খেলা হবে: কাদের

খেলা হবে: কাদের

বিএনপিকে কেউ কি বিশ্বাস করে-এমন প্রশ্ন রেখেছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নিরীহ মানুষ বলে বিএনপি থেকে সাবধান। মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের মাসে স্বাধীনতার পরাজিত শক্তির সঙ্গে বিজয়ী শক্তির খেলা হবে। ভোট চুরি, দুর্নীতি, লুটপাট, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে খেলা হবে। ফখরুল, কান্নাকাটি করে লাভ নেই। কালকে চট্টগ্রাম জানিয়ে দেবে, মহাসমুদ্রের মহাবিক্ষোভ কাকে বলে।’

বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে কাদের বলেছেন, আওয়ামী লীগ পল্টনকে ভয় পায় না, ভয় পায় আপনাদের সন্ত্রাস-আগুনসন্ত্রাস আর লাঠি নিয়ে খেলাধুলার বদমতলবকে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাব না। আপনারা ঢাকা দখল করবেন! হায় রে আল্লাহ, কত বড় সাহস!’

শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। বার্ষিক সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম এই সংগঠনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটি হওয়ার কথা থাকলেও আজ তা হচ্ছে না।

কমিটি গঠন প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কমিটি যেভাবে হয়, কেন্দ্রীয় কমিটি হবে, একই সঙ্গে মহানগর উত্তর-দক্ষিণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটি ঘোষণা হবে। আমরা জীবনবৃত্তান্ত নিচ্ছি, যোগ্যতা বিচার করছি।’

ফখরুলের অন্তরে বড় জ্বালা উল্লেখ করে কাদের বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাব না। আপনারা ঢাকা দখল করবেন! হায় রে আল্লাহ, কত বড় সাহস! ফখরুলের অন্তরে বড় জ্বালা৷ কত চার লেন-ছয় লেন, রূপপুর, পায়রা, মাতারবাড়ী, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট, পদ্মা সেতু, কর্ণফুলী টানেল, মেট্রোরেল হয়ে গেল। জ্বালা কি কম? ’

আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ পল্টনকে ভয় পায় না, আওয়ামী লীগ ভয় পায় আপনাদের সন্ত্রাস-আগুনসন্ত্রাস আর লাঠি নিয়ে খেলাধুলা। সেই বদমতলব আপনাদের আছে। সে জন্যই পল্টন দরকার। সেখানে সব মজুত করবেন আর সারা দেশ থেকে...৷ এখনই শুনলাম, বিএনপি নেতা-কর্মীরা তাঁবু বসিয়েছে। আমরা তো গাড়িঘোড়া বন্ধ করিনি৷ আমি পরিবহননেতাদের অনুরোধ করেছি। তাঁরা আমাকে বলেছেন, কথা রাখবেন। ছাত্রলীগের সম্মেলন ৮ ডিসেম্বর থেকে ৬ ডিসেম্বরে এসেছে। আপনাদের ধারে-কাছেও ছাত্রলীগ যাবে না। তাহলে ভয় কিসের?’

এ সময় নাম উল্লেখ না করেই কিছু গণমাধ্যমের সমালোচনা করেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের৷ তিনি বলেন, ‘বিএনপির সব সভাই তো ফ্লপ। আমাদের জেলা সম্মেলনের ধারেকাছেও তাদের লোক হয়নি। এমনিই হাঁকডাক। কিছু গণমাধ্যম তাদের বন্ধু। আমাদের নিউজ (সংবাদ) দেয় না। এই যে এত বড় সভা, ছবি দেখা যাবে না। আজ এখানে ফখরুল দাঁড়িয়ে বক্তৃতা করলে পুরো ছবি কোনো গণমাধ্যমে দেখবেন, যারা আমাদের পছন্দ করে না। কথা বলেছি ঢাকা ক্লাবে, সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি। অনুরোধ করেছি, বেশি চাই না, আমাদের ডিউ কাভারেজটা (প্রাপ্য কাভারেজ) দিন। কিন্তু সেটা আমাদের দেয় না। কারও কারও কেন এত বৈরিতা, আমি বুঝি না। একটা দিনও তো কখনো কারও বিরুদ্ধে কিছু বলি না নাম ধরে। আপনারা জানেন, শুধু আমার ক্ষতি করার জন্য আমার ভাইকে নিয়ে প্রথম পাতায় কীভাবে প্রতিদিন ডাবল কলাম নিউজ করত! কেন এটা করলেন? এখন তো কোম্পানীগঞ্জে সব ঐক্যবদ্ধ, টুঁ–শব্দও নেই৷ এই নিউজ কিন্তু তারা দেয় না। আপনাদের কাছে সুবিচার চাই, আমার ন্যায্যটা চাই।’

ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন সম্মেলনের উদ্বোধক ও ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের বিদায়ী সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য।