বাকশালের ধারাবাহিকতায় ইসি আইন করেছে আ’লীগ: বিএনপি

বাকশালের ধারাবাহিকতায় ইসি আইন করেছে আ’লীগ: বিএনপি

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ চরিত্রগতভাবে স্বৈরতান্ত্রিক দল। আওয়ামী লীগ চরিত্রগতভাবে একটি ফ্যাসিবাদী দল। যারা এই দলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তাদেরকে বাদ দিয়ে যারা নেতৃত্বে এসেছিলেন তাদের অন্তরে ডেমোক্রেসি ছিল না। তারাই ১৯৭৫ সালে গণতন্ত্রকে হত্যা করে বাকশাল প্রতিষ্ঠা করেছিল। সেই বাকশালের ধারাবাহিকতায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) আইন করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।

রোববার বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন জাতীয় কমিটির উদ্যোগে বাকশাল দিবস উপলক্ষে ‘২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫: বাকশাল’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। এতে সারাদেশসহ বিভিন্ন দেশের দলের প্রবাসী নেতা-কর্মীরা অংশ নেন।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বাকশাল একটি গালিতে পরিণত হয়েছে। এই বাকশালের মধ্য দিয়ে সেদিন দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছিল, রাজনীতিকে ধ্বংস করা হয়েছিল, স্বপ্নকে ধ্বংস করা হয়েছিল। একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে তারা দেশ ও জাতিকে অন্ধকারের ভেতরে নিয়ে গিয়েছিল। এখন ঠিক একইভাবে আওয়ামী লীগ অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশের অর্থনীতিকে লুটতরাজের অর্থনীতিতে পরিণত করেছে, সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকাণ্ডকে অত্যন্ত নিষ্ঠুর হাতে দমন করছে। বিশেষ করে যারা স্বাধীন চেতা গণতান্ত্রিক মানুষ তাদেরকে হত্যা-গুমের মধ্য দিয়ে তাদেরকে ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে এবং প্রতিবাদের ভাষাকে বন্ধ করা হচ্ছে। বিভিন্ন নির্বতনমূলক ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো আইন তৈরি করে যারা কথা বলতে চান তাদের কথা বলা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।

নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকে ৪৭ বছর পরে আবার বাকশাল প্রতিষ্ঠার যে নীল নকশা শুরু হয়েছে আমাদেরকে তা প্রতিহত করতে হবে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে, তারেক রহমানের নেতৃত্বে, বিএনপির নেতৃত্বে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগ আর গণতন্ত্র এক সঙ্গে যায় না। এই দল গণতন্ত্রবিরোধী শক্তি। গণতন্ত্র নেই বলেই দেশ একটা অন্ধকারের গহ্বরের কিনারে পৌঁছেছে। এ থেকে দেশকে রক্ষা করতে জনগণকে এগিয়ে আসতে হবে। এখন সময় এসেছে দলমত নির্বিশেষে সকলে মিলে জাতীয় ঐক্য সৃষ্টি করে এই সরকারকে সরানোর।

স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, আজকের দিনের সঙ্গে বাকশালের মধ্যে কোনো তফাৎ নেই। বিলম্বে হলেও বিশ্ব বিবেক আমাদের দেশের সন্তান হারানো মায়ের কান্না, ভাই হারানো বোনের কান্না শুনতে পেয়েছে। এই সরকার যে অবস্থায় দেশকে নিয়েছে, গণতন্ত্রহীন, মানবাধিকারহরণ, দুর্নীতি ইত্যাদি অপবাদ থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে। গণতন্ত্র ও মানুষের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে দলের জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুস সালামের পরিচালনায় এই ভার্চুয়াল আলোচনা সভায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুও বক্তব্য রাখেন।