করোনা নয়, আন্দোলনের ভয়ে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে: বিএনপি

করোনা নয়, আন্দোলনের ভয়ে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে: বিএনপি

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘করোনার কারণে নয়, আন্দোলনের ভয়ে সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে।’

‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে একটি গোষ্ঠী অস্থিতিশীলতা তৈরির ষড়যন্ত্রের প্রস্তুতি নিচ্ছে’, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের এমন বক্তব্য প্রসঙ্গে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘তাহলে সেজন্য তারা এত দিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখেছে। অর্থাৎ করোনার কারণে নয়, শিশুদের নিরাপত্তার কারণে নয়, আন্দোলনকে ঠেকানোর জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে রেখেছে, এটাই প্রমাণ হয়েছে তাঁর কথায়।’

আজ শনিবার গুলশানে বিএনপির চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি।

বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের মাজারে তাঁর মরদেহ থাকা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের বিষয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী কখন কী বক্তব্য দেন, কেন দেন, এটা এখন পর্যন্ত ঠিক আমাদের বোধগম্য হয়নি। নিশ্চয়ই মনে আছে যে, তাঁরা যখন বিরোধী দলে ছিলেন, তখন আদালত একটা মন্তব্য করেছিলেন এবং তিনি গতকাল যে বক্তব্য বা উক্তিগুলো করেছেন, তা কোনো রুচিবান মানুষ করতে পারে বলে আমি মনে করি না। এটা আমার কাছে মনে হয়েছে রুচিহীন, মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছু নয়।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘এগুলো মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করে। দাফন হয়েছে, লাখ-লাখ মানুষ সেই জানাজায় শরিক হয়েছে। সাবেক সেনা অধিনায়ক হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ নিজেই তাঁর (জিয়াউর রহমানের) মরদেহ বহন করেছেন। এটা ওপেন ক্লিয়ার, এর চেয়ে বড় সত্য তো আর কিছু হতে পারে না। এখানে এসব ইস্যুগুলো নিয়ে আসা তাঁরা যে কতটা রাজনীতিশূন্য হয়ে গেছেন, দেউলিয়া হয়ে গেছেন, এটাই তার প্রমাণ।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজ আওয়ামী লীগ শুধু কিছু ইস্যু তৈরি করে। আপনাদের (সাংবাদিক) দিয়ে সেই ইস্যুগুলো আমাদের প্রশ্ন করে, তা আবার সামনে নিয়ে আসে, এগুলো করে মানুষের দৃষ্টি অন্যদিকে ঘুরিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টামাত্র। ওই জায়গাটায় তারা আসে না কেন? আগামী নির্বাচনটা কীভাবে করবেন, দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে কীভাবে শক্তিশালী করবেন, কীভাবে মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দেবেন, সেই কথাগুলোর তারা কোনো উত্তর দেয় না।’

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘গতকাল শুক্রবার আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমি নাকি তাঁর কথার উত্তর দেই না, উনি কি পত্রিকা পড়েন? আমি শুধু তাঁর কথার উত্তরই দেই না, তাঁর প্রতিটি কথার অত্যন্ত সঠিক তথ্যগুলো তুলে ধরি। উনি গতকাল কথাগুলো বলে ছবি দেখাতে বলেছেন। আবার এসব কথার উত্তর দিতে গেলে মানহানির মামলা করে। এসব কথা বলতে আমাদের রুচিতে লাগে। এটা তো রাজনীতি নয়। করোনাতে কী করেছেন, মানুষের জীবন-জীবিকার জন্য কী করেছেন, সেগুলো বলুন। মানুষ দরিদ্র হচ্ছে, আর আওয়ামী লীগের প্রতিটি লোক ধনী হচ্ছে। বিদেশে বাড়ি-গাড়ি করছে। রাষ্ট্রব্যবস্থা পুরোপুরি ভেঙে পড়েছে। সেগুলো নিয়ে তাদের কোনো কথা নেই, শুধুমাত্র নন-ইস্যুকে ইস্যু করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের কবর নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা যেসব কথা বলেছে তাতে ধর্মপ্রাণ মানুষের মনে আঘাত লেগেছে। এটা সাধারণ মানুষ ভালোভাবে নেয়নি। শুধু শুধু জিয়াউর রহমানকে টানা, এটা করতে গেলে এক সময় শেখ মুজিবুর রহমানকে টানা হয়। এগুলো আমরা করতে চাই না। তাঁরা সবাই আমাদের শ্রদ্ধেয় নেতা, তাঁদের সে জায়গাতেই রাখা উচিত।’