ঢাবিতে এক নেতার মাথা ফাটালেন ছাত্রলীগের কর্মীরা

ঢাবিতে এক নেতার মাথা ফাটালেন ছাত্রলীগের কর্মীরা

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খানের সঙ্গে দেখা করতে সিলেট থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসেছিলেন সংগঠনের সিলেট জেলার এক নেতা৷

গতকাল শুক্রবার রাতে ক্যাম্পাসের টিএসসির ডাস ক্যাফেটেরিয়ায় চা পান করছিলেন৷ এ সময় অতর্কিতে তাঁর ওপর হামলা করেন ছাত্রলীগেরই বিশ্ববিদ্যালয় শাখার একদল নেতা-কর্মী৷ হামলায় ওই নেতার মাথা ফেটেছে, পড়েছে ১৩টি সেলাই৷

এমন অভিযোগে গতকাল মধ্যরাতে রাজধানীর শাহবাগ থানায় মামলার আবেদন করেছেন সিলেট জেলার কানাইঘাট সরকারি কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এম আবদুল্লাহ আল হাদী৷ হাদীর অভিযোগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আমির হামজা, জগন্নাথ হল শাখার কর্মী পলাশ রায় ওরফে সৌরভ ও ঢাকা কলেজ শাখার কর্মী মো. রাব্বিসহ অজ্ঞাতনামা আট–নয়জন তাঁর ওপর হামলা করেছেন৷

এম এম আবদুল্লাহ আল হাদী সম্প্রতি ঘোষিত সিলেট জেলা ছাত্রলীগের কমিটিতে শীর্ষ পদপ্রত্যাশীও ছিলেন৷ মামলার আবেদনে তিনি বলেন, ‘সিলেট থেকে ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খানের সঙ্গে দেখা করার জন্য আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসি৷ শুক্রবার (২৯ অক্টোবর) রাত আনুমানিক ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির ডাস ক্যাফেটেরিয়ায় চা পান করছিলাম৷ এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হলের ছাত্র আমির হামজা, জগন্নাথ হলের ছাত্র পলাশ রায় ওরফে সৌরভ ও ঢাকা কলেজের ইন্টারন্যাশনাল হলের ছাত্র মো. রাব্বিসহ অজ্ঞাতনামা আট-নয়জন আমাকে ঘিরে ধরেন৷ তাঁরা আমাকে বলেন, “তুই এখানে আসছিস কেন?” কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁরা আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ ও মারধর করতে থাকেন৷’

আবদুল্লাহ আল হাদী এখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসাধীন৷ গতকাল রাতে কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের সহযোগিতায় তিনি শাহবাগ থানায় মামলার আবেদন করেন৷ তাঁর আবেদনের বিষয়ে শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মওদুত হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, তাঁরা এই ঘটনার লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন৷ তদন্তের পর এ বিষয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷

এম এম আবদুল্লাহ আল হাদী বলছেন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন দাবি করায় তাঁর ওপর হামলা করা হয়েছে৷ তাঁর ভাষ্য, ‘আমি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন চাই৷ এ নিয়ে নিয়মিতই ফেসবুকে লেখালেখি করি৷ সংগঠনের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গঠনমূলক সমালোচনা করি৷ আমার অপরাধ এটাই৷’

তবে আমির হামজা মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন৷ তাঁর দাবি, ওই ঘটনার সময় তিনি টিএসসি এলাকায় ছিলেনই না৷ অভিযুক্ত অন্য দুজনেরও একই বক্তব্য৷

এম এম আবদুল্লাহ আল হাদী ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণবিষয়ক উপসম্পাদক মেশকাত হোসেনের ঘনিষ্ঠ৷ মেশকাত বলেন, ‘গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ছাত্রলীগের বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে৷ আমরা যাঁরা সম্মেলন চাই, তাঁদের ওপর ছাত্রলীগের মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও লেখক ভট্টাচার্য ক্ষুব্ধ৷’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মুঠোফোনে কল করেও সাড়া পাওয়া যায়নি৷