পুলিশের থাপ্পড়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু

পুলিশের থাপ্পড়ে কলেজছাত্রের মৃত্যু

শরীয়তপুর, ২৮ সেপ্টেম্বর (জাস্ট নিউজ) : পুলিশের চড়-থাপ্পড়ে মৃত্যু হয়েছে পাভেল নামে এক কলেজছাত্রের। এমনই অভিযোগ করেছেন নিহতের মা ফাহিমা বেগমসহ তার পরিবার। তবে থাপ্পড়ের কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার রাতে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার আনন্দবাজার নামক স্থানে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত পাভেল শেখ জাজিরা উপজেলার পূর্বকাজিকান্দি গ্রামের আ. রউফ শেখের ছেলে। তিনি শিবচর উপজেলার ড. নুরুল আমিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অনার্সের ছাত্র ছিলেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে জাজিরা থানার ওসি মো. বেলায়েত হোসেন, তার বডিগার্ড জাকির হোসেন এবং গাড়িচালক লক্ষণ চন্দ্রকে সঙ্গে নিয়ে নাওডোবা এলাকায় টহলে যান। পথে একই উপজেলার বি কে নগর ইউনিয়নের আনন্দবাজার নামক স্থানে গাড়ি থামালে পাভেল শেখ ও তার চাচাতো ভাই শান্ত দোকানের পাশে গিয়ে দাঁড়ায়।

নিহতের চাচাতো ভাই শান্ত শেখ বলেন, আমি ও পাভেল আনন্দবাজারে সন্ধ্যায় আমাদের বন্ধু হৃদয়ের কাছে পাসপোর্ট আনতে যাই। সেখানে যাওয়ার পর পুলিশ আমাদের দেখে শরীর তল্লাশি করে। একপর্যায়ে পাভেলের পকেটে হাত দিতে গেলে পাভেল নিষেধ করে। এতে পুলিশ ক্ষিপ্ত হয়ে ওকে চড়-থাপ্পড় মারে। এতে তার কান দিয়ে রক্ত ঝরে। সে অজ্ঞান হয়ে পড়লে তাকে জাজিরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শুক্রবার পুলিশ প্রহরায় নিহতের ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। শুক্রবার বাদ জুমা লাশ পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। পুলিশের ভয়ে পরিবার কোনো মামলা করতে সাহস পায়নি।

নিহত ছাত্র পাভেলের মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার ভালো ছেলে বাড়ি থেকে আনন্দবাজার যায়। সেখানে তাকে পুলিশ ধরে মারপিট করে। এতে তার কান দিয়ে রক্ত ঝরে অজ্ঞান হয়ে যায়। হাসপাতালে নেয়ার পর সে মারা যায়। আমার ছেলে হত্যাকারী পুলিশের বিচার চাই।

নিহতের বাবা আ. রউফ শেখ বলেন, আমার ছেলের মৃত্যু নিয়ে আমি কোনো কথা বলতে পারব না। আমি অসুস্থ।

এলাকার জাহাঙ্গীর কাজী বলেন, সত্য কথা বলা যাবে না। আর এর বিচার পাব না। তাই এ বিয়য়ে কিছু বলব না।

জাজিরা থানার ওসি মো. বেলায়েত হোসেন বলেন, আমি টহলে যাওয়ার সময় আনন্দবাজার নামক স্থানে দুই যুবককে হঠাৎ গলির মধ্যে চলে যেতে দেখে মাদক ব্যবসায়ী সন্দেহ করে পুলিশ পাঠাই। পুলিশ তাদের শরীর তল্লাশি করতে গেলে সে পকেটে হাত দিতে রাজি হয়নি। এ নিয়ে কথাকাটাকাটি শুনে আমি নিজেই সেখানে যাই। গিয়ে দেখি পাভেল নামের যুবক শরীর খিঁচুনি দিয়ে পড়ে গেল।

তিনি বলেন, একটু পরে ওর বাবা আসলে তার সহায়তায় আমরা পার্শ্ববর্তী ওষুধের দোকানে নিয়ে যাই। সেখানে তার বাবা তাকে মৃগী রোগী বলে চামড়ার জুতা নাকের সামনে ধরে। এতেও তার কোনো পরিবর্তন না দেখে তাকে জাজিরা হাসপাতালে নিয়ে যাই। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে। তবে কোনো প্রকার মারপিট বা চড়-থাপ্পড়ের কথা অস্বীকার করেন ওসি।

(জাস্ট নিউজ//এমআই/২০৫৩ঘ.)