আপনার বিশ্রাম, চিকিৎসা প্রয়োজন: হাসিনাকে জাফরুল্লাহ

আপনার বিশ্রাম, চিকিৎসা প্রয়োজন: হাসিনাকে জাফরুল্লাহ

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা এবং শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেয়া বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেছেন গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা এবং ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী।

শেখ হাসিনা ইতিহাস ভুলে গেছেন উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, এখন উনি (শেখ হাসিনা) বলতে শুরু করেছেন চন্দ্রিমা উদ্যানে জিয়াউর রহমানের লাশ নাই। উনি কী করে জানলেন? তার বডি যারা রিসিভ করেছিলেন তাদের অনেকই বেঁচে আছেন, অনেকেই আবার বেঁচে নেই। তার পোস্টমর্টেম করেছিলেন ডা. তোফায়েল। তিনি এখনো বেঁচে আছেন। সর্বকালের সবচেয়ে বৃহৎ জনসমাগম হয়েছিল জিয়াউর রহমানের মরদেহ যখন মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আনা হয়।

তিনি আরও বলেন, আজ হঠাৎ এইসব তথ্য কেন আনছেন? এটা অনেকাংশে মস্তিষ্ক বিকৃতির লক্ষ্মণ। আপনার ওপর এত মানসিক চাপ-অত্যাচার। আপনার বিশ্রাম প্রয়োজন। চিকিৎসা প্রয়োজন। অনুগ্রহ করে জিয়াউর রহমানকে নিয়ে টানাটানি করবেন না। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে টানাটানি করবেন না। তাদের শান্তিতে ঘুমাতে দেন।

শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর শাহবাগে গণসংহতি আন্দোলনের ১৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠিত এক সমাবেশে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ কথা বলেন।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর জ্ঞানচক্ষু খুলে গেছে। সাহসের সঙ্গে, সততার সঙ্গে উনি নিজের দলের দিকে তাকাতে পেরেছেন। উনি বলেছেন, বঙ্গবন্ধুর বাড়ি যখন আক্রান্ত হয়েছিল তখন বঙ্গবন্ধু ফোন করেছিলেন তার দলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কাছে। ফোন করেছিলেন তোফায়েল আহমেদ, আব্দুল রাজ্জাক, সেনাপ্রধান সফিউল্লাহ এবং আরও অনেককে। উনি ফোন করে অনুনয়-বিনয় করেছিলেন, আমার এখানে আসো, কী হচ্ছে তোমরা দেখ।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি তো বললেন না উনি (বঙ্গবন্ধু) জিয়াউর রহমানকে কেন ফোন করেননি? জেনারেল ওসমানীকে কেন ফোন করেননি? বিডিআর প্রধান জেনারেল খলিলকে কেন ফোন করেননি? খালেদ মোশাররফকে কেন ফোন করেননি? সবচেয়ে বড় কথা যারা স্বাধীনতা এনেছিলেন সেই তাজউদ্দীনকে কেন ফোন করেননি? সৈয়দ নজরুল ইসলামকে কেন ফোন করেননি। উনি কি বিব্রতবোধ করছিলেন? সেদিন বঙ্গবন্ধু পাশে যারা দাঁড়াতে পারতেন তাদের কাউকে তিনি ডাকেন নি।

বঙ্গবন্ধু হত্যার জন্য পাকিস্তান দায়ী নয় উল্লেখ করে জাফরুল্লাহ চৌধুরী বলেন, ‘দায়ী ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনী। তার প্রমাণ, ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনী কয়েকদিন আগে বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন—এটা (হত্যার পরিকল্পনা) হচ্ছে। তার মানে তারা জানত, তারা অর্গানাইজড করেছে। তখন তো পাকিস্তানিদের এখানে আসার কোনো সুযোগই ছিল না। ভারত বুঝতে পারে যে, বঙ্গবন্ধুকে সরাতে হবে।’

‘তার জন্য শুরু হয় রক্ষীবাহিনীর অত্যাচার। রক্ষীবাহিনী কারণে পাকিস্তান থেকে আগত সৈন্যরা, মুক্তিযুদ্ধের অংশগ্রহণকারী সৈন্যরা সবাই বঙ্গবন্ধুর ওপর ক্ষিপ্ত ছিলেন। সেদিন বঙ্গবন্ধু পাশে যারা দাঁড়াতে পারতেন, তাদের কেউকে তিনি ডাকেননি’ যোগ করেন তিনি।

গণসংহতির ঢাকা মহানগর সমন্বয়কারী মনির উদ্দীন পাপ্পুর সভাপতিত্বে এ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন- গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বজলুর রশিদ ফিরোজ, ভাসানী অনুসারী পরিষদের মহাসচিব বীরমুক্তিযোদ্ধা শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, গণসংহতি আন্দোলনের ভারপ্রাপ্ত সমন্বয়ক আবুল হাসান রুবেল, গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি তাছলিমা আক্তার প্রমুখ।