গণসমাবেশের মাঠে জুমার নামাজ আদায় করলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা

গণসমাবেশের মাঠে জুমার নামাজ আদায় করলেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা

বরিশালে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের মাঠেই আজ শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ আদায় করেছেন সেখানে রাতে অবস্থান নেওয়া নেতা-কর্মীরা। কেন্দ্রীয়, স্থানীয় ও বরিশালের বিভিন্ন জেলা-উপজেলার নেতারাও এ সময় উপস্থিত হয়ে তাদের সঙ্গে নামাজ আদায় করেন। নামাজ শেষে বিভাগীয় গণসমাবেশ সফল করতে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। একই সঙ্গে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনা করেও দোয়া করা হয়।

শনিবার বরিশালের বেলস পার্কে (বঙ্গবন্ধু উদ্যান) অনুষ্ঠিত হবে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। এই গণসমাবেশে অংশ নিতে বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে বিভাগের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নেতাকর্মীরা এসে অবস্থান নিয়েছেন গণসমাবেশস্থলে। শুক্রবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গণসমাবেশস্থলে নেতাকর্মীদের আসা অব্যাহত রয়েছে। বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আসা কয়েক হাজার নেতাকর্মী শুক্রবার পৃথক দুটি জামায়াতে জুমার নামাজ পড়েছেন বঙ্গবন্ধু উদ্যানে।

একটি জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় মঞ্চ সংলগ্ন পশ্চিম পাশে, অপর জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু উদ্যানের পূর্ব কর্ণারের আনসার ক্যাম্প সংলগ্ন উদ্যানে। একটি জামায়াতে ইমামতি করেন বরগুনার আমতলি উপজেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমিন ও অপর জামায়াতে ইমামতি করেন পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা বিএনপির সদস্য মাওলানা ইকরামুল আহসান। বঙ্গবন্ধু উদ্যানে অনুষ্ঠিত পৃথক দুটি জুমার নামাজের জামায়াতে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, কেন্দ্রীয় সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুবুল হক নান্নু, দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মজিবুর রহমান নান্টু, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান ফারুকসহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা বিএনপির নেতারা অংশ নেন।

বিএনপির গণসমাবেশস্থলে বৃহস্পতিবার থেকেই বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে বিএনপির নেতাকর্মী, সমর্থকেরা আসতে শুরু করেন। শুক্রবার সকাল থেকেও আসছেন হাজার হাজার নেতাকর্মী। বৃহস্পতিবার রাতে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে কয়েক হাজার নেতাকর্মী রাত্রিযাপন করেছেন।

শুক্রবার থেকে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে এ কারণে পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার আলিপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. ফোরকান খান প্রায় অর্ধশত নেতাকর্মী সঙ্গে নিয়ে বরিশালে গণসমাবেশস্থলে এসেছেন বৃহস্পতিবার রাতে। থাকার কোনো জায়গা না থাকায় বৃহস্পতিবার রাতে মাঠে বিছানা পেতে রাতযাপন করেছেন তারা। শুক্রবার সকালে ফোরকান খান সমকালকে বলেন, 'দলকে ভালোবাসি, তাই সব বাধা বিপত্তি উপেক্ষা করে দু'দিন আগেই বরিশাল ছুটে এসেছি'।

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাকচিড়া থেকে বরিশালের সমাবেশের উদ্দেশে এসেছেন জসিম উদ্দিন আকন। পেশায় তিনি একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। শুক্রবার সকালে জসিম উদ্দিনসহ প্রায় ২০০ জন বিএনপি নেতাকর্মী একটি কার্গোতে করে বরিশালে এসেছেন। শুক্রবার রাতে তারা বঙ্গবন্ধু উদ্যানেই রাতযাপন করবেন। এত কষ্ট কেন করবেন- জানতে চাইলে জসিম উদ্দিন ও তার সঙ্গিরা বলেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই কষ্ট মাথায় নিয়েও গণসমাবেশের জন্য এসেছি।

শুক্রবার সকালে দেখা গেছে, বিএনপির গণসমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে বিভাগের বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা যে যেভাবে পারেন আসছেন। কেউ মাইক্রোবাসে, কেউ ছোট ট্রাকে, ট্রলার এবং মালবাহী কার্গো জাহাজে করে শতশত নেতাকর্মী আসছেন বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। তারা সমাবেশস্থলের কাছে কীর্তনখোলা নদীর চাঁদমারী ও কেডিসি ঘাটে নেমে মিছিল করে বঙ্গবন্ধু উদ্যানে প্রবেশ করছেন। তাদের অনেকের সঙ্গে আছে বিছানাপত্র, শুকনা খাবার ও পানি।

পিরোপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আলমগীর হোসেন শুক্রবার বেলা ১১টায় বলেন, আমরা অন্তত ১৫ হাজার লোক নিয়ে বরিশালে এসেছি। আরো অনেকে পথে আছেন। আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বঙ্গবন্ধু উদ্যানে রান্নাবান্না করে নেতাকর্মীদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। আজ রাতে আমরা সবাই বঙ্গবন্ধু উদ্যানেই থাকবো।