান হলো তিনটি দেশ- বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারত। এই দূষণ ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনতে দক্ষিণ এশিয়ায় আন্তঃসীমান্ত সহযোগিতা বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছে অ্যামনেস্টি।

সংগঠনটির জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা অ্যান হ্যারিসন ২০শে মার্চ বিবৃতিতে বলেছেন, দক্ষিণ এশিয়ার ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে জরুরি ভিত্তিতে আন্তঃসীমান্ত দূষণ বিষয়ে পরিকল্পনা সৃষ্টি করতে এবং তা বাস্তবায়নের আবারো আহ্বান জানাচ্ছি। তিনি আরও বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করে উচ্চ আয়ের দেশগুলোর মতোই ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলো এ বিষয়ে সমন্বিত পদক্ষেপ নিয়েছে সামান্যই। তারা উৎপাদন কমানোর কোনো পরিকল্পনা নিচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি বায়ু দূষণ হয়।

আইকিউ প্রকাশিত ২০২৩ সালের ওয়ার্ল্ড এয়ার কোয়ালিটি রিপোর্টে ১৩৪টি দেশের ওপর জরিপ প্রকাশ করা হয়। তার মধ্যে সবচেয়ে দূষিত বা খারাপ বায়ুর মধ্যে শীর্ষ স্থান দখল করে আছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও ভারত। গড়ে ৭৯.৯ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটারে পিএম২.৫-এর গড় ঘনত্বের দিক দিয়ে বাংলাদেশ শীর্ষ স্থান দখল করে আছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা থেকে এই মাত্রা ২.৫ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটারে অনুমোদিত। কিন্তু বাংলাদেশে তার পরিমাণ কমপক্ষে ৩২ গুন বেশি। এক্ষেত্রে পাকিস্তানে পিএম২.৫ মাত্রায় ৭৩.৭ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটারে এবং ভারতে তা ৫৪.৪ মাইক্রোগ্রাম প্রতি ঘনমিটারে। এর ফলে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে আছে পাকিস্তান ও ভারত।

আইকিউ এয়ার রিপোর্টে পিএম২.৫ এর ঘনত্ব- ২,৫ মাইক্রোন ঘনমিটারে পরিমাপ করা এরোসোল উপাদন, পরিমাপ করেছে। ওয়াল্ড এয়ার কোয়ালিটি রিপোর্টে একে প্রাথমিকভাবে বাতাসের গুণগত সূচক হিসেবে দেখানো হয়। বায়ু দূষণের জন্য দায়ী ৬টি সাধারণ উপাদানের মধ্যে পিএম২.৫ অন্যতম। বিশ্বজুড়ে মানবস্বাস্থ্য ও পরিবেশের ওপর কি প্রভাব ফেলে তা পরিবেশ বিষয়ক এজিন্সিগুলো নিয়ন্ত্রণ করে।

হ্যারিসন বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার অনেক স্থানে বিষাক্ত বাতাসের উপস্থিতি দীর্ঘদিন ধরে। একে জলবায়ুতে ‘রেড এলার্ট’ হিসেবে দেখা হয়। এর ফলে কমপক্ষে ১০০ কোটি মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্য ক্ষতির মুখে পড়েছে। ভয়াবহ দূষণের ক্ষেত্রে শীর্ষ ১৫ টি দেশের মধ্যে ১১টিই এশিয়ার। এর মধ্যে আছে তাজিকিস্তান (৪ নম্বরে), সংযুক্ত আরব আমিরাত (৭ নম্বরে), নেপাল (৮নম্বরে), কুয়েত (১১ নম্বরে), বাহরাইন (১২) নম্বরে, কাতার (১৩ নম্বরে) এবং ইন্দোনেশিয়া (১৪ নম্বরে)। এশিয়ার এসব দেশে ২০২৩ সালে বায়ুর গুণগত মান ছিল খারাপ।