হারিস চৌধুরী স্মরনে গ্রামের বাড়িতে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

হারিস চৌধুরী স্মরনে গ্রামের বাড়িতে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত

গ্রামের সবুজ ঘাস আর কাদা মাটিতে মাখামাখি করে বেড়ে ওঠা আবুল হারিছ চৌধুরী বিএনপি নেতৃত্বাধীন গত চারদলীয় জোট সরকারের ক্ষমতাধর ব্যক্তি ছিলেন। পট পরিবর্তনের পর তত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে তিনি আত্মগোপনে চলে যান। প্রায় ১৬ বছর আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় বর্তমান শেখ হাসিনা সরকারের আমলে গত বছরের ৩রা সেপ্টেম্বর তার মৃত্যু হয়। প্রথমদিকে তার স্বজনরা মৃত্যুর বিষয়টি জনসম্মুখে প্রকাশ করেননি। অতি গোপনে দাফনও করেছিলেন। মৃত্যুর ২-৩ মাস পর ঘনিষ্টজন ও শুভাকাংখীদের আকার-ঈঙ্গিতে বুঝিয়েছেন।

পরিবারের পক্ষ থেকে তেমন কোনো আনুষ্ঠানিকতাও ছিল না। এ কারণে প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার স্মরণে সিলেটের কানাইঘাটের নিজ বাড়িতে একত্রিত হয়েছিলেন পরিবারের সদস্যরা। মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শনিবার আয়োজন করা হয় দোয়া মাহফিলের। এতে পরিবারের সদস্য ছাড়াও দলীয় নেতাকর্মী এবং এলাকার সাধারণ মানুষ অংশ নেন।

বেলা দুইটার পর দোয়া মাহফিল শুরু হয়। মোনাজাত পরিচালনা করেন সড়কের বাজার জামে মসজিদের ইমাম ও জমিয়ত নেতা মাওলানা মুফতি এবাদুর রহমান। দোয়া পরিচালনার পূর্বে তিনি জানান, ‘হারিছ চৌধুরী এলাকার মানুষকে ভালোবাসতেন। সব সময় সবার কাছে দোয়া চাইতেন। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত। এ সময় তিনি হারিছ চৌধুরীর প্রয়াত আরেক ভাই সেলিম চৌধুরীকে স্মরণ করেন।’

দোয়া মাহফিলে পরিবারের সদস্যরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন- বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ ক্ষুদ্র ঋণ বিষয়ক সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক, সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় নেতা ও নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর ছোট ভাই আছকির আলী, এম ইলিয়াস আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আবরার ইলিয়াস, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমদ, জেলা বিএনপি নেতা ময়নুল হক, জেলা যুবদলের আহবায়ক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু, জেলা বিএনপি নেতা মাহবুবুল হক চৌধুরী, কানাইঘাট উপজেলা বিএনপির সভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন, সাধারণ সম্পাদক শরিফুল হক, জকিগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন সেলিম, সাবেক পৌর মেয়র ইকবাল হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান আহমদ সোলেমান, জামায়াত নেতা অধ্যাপক আব্দুর রহিম প্রমুখ।

হারিছ চৌধুরী ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে তার স্মৃতি বিজড়িত সড়কের বাজার উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের ভেতরে ‘হারিছ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে’ আয়োজিত দোয়া মাহফিলে হারিছ চৌধুরীর বড় ভাই প্রবাসী চিকিৎসক আব্দুল মুকিত চৌধুরী মামুন, ছোট ভাই কামাল চৌধুরী, স্ত্রী হোসনে আরা চৌধুরী, মেয়ে সামিরা ইসলাম চৌধুরী, বোন এখলাছুন্নেছা চৌধুরী, রুনা চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন।

হারিছ চৌধুরীর একমাত্র মেয়ে সামিরা ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘আমার পিতা হারিছ চৌধুরী গত বছরের এই দিনে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে মৃত্যুবরণ করেন। অসহযোগিতার কারণে তাকে নিজ বাড়িতে এনে আমার দাদীর কবরের পাশে দাফন করতে পারিনি। এ কারণে তার মৃত্যুর দিন স্মরণে নিজ এলাকায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। এই আয়োজন উপলক্ষে পরিবারের সদস্যরা সবাই মিলিত হয়েছেন। অনেকে প্রবাস থেকে দেশে এসেছেন।’

তিনি বলেন, ‘বাবার মৃত্যুর পর আমরা কিছুই করতে পারিনি। এ কারণে এবার সবাই মিলে এ আয়োজন করেছি। আমার পিতা এলাকার মানুষকে ভালোবাসতেন। সব সময় মানুষের কথা চিন্তা করতেন। এজন্য আজ আমরা বাড়িতেই এ আয়োজন করেছি।’