বিএনপি দিনে নয়াপল্টনে অফিস করে, রাতে দূতাবাসে ঘুরে: তথ্যমন্ত্রী

বিএনপি দিনে নয়াপল্টনে অফিস করে, রাতে দূতাবাসে ঘুরে: তথ্যমন্ত্রী

তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘বিএনপি বিশ্বাস করে বন্দুকের নলের শক্তি, ষড়যন্ত্র আর বিদেশিদের ওপর ভর করে ক্ষমতায় যাওয়া যায়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সেটি বিশ্বাস করে না। আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তিতেই বলীয়ান এবং সেটিই বাস্তবতা।’

বুধবার দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ এ কথা বলেন।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি মন্তব্য করেন, ‘আওয়ামী লীগ জনসমর্থনহীন’। এর জবাবে আজ হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের শক্তিতেই বলীয়ান। আমরা জনগণের শক্তিকেই বিশ্বাস করি, অন্য কোনো শক্তিতে আমরা বিশ্বাস করি না। অন্য কোনো শক্তির সমর্থন–সহযোগিতা নিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কখনো দেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় যায়নি এবং কোনো বিদেশি শক্তির ওপরও আমরা নির্ভরশীল নই। আমরা জনগণের শক্তির ওপরই নির্ভরশীল।’

অপরদিকে বিএনপিই জনগণের সমর্থনহীন উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি দিনের বেলায় নয়াপল্টনে অফিস করে, রাতের বেলায় দূতাবাসে দূতাবাসে ঘুরে বেড়ায়। কারণ, তারা জনগণের শক্তিতে বিশ্বাস করে না। তারা মনে করে, দূতাবাসে দূতাবাসে ঘুরে বেড়ালে বিদেশিরা তাদেরকে কোলে করে ক্ষমতায় বসাবে। কিন্তু এ দেশের ক্ষমতায় বসানোর মালিক হচ্ছে জনগণ।’

হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি বিশ্বাস করে বন্দুকের শক্তিতে, যেভাবে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করেছিলেন। বন্দুকের নলের ওপর ভর করে ক্ষমতা দখল করে ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে ক্ষমতা দখল করেছিল। আজকে যাঁরা বড় বড় কথা বলছেন, তাঁদের প্রতি যথাযথ সম্মান রেখেই বলতে চাই, সবাই অন্য দল করত। ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট গ্রহণ করার জন্যই বিএনপিতে গিয়েছিল।’

চট্টগ্রামের রামু অঞ্চলের সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর দিয়ে প্রস্তাবিত রাস্তা নির্মাণের বিষয়ে প্রশ্ন করলে হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এটি সমীচীন নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে কখনোই এর পক্ষে নই, এটি সমর্থন করতে পারি না। যেহেতু পরিবেশবিজ্ঞানের ছাত্র আমি, পরিবেশকর্মী ছিলাম, ১০ বছর দলের বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক ছিলাম, পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে তো পরে এসেছি। সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ভেতর দিয়ে রাস্তা নির্মাণ করলে ব্যাপক বনভূমি ধ্বংস, দূষণ অনেক কিছু হবে। মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নেই বলেও আমি পত্রিকায় দেখেছি। যাঁরা এটিকে পত্রিকায় এনেছেন, তাঁদেরকে ধন্যবাদ জানাই। সংশ্লিষ্ট সবার কাছে আমার বিনীত নিবেদন, বনভূমির ভেতর দিয়ে রাস্তা হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।’

এর আগে ১৯৭৩ সালে প্রকাশিত বঙ্গবন্ধুর ভাষণ সংকলন ‘বজ্রকণ্ঠ’ গ্রন্থের ৫০ বছর উপলক্ষে পুনর্মুদ্রণের মোড়ক উন্মোচন করেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। এ সময় তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ৭ই মার্চের কালজয়ী ভাষণের মাধ্যমে একটি নিরস্ত্র জাতিকে সশস্ত্র জাতিতে রূপান্তরিত করেছিলেন। যে ভাষণ কার্যত স্বাধীনতার ঘোষণা ছিল, যদিও–বা তিনি এমনভাবে বলেছিলেন, তাঁকে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলার কোনো সুযোগ দেননি।’

বিশ্বের সেরা ভাষণগুলোর অন্যতম এই ভাষণকে বিশ্ব ঐতিহ্যের অন্যতম দলিল হিসেবে ইউনেসকো স্বীকৃতি দিয়েছে, সংরক্ষণ করছে বলে উল্লেখ করেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই গ্রন্থে বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ভাষণ থেকে শুরু করে ১৯৭২ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যেসব বক্তৃতা করেছেন, সবগুলোই এখানে গ্রন্থিত আছে, যা বঙ্গবন্ধু প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ১৯৭৩ সালে প্রথম তৎকালীন প্রকাশনা দপ্তর থেকে প্রকাশিত হয়।

গ্রন্থটির প্রকাশক চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স. ম. গোলাম কিবরিয়া অনুষ্ঠানে সূচনা বক্তব্য দেন। জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক কাঞ্চন কুমার দে, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি মানিক লাল ঘোষ মোড়ক উন্মোচনে অংশ নেন।