সাদেক হোসেন খোকার জানাজায় নয়াপল্টনে জনসমুদ্র

সাদেক হোসেন খোকার জানাজায় নয়াপল্টনে জনসমুদ্র

নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও অবিভক্ত ঢাকা সিটি করপোরেশনের শেষ মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার তৃতীয় নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটায় রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সামনে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

অবিভক্ত ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের শেষ মেয়র মুক্তিযোদ্ধা সাদেক হোসেন খোকার লাশবাহী কফিন রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেয়া হলে সেখানে কান্নায় ভেঙে পড়েন তার দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহকর্মীরা। এ সময় সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়। প্রিয় নেতাকে শেষ বিদায় জানাতে ঢাকা ও আশপাশের এলাকা থেকে জড়ো হন লাখো মানুষ। লোকে লোকারণ্য হয়ে ওঠে নয়াপল্টন এলাকা।

রাজধানীর নয়াপল্টন, ফকিরাপুল, কাকরাইল এলাকার সড়কে ছড়িয়ে পড়ে মানুষের সমাগম। এ সময় ওই এলাকার সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।

এর আগে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে খোকাকে সর্বস্তরের জনতা শেষ শ্রদ্ধা জানান। শহীদ মিনারে বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ মুক্তিযোদ্ধা খোকার মরদেহে শেষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরাও পুষ্প অর্পণের মাধ্যমে প্রিয় নেতাকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এর আগে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে মঙ্গলবার নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বাদ এশা জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টার মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা ২৬ মিনিটে এমিরেটস এয়ারলাইনের একটি ফ্লাইটে দুবাই হয়ে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায় এই মুক্তিযোদ্ধার কফিন। সেখান থেকে বেলা ১১ টায় মরদেহবাহী গাড়িটি পৌঁছায় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় অস্থায়ীভাবে স্থাপিত মঞ্চে।

জানাজার আগে সাদেক হোসেন খোকার বড় ছেলে ইশরাক হোসেন বলেন, ‘আমার বাবা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। বাবাকে শ্রদ্ধা জানাতে আপনারা যারা এসেছেন সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাই। আপনাদের উপস্থিতি প্রমাণ করে বাবার সঙ্গে সবার সুসম্পর্ক ছিল।’

নিজ দেশের মাটিতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতে না পারায় বাবার বুকে চাপা কষ্ট ছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘তিনি ট্রাভেল ডকুমেন্ট নিয়ে এখানে এসেছেন। ২০১৭ সালে বাবা পাসপোর্ট নবায়ন আবেদন করেছেন কিন্তু সেটা পাননি।’

ইশরাক বলেন, ‘বাবা বলেছেন তার জানাজা যেন দেশে হয়। আমি সরকারকে ধন্যবাদ জানাই বাবার মরদেহ দেশে আনতে সহযোগিতা করার জন্য। বাবা আমাকে বলেছিলেন, আমি বাক্সবন্দি হয়ে দেশে যাবো। ঠিকই বাক্সবন্দি হয়ে আসলো তার দেহটা। এ আমি কখনও ভুলতে পারবো না।’

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, ‘সাদেক হোসেন খোকা একজন সর্বজনস্বীকৃত রাজনীতিবিদ ছিলেন। তিনি এই দেশ এবং আধুনিক ঢাকা গড়তে কাজ করেছেন। আপনারা সবই তার জন্য দোয়া করবেন আল্লাহ যেন তাকে জান্নাত দান করেন।’

জানাজায় উপস্থিত ছিলেন, সাবেক রাষ্ট্রপতি বদরুদ্দোজা চৌধুরী, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি কাদের সিদ্দিকী, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ, ওয়ার্কার্স পাটির সভাপতি রাশেদ খান মেমন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শামসুল হক টুকু, কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইব্রাহিম প্রমুখ।

 এমজে/