প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে: মির্জা আলমগীর

প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে: মির্জা আলমগীর

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর দাবি করেছেন, ‘দেশে ন্যায়বিচার আজ ভূলুণ্ঠিত। প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থাকে ধ্বংস করা হয়েছে। ন্যায়বিচার নেই। সত্য বলার অপরাধে প্রধান বিচারপতিকে সাজা দেওয়া হলো। এ দেশে সম্মানিত কোনো ব্যক্তিরই সম্মান নেই। এখন কোনো বিচারপতিই সত্য রায় দিতে পারেন না। কারণ, সত্য বললে বা সঠিক রায় দিলে তাদেরকে এস কে সিনহার পরিণতি ভোগ করতে হবে।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটি আয়োজিত ‘আজকের প্রেক্ষাপটে ঐতিহাসিক ৭ নভেম্বর জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের তাৎপর্য’ শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপিনেতা এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের দল হিসেবে দাবি করলেও তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি। বিএনপির পঞ্চাশোর্ধ্ব বয়সের বেশিরভাগ নেতাই মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। এ দলের প্রতিষ্ঠাতা শহীদ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন। আর আওয়ামী লীগের যারা মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়ার কথা তারা ভারতে পালিয়ে গেলেন। স্বাধীনতার পর এই আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সালে পর্যন্ত দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব বিলীন করে দিয়েছে। বাকশাল কায়েম করে বহুদলীয় গণতন্ত্রকে নির্বাসিত করেছিলো।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ৭ নভেম্বর সিপাহি-জনতার সম্মিলিত প্রয়াসে জিয়াউর রহমান এদেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন। এরপর দেশে রাজনৈতিক ও অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন হয়েছিল। আজ আবারও সেই ৭৫-এর মতো বাকশাল তৈরির ষড়যন্ত্র হচ্ছে। গত এক যুগ ধরে দেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছে। ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনি ব্যবস্থা ধ্বংস করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, আজকে সংকট অনেক গভীরে। স্বাধীনতার অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে পড়ছে। গণতন্ত্রের নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়া আজ কারাগারে। লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা, হত্যা করা হয়েছে বিএনপির সহস্রাধিক নেতাকর্মীকে। এ থেকে মুক্তি পেতে হলে দেশপ্রেমিক সব দল ও জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করে দেশ ও জাতিকে এই ফ্যাসিবাদ সরকার থেকে মুক্ত করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে কোথাও নিরাপত্তা নেই। ডিজিটাল আইনে মামলা করে রাষ্ট্র ও সমাজে ভীতি সৃষ্টি করা হয়েছে। মানুষের বোধশক্তি ধ্বংস করা হচ্ছে। প্রশাসন ও বিচার ব্যবস্থা আজ ধ্বংস করা হচ্ছে। আমরা এ থেকে পরিত্রাণ চাই। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে দিতে চাই। এজন্য সবাইকেই আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে হবে, ত্যাগ শিকারের জন্য তৈরি থাকতে হবে।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালামের পরিচালনায় সেমিনারে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) শাহজাহান ওমর বীর উত্তম, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহীম বীর প্রতীক, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্যামা ওবায়েদ, মুক্তিযোদ্ধাবিষয়ক সম্পাদক কর্নেল (অব.) জয়নুল আবেদীন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ।