শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কোনো ভিশন নেই : রিজভী

শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কোনো ভিশন নেই : রিজভী

শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কোনো ভিশন নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, অটো পাস আর ফটোকপির পাস এসব করে সরকার একটি প্রজন্মকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। দেশের লাখো কোটি শিক্ষার্থীর ভবিষ্যৎ নিয়ে সরকারের কোনো ভিশন নেই বলেই লাখ লাখ শিক্ষার্থী অন্ধকারের অতল গহ্বরে তলিয়ে যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।

রিজভী বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণে বিশ্বের সব দেশই একটি অপ্রত্যাশিত সময় পার করছে। কোয়ারেন্টাইন কিংবা লকডাউন দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। এখন দেশে চলছে ভ্যাকসিন কেনার প্রস্তুতি ও প্রতিযোগিতা। করোনাভাইরাসের কারণে বিকল্প পন্থা অবলম্বন করে স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় চালু রেখেছে। অনলাইন অথবা অন্য কোনো বিকল্প পদ্ধতিতে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা অব্যাহত রেখেছে। শিক্ষার হাব নামে খ্যাত দেশগুলো যেমন গ্রেট ব্রিটেন, ভারত, মালয়েশিয়া, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা বা আমেরিকাসহ কোনো দেশেই আজকের বাস্তবতায় অটো পাস দেয়া হয়নি। সকল দেশেই শিক্ষার্থীর মেধার মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষার বিকল্প শুধু পরীক্ষাই রাখা হয়েছে। অন্য কিছু নয়। কিন্তু বাংলাদেশ চলছে সম্পূর্ণ উল্টো পথে-উল্টো রথে। সব চলছে করোনাভাইরাসের অজুহাতে। শুধু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য বন্ধ করে রাখা রয়েছে।

রিজভী বলেন, বর্তমানে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পেয়েছে জ্যামিতিক হারে। প্রতিদিনই হাজার হাজার মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর সাথে লড়াই করছে। করোনা নিয়ে সরকার তথ্য গোপন করে অতি সামান্য আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা প্রকাশ করছে। অথচ প্রধানমন্ত্রীসহ অন্যান্য নেতা-মন্ত্রীরা নিরাপদে আইসোলেশনে থেকে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন। আর সাধারণ মানুষ বিনা চিকিৎসায় ভেন্টিলেটর, অক্সিজেন, হাসপাতালের বেড ইত্যাদির অভাবে কাতরাচ্ছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সরকারের কোনো দায়িত্ব নেই। সরকার যেন চোখ বুজে ধ্যান করছে।

বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, বিজয়ের ৪৯ বছর পরও দেশের বর্তমান বাস্তবতা হলো, স্বাধীন দেশের নাগরিকরা নিজ দেশেই পরাধীন। শুধু নিজ দেশে পরাধীনই নয় ধীরে ধীরে দেশের ভৌগলিক স্বাধীনতাকেও হুমকির মুখে ফেলে দেয়া হয়েছে। একটি রাষ্ট্র কতটা উন্নত, সভ্য ও টেকসই, সেটি নির্ভর করে একটি রাষ্ট্রের সাংবিধানিক ও বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠানগুলো সিদ্ধান্ত গ্রহণে কতটা স্বাধীন তার ওপর। কোনো রাষ্ট্র যদি উল্টো পথে চলার চেষ্টা করে কিংবা সরকার যদি স্বৈরাচারী কিংবা গণবিরোধী হয়ে ওঠে সেক্ষেত্রে রাষ্ট্র ও সরকারকে সঠিক ধারয় ফেরাতে রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্ব অপরিসীম। কিন্তু বাংলাদেশে বর্তমানে রাষ্ট্রের প্রতিটি সাংবিধানিক ও বিধিবদ্ধ প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষ জানে যে, অটো পাস ব্যবস্থা গ্রহণ করে বর্তমান অবৈধ সরকার জোর করে ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নিশিরাতে অটো পাস সরকার বরাবরই নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকতে একেকবার একেকটা নন ইস্যুকে ইস্যু বানিয়ে দেশের মানুষ আর গণমাধ্যমকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখে।

এমজে/