সরকারের লাগামহীন দুর্নীতিতে বিদ্যুৎ খাতে বিপর্যয়: বিএনপি

সরকারের লাগামহীন দুর্নীতিতে বিদ্যুৎ খাতে বিপর্যয়: বিএনপি

সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি ও চরম অব্যবস্থাপনার কারণে দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে চরম বিপর্যয় দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।

দলটি বলছে, রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশের মানুষ চরম দুর্বিষহ অবস্থায় পড়েছেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে মানুষ অতিষ্ঠ।

সোমবার রাতে দলের স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠকে দলের নেতারা এসব অভিযোগ করেন।

মঙ্গলবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তি এ তথ্য জানানো হয়।

এতে বলা হয়, সভায় জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ বিপর্যয় ও রাজধানীসহ সারা দেশে অসহনীয় লোডশেডিং বৃদ্ধির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সভা মনে করে সরকারের লাগামহীন দুর্নীতি ও চরম অব্যবস্থাপনার কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। এর ফলে একদিকে জন-জীবনে সৃষ্টি হয়েছে চরম অস্বস্তিকর পরিস্থিতি। অন্যদিকে কৃষি, শিল্প ও পরিবহন খাতে অস্থিতিশীলতা তৈরি হচ্ছে; এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অসহনীয় মূল্যস্ফীতি।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের এ বিপর্যয়ের ওপর বিস্তারিত তথ্য সংবলিত একটি প্রেস কনফারেন্স করবে বলে জানায় বিএনপি। সভায় পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকারের ব্যর্থতার নিন্দা করা হয় এবং অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ দাবি করা হয়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয় দলীয় সভায়, খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ সব রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ওপর দায়ের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার, অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্তি ও নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর, জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে নিয়ে আসার দাবিতে এবং চলমান আন্দোলনে পুলিশের গুলিতে ভোলার নূরে আলম, আব্দুর রহিম, নারায়ণগঞ্জের শাওন প্রধান, মুন্সিগঞ্জের শহিদুল আলম শাওনকে হত্যা ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে আজিমের হত্যার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে চলমান গণ-আন্দোলনের ঘোষিত বিভাগীয় সমাবেশ সফল করতে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের সব ইউনিটকে সর্বাত্মক উদ্যোগ ও অংশগ্রহণের আহ্বান জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় সম্প্রতি রাজবাড়ী জেলায় বিএনপি নেত্রী ও সমাজকর্মী সোনিয়া আক্তার স্মৃতিকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে আটক, বরিশাল জেলা ছাত্রদলের ১ নম্বর যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফোরকান হোসেন ইরানকে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়া এবং চট্টগ্রামে স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা রাসেলকে র‌্যাব তুলে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়। সভা মনে করে সরকার পুনরায় গুম, মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তারের মাধ্যমে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন দমন করতে চায়। সভায় অবিলম্বে গ্রেপ্তারদের মুক্তি ও মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সভায়, সম্প্রতি সরকারের সার্কুলারের মাধ্যমে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট এর আওতায় ২৯টি বিভাগকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।

এ বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যখন ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট আইন বাতিলের জন্য দেশে এবং বিদেশে মানবাধিকার সংস্থা ও বিশ্বের গণমাধ্যমে বিরূপ সমালোচনা হচ্ছে, সেই সময়ে আরও ২৯টি বিভাগকে এই আইনের ১৫ ধারায় অন্তর্ভুক্ত করায় গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে সম্পূর্ণ হরণ করা হয়েছে। অন্যদিকে সরকারের লাগামহীন দুর্নীতিকে আরো প্রসারিত করার সুযোগ সৃষ্টি করা হয়েছে। সভায় অবিলম্বে এই সার্কুলার প্রত্যাহার ও ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট বাতিলের দাবি জানানো হয়।

দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ভার্চুয়াল সভায় অংশ নেন ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সেলিমা রহমান, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।