দাবি না মানলে রাজপথেই সরকার পরিবর্তন: বিএনপি

দাবি না মানলে রাজপথেই সরকার পরিবর্তন: বিএনপি

নির্বাচনকালীন সরকারের দাবি না মানলে রাজপথেই সরকার পরিবর্তন করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, এখন রাজপথেই একমাত্র সমাধান। সরকার যদি নিজেরা উদ্যোগ না নেয়, যে দাবিগুলো করেছি তা না মানে তাহলে রাজপথেই একমাত্র সমাধান।

শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে ওভারসিজ করসপন্ডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ওকাব) এর 'মিট দ্যা ওকাব' অনুষ্ঠানে দেশের চলমান পরিস্থিতিতে দলীয় লক্ষ্য তুলে ধরতে গিয়ে বিএনপি মহাসচিব এ কথা জানান।
নির্বাচনকালীন সরকারের জন্য সরকারকেই সংসদে আইন আনতে হবে উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৯৬ সালে আমরা তো তাই করেছিলাম। ১৯৯০ সালে হয়েছে, পরবর্তিকালে আওয়ামী লীগ তো সংবিধানের বহু অংশ পরিবর্তন করেছে। সুতরাং চাইলে অবশ্যই হবে।

সরকারের সঙ্গে ব্যাক ডোরে সংলাপ নেই উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, আমাদের যা কিছু সব ফ্রন্ট ডোর। আমরা সবসময় সামনে থেকে প্রকাশ্যে ঘোষণা দিয়েছি, তত্ত্বাবধায়ক সরকার বা নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া বিএনপিসহ অনেকগুলো রাজনৈতিক দল কোনো নির্বাচনে যাবে না।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি না মানলে সংলাপও নয় জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, যখন সরকার নিরপেক্ষ সরকারের গঠনের বিষয়ে একমত হবে, তখনই এ বিষয়টি আসবে। তার আগে না, অন্যবিষয়ে তো নয়। ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরে আমরা নির্বাচনে গিয়েছি। সেই আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছিলেন যে, নির্বাচন সুষ্ঠু হবে। আমরা গণতন্ত্রের স্বার্থেই সমস্ত দল একমত হয়ে সেই নির্বাচনে গিয়েছিলাম। কিন্তু শেখ হাসিনা তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেননি। কয়েকদিন পর থেকেই ধড়পাকড় শুরু করেছিলেন এবং যতরকমের নির্যাতন-নিপীড়ন করা দরকার বিরোধী দলের ওপর তিনি তাই করেছিলেন। আমাদের ১৯ জন প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। আর দিনের ভোট রাতে করা হয়েছিল।

বিএনপি কোনো সহিংসতায় যাচ্ছে কিনা প্রশ্ন করা হলে দলের মহাসচিব বলেন, এটা তো নির্ভর করবে সরকারের ওপর। সরকার এখন ড্রাইভিং সিটে। তারা যদি মারামারি কাটাকাটি দেখতে না চায় তাহলে পদত্যাগ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ব্যবস্থা করবে।

আন্দোলনে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান কী হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটা জাতীয় ঐক্য তৈরি করার জন্য সব রাজনৈতিক দলের সাথে কথা বলছি।

আগামী নির্বাচনে বিএনপি গেলে তার নেতা কে হবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলের নেতৃত্ব নির্ধারিত হয়ে আছে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া আমাদের নেত্রী, তার অবর্তমানে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান আমাদের নেতা। সুতরাং এখানে কোনো অস্পষ্টতা নেই।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে ফখরুল বলেন, সব দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার অধিকার আছে। ইউক্রেন একটা স্বাধীন দেশ। সেখানে কোনো আক্রমন কখনই সমর্থন করিনি, করবো না।

বাংলাদেশের সাথে শ্রীলঙ্কার মিল কোথায় জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, বৈদেশিক মজুদ নিচের দিকে যাচ্ছে, রেমিট্যান্স কমে যাচ্ছে। শ্রীলঙ্কার রিজার্ভ শূণ্যের কোঠায় গিয়ে ঠেকেছে। এই সরকার এমনভাবে প্রতারণা করে রিজার্ভ ৪২ বিলিয়নের কথা বলে। এর মধ্যে সাড়ে ৭ বিলিয়ন এক্সপোর্ট ডেভলপমেন্ট ফান্ডের নামে দিয়েছে। এই টাকা ফেরত আসার সম্ভাবনা নেই। রপ্তানি কমে আসছে, উৎপাদনের ব্যয় বাড়ছে। এর ফলে সমস্যা গভীর হচ্ছে। এজন্য আমরা আশঙ্কা করছি এখানে শ্রীলঙ্কার মতো অর্থনৈতিক দিক দিয়ে একটা অবস্থা তৈরি হতে পারে।

মিট দ্য প্রেস অনুষ্ঠানে ওকাবের আহ্বায়ক বিবিসির সংবাদদাতা কাদির কল্লোল ও সদস্য সচিব জার্মান নিউজ এজেন্সি-ডিপিএর সংবাদদাতা নজরুল ইসলাম মিঠুর সঞ্চালনায় ওকাবের জ্যেষ্ঠ সদস্য ফরিদ আহমেদ মূল মঞ্চে ছিলেন।

মিট দ্য ওকাব অনুষ্ঠান বিএনপির মিডিয়া সেলের জহির উদ্দিন স্বপন এবং শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি।