রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের শিকার খালেদা জিয়া: বিএনপি

রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়নের শিকার খালেদা জিয়া: বিএনপি

বাংলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী জনগণের ওপর এখন ফ্যাসিবাদী জুলুম চালাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাই হচ্ছে শাসকগোষ্ঠীর প্রধান অস্ত্র— এ মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, মানবাধিকার কর্মী, রাজনৈতিক বিশ্লেষক যারা গণতন্ত্রের পক্ষে সোচ্চার তারা সরকারি জুলুমের শিকার হয়ে কেউ গুম হচ্ছেন, কেউ পঙ্গু হচ্ছেন, আবার কেউ কেউ চিরদিনের জন্য হারিয়ে যাচ্ছেন।”

জাতিসংঘ ঘোষিত আন্তর্জাতিক নির্যাতন বিরোধী দিবস উপলক্ষে শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে তিনি এ সব অভিযোগ করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, “বেগম খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ অসত্য ও বানোয়াট মামলায় প্রতিহিংসামূলক সাজা দিয়ে কারাবন্দী করে তার ওপর রাষ্ট্রীয় দমন-পীড়ন চালানো হয়েছে। কারাবন্দী অবস্থায় সুচিকিৎসার অভাবে তার জীবনকে সংকটাপন্ন করে তোলা হয়েছে। তার সুচিকিৎসার অধিকারও কেড়ে নেওয়া হয়েছে। তার সুস্থতার জন্য বিদেশে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন হলেও সরকার বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিয়ে রেখেছে। এটা সরকারের প্রতিহিংসা ও চরম নির্যাতনের বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়।”

বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের নির্যাতিত ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও সম্প্রদায়ের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানিয়ে তিনি বলেন, “যুগে যুগে মানুষ বিভিন্ন রাষ্ট্রের স্বৈরশাসক, নিষ্ঠুর একনায়ক ও একদলীয় শাসনের দ্বারা নির্যাতিত হয়েছে এবং এখনো হচ্ছে। এখনো বিশ্বব্যাপী কোনো না কোনো অঞ্চলে ভাষা, বর্ণ, জাতি ও সম্প্রদায় নিয়ে সংঘাত চলছে। রাজনৈতিক ভিন্নমতের ওপর অসহিষ্ণু শাসকেরা চালাচ্ছে নির্দয় অত্যাচার। জনগণের ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়ে নির্বাচনের নামে প্রহসন ও তামাশা চলছে।”

বিএনপি মহাসচিব বলেন, “বাংলাদেশে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে অবৈধ শাসকগোষ্ঠী জনগণের ওপর এখন ফ্যাসিবাদী জুলুম চালাচ্ছে। এ ক্ষেত্রে গুম ও বিচারবহির্ভূত হত্যাই হচ্ছে শাসকগোষ্ঠীর প্রধান অস্ত্র। যেহেতু জনগণের নিকট সরকারের কোনো জবাবদিহি নেই, তাই গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠানকে হাতের মুঠোয় নিয়ে একদলীয় অপশাসনের জগদ্দল পাথর জনগণের বুকের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। গণমাধ্যমকে হুমকি, ভয় দেখিয়ে ও নির্যাতন করে কবজা করার অপচেষ্টা চলছে। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এখন সম্পূর্ণভাবে বিপন্ন।”

তিনি অভিযোগ করে বলেন, “বিশ্বব্যাপী করোনার ভয়াবহ প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও বাংলাদেশে বিএনপি নেতা-কর্মীসহ ভিন্নমত পোষণকারীদের বিরুদ্ধে গুম, মিথ্যা মামলা ও গ্রেপ্তারের হিড়িক থেমে থাকছে না। বরং সরকারের জুলুমের গতি আগের মতোই চলমান আছে। জাতির সব অর্জন ও এগিয়ে যাওয়া এখন অন্ধকারে হারিয়ে যেতে বসেছে। জুলুম-নির্যাতনের ধারাবাহিকতায় গণতন্ত্রের ওপর সর্বোচ্চ আঘাত হানা হচ্ছে। এই নৈরাজ্যের অমানিশা আমাদের দূর করতেই হবে।”

আন্তর্জাতিক নির্যাতন বিরোধী দিবসে দেশের গণতন্ত্রকামী জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সব নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।