জামালপুরে আওয়ামী লীগের দু গ্রুপের সংঘর্ষ, পুলিশের গুলি, আহত অর্ধশতাধিক

জামালপুরে আওয়ামী লীগের দু গ্রুপের সংঘর্ষ, পুলিশের গুলি, আহত অর্ধশতাধিক

জামালপুর, ২৮ ডিসেম্বর (জাস্ট নিউজ) : জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ৩০টি বাড়িঘর ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষের প্রায় অর্ধশতাধিক আহত হয়েছেন।

সংঘর্ষ চলাকালে সরিষাবাড়ী-ভুয়াপুর প্রধান সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে যায়। এতে যান চলাচল বন্ধ থাকে প্রায় দুই ঘণ্টা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ছয় রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও চারটি টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।

শুক্রবার উপজেলার পিংনা ইউনিয়নের নরপাড়া গ্রামে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। শেষ খবর পর্যন্ত থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে এবং আবারো সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে স্থানীয়রা।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানা যায়, চলতি বছরের ৩১ পিংনা ইউনিয়নের নরপাড়া গ্রামে বালু ব্যবসার আধিপত্য নিয়ে এক সংঘর্ষে পিংনা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম আকন্দের ছেলে জাহিদুল ইসলাম আকন্দ নিহত হন। এ ঘটনার জের ধরে নিহত জাহিদুলের চাচাতো ভাই ইউসুফ আকন্দ ও আসামি পক্ষের তোফাজ্জল হোসেনের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল।

সম্প্রতি জাহিদুল হত্যা মামলার আসামিরা জামিনে বের হলে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে তোফাজ্জল হোসেনের লোকজন ইউসুফ আকন্দকে সোনামুই বাজার থেকে সাহাপাড়ায় ধরে নিয়ে রামদা ও হাতুড়ি দিয়ে পেটায়। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে বিক্ষুব্ধ জনতা আজ প্রতিপক্ষের ২২টি পরিবারের অন্তত ৩০টি ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেয়। এসময় উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। পরে বিজিবি, র‌্যাব, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এদিকে ঘটনাস্থল থেকে নাসির উদ্দিন নামে একজনকে পুলিশ আটক করলে পরিস্থিতি নতুন করে উত্তপ্ত হয়ে উঠে। আটক নাসিরকে স্থানীয়রা ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশ ছয় রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও চারটি টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে।

সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত দফায় দফায় চলা সংঘর্ষ ও গুলিতে প্রায় অর্ধশত লোক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের মধ্যে নুরুল ইসলাম আকন্দ (৭৫), জনি, আক্তার, মারুফ হোসেন, শরিফ ও সামছুল আকন্দের নামা জানা যায়। আহত ইউসুফ আকন্দ ও গোলাম মোস্তফাকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছানোয়ার হোসেন বাদশা সাংবািদকেদর জানান, বালুর ব্যবসাকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। বিশৃঙ্খলাকারী কেউ আওয়ামী লীগের হতে পারে না।

সরিষাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাজেদুর রহমান বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ছয় রাউন্ড ফাঁকা গুলি ও চার রাউন্ড টিয়ারসেল নিক্ষেপ করেছে। বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

(জাস্ট নিউজ/একে/২১৫৭ঘ.)