‘ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংকট সমাধানে বাইডেনের বক্তব্য তাৎপর্যময়’

‘ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংকট সমাধানে বাইডেনের বক্তব্য তাৎপর্যময়’

ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংকট সমাধানে জো বাইডেনের বক্তব্য অত্যন্ত তাৎপর্যময় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ইসরাইল কর্তৃক ফিলিস্তিনি ভূমি দখলের ঘৃণ্য পরিকল্পনা রুখে দিতে সমগ্র বিশ্ববাসীর নৈতিক সমর্থনের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে জাতিসংঘসহ বিশ্বের সকল বিবেকবান রাষ্ট্রসমূহকে অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে। এ প্রেক্ষিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বক্তব্য নিঃসন্দেহে ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংকট সমাধানে অত্যন্ত তাৎপর্যময়। গাজার পুনর্গঠনে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই সংঘাতের একমাত্র জবাব। মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠায় দুই রাষ্ট্রই একমাত্র সমাধান।

সোমবার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আযোজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সংঘাতের মূল কেন্দ্র জেরুজালেম নগরে আন্তসাম্প্রদায়িক লড়াই বন্ধ করার প্রতি জো বাইডেনের উদাত্ত আহবান সংকট সমাধানে ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় মার্কিন গণতন্ত্রপ্রিয় নাগরিকদের দৃঢ় সমর্থনের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের সুস্পষ্ট বহিপ্রকাশ। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংকট নিরসনে এধরনের সুস্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ করায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট মি: জো-বাইডেন ও মার্কিন জনগণের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ, অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছে।
নিরাপত্তা পরিষদের সভাপতি চীনসহ অন্য সব সদস্য রাষ্ট্র আগে থেকেই যুদ্ধ বিরতি করে দুই রাষ্ট্র ভিত্তিক সমাধানের পক্ষে তাদের মত প্রকাশ করছে।

তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, জাতিসংঘের প্রস্তাব এবং অসলো চুক্তির আলোকে ফিলিস্তিন-ইসরাইল সংকট সমাধানে ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ঘোষণা বাস্তবায়নের পথ সুগম করাই হচ্ছে প্রধান চ্যালেঞ্জ। চলমান হত্যাকান্ডকে আন্তর্জাতিক বিচার প্রক্রিয়ায় আনার উদ্যোগসহ দুই রাষ্ট্র গঠনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন জাতিসঙ্ঘের নেতৃত্বে অতিসত্ত্বর কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমরা সংশ্লিষ্ট পক্ষ সমূহের নেতৃত্বের প্রতি আহ্বান জানাই।

ফখরুল বলেন, ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রবাসী সরকারের আমল থেকেই বাংলাদেশ বিশ্বের সকল ধর্মপ্রাণ মুসলিম ও মানবতাবাদী বিশ্ববাসীর সাথে স্বাধীনতাপ্রিয় ফিলিস্তিন নাগরিকদের প্রতি নৈতিক, আত্মিক ও সম্ভাব্য সকল ক্ষেত্রে নিবিড়ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। অথচ, গভীর হতাশা, লজ্জা ও ক্ষোভের সাথে বর্তমান অবৈধ, ভোটারবিহীন নতজানু বাংলাদেশ সরকার ফিলিস্তিন নাগরিকদের উপর ইসরাইলী হামলার বিরুদ্ধে কেবলমাত্র একটি দায়সারাগোছের বিবৃতি প্রদানের মধ্যেই নিজেদের দায়িত্ব সীমাবদ্ধ রেখেছে। এমনকি ইসরাইলী বিমানের হামলা ও ক্ষেপনাস্ত্র নিক্ষেপে যখন ফিলিস্তিনের গাজা নগরী মৃত্যুপুরীতে পরিণত হচ্ছে ঠিক সেই সময় বাংলাদেশের পাসর্পোট থেকে ইসরাইল ভ্রমণের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা সরিয়ে নেয়া হয়েছে। যা হতাশ করছে গোটা বিশ্ববিবেককে।

ফিলিস্তিনের জন্য ওষুধ সামগ্রী পাঠাবে বিএনপি
বিএনপি মহাসচিব বলেন, বিএনপি বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে ফিলিস্তিন নাগরিকদের স্বাধীনতা সংগ্রামে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্বতস্ফুর্ত সহযোগিতা প্রয়াসের। যিনি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্টার অবিসংবাদিত নেতা ইয়াসির আরাফাতকে সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করতে কেবলমাত্র বাংলাদেশের পক্ষ থেকেই অঙ্গীকারাবদ্ধ ছিলেন না, তিনি ফিলিস্তিনিদের পক্ষে ওআইসি, ন্যামসহ অন্যান্য মুসলিম দেশসমূহকেও ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা রাখতে বিশেষ অবদান রেখেছেন। শহীদ জিয়ার ঐতিহাসিক ভূমিকা এবং পরবর্তীকালে বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে দল ও সরকার থেকে শুরু করে বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারর্পাসন তারেক রহমানের নেতৃত্বে বিএনপি সেই একই নীতি ও অবস্থান অব্যাহত রেখেছে। মুসলিম ভ্রাতৃত্ব ও মানবতার পক্ষের শক্তি হিসেবে ফিলিস্তিনি নাগরিকদের স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লড়াইয়ে বিজয়ী হবার আগ পর্যন্ত আমরা সার্বিক ভাবে তাদের পাশে থাকার দৃঢ় অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি। ইতিমধ্যেই আমাদের দল ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে যুদ্ধাহতদের জন্য ঔষধ সামগ্রী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

এমজে/