ইভিএমের ত্রুটি সারানোর পর ভোট দিলেন মোস্তফা

ইভিএমের ত্রুটি সারানোর পর ভোট দিলেন মোস্তফা

ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ত্রুটির কারণে প্রথম দফায় ভোট দিতে পারেননি রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের হেভিওয়ের প্রার্থী জাতীয় পার্টির মুস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা। অবশ্য পরে ত্রুটি সারিয়ে ভোট সম্পাদন করেছেন তিনি।

এ ব্যাপারে তীব্র অসন্তোষ জানিয়ে জাপার এই প্রার্থী বলেছেন, আমরা আগেই বলেছিলাম অনেক ভোট নষ্ট হবে। মানুষ ভোট দিতে পারবে না। দ্রুত সকল কেন্দ্রের ইভিএমের কারিগরি ত্রুটি ঠিক করার দাবি জানান তিনি।

রংপুর সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের জাতীয় পার্টির মনোনীত মেয়র প্রার্থী মুস্তাফিজার রহমান মোস্তফা জানান, আমার ভোটকেন্দ্র হলো আলমনগর কলেজ রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ভোট কক্ষে প্রায় ১৫ মিনিট অবস্থান করে ভোট দিতে পারিনি। আমি সকাল ৯টায় কেন্দ্রে এসেছি। ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখি ইভিএম হ্যাং হয়েছে। কিন্তু এর আগে আমার হাতের আঙুলে ভোটগ্রহণের কালি দেয়া হয়। আমি ১৫ মিনিটের মতো অপেক্ষা করেও ভোট দিতে পারেনি।

মোস্তফা আরো বলেন, ইভিএমের অবস্থা যদি এমন হয়, তাহলে মানুষ ভোট দেবে কিভাবে? আমি ভোট না দেয়ার বিষয়টি এখানকার প্রিজাইডিং কর্মকর্তা আসাদুজ্জামানকে অবগত করেছি এবং সেই সাথে রিটার্নিং কর্মকর্তা আব্দুল বাতেন অবগত করেছি। পরে মেশিনের কারিগরি ত্রুটি ঠিক করার পর আমি ভোট দিতে পারি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।

মোস্তফা বলেন, ভোটাররা এসে বিভ্রান্ত হচ্ছে। কে কোন কক্ষে গিয়ে ভোট দিবেন সেটা বোঝা মুশকিল। কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আমরা চাই সবাই সুন্দর সুষ্ঠু পরিবেশ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক।

এসময় ইভিএম নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে তিনি বলেন, আমরা আগে থেকেই বলেছি ইভিএমে ত্রুটি হতে পারে। রিটার্নিং কর্মকর্তা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন সমস্যা হলে তারা ব্যবস্থা নিবে। কিন্তু আমার বেলায় যদি ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়, সাধারণ ভোটারের ক্ষেত্রে কি হবে এটা ভেবে দেখতে হবে।

তিনি অভিযোগ করেন, অনেক কেন্দ্রের ইভিএম ত্রুটিপূর্ণ। ভোটাররা ভোট দিতে পারছেন না। ভোট দিতে পারলেও ধীরগতি হচ্ছে। ১টা ভোট দিতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ও লাগছে। তাহলে ভোট পোলিং হবে কিভাবে। তিনি এসব সমস্যা দ্রুত সমাধানের দাবি জানিয়েছেন।

এ প্রসঙ্গে আলমনগর কলেজ রোড সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের প্রিজাইডিং অফিসার মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, খুব শিগগিরই ইভিএম ঠিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। একটি কক্ষে এই সমস্যা হয়েছে সবগুলোতে নয়।

তিনি আরো বলেন, সকাল থেকে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। এই কেন্দ্রে ১৮৭৫ জনের ভোট রয়েছে।

এদিকে রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা রিটার্নিং অফিসার আবদুল বাতেন জানিয়েছেন, ভোট ঘিরে কেন্দ্রে কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। প্রতি সাধারণ কেন্দ্রে ১৫ জনের এবং ৮৬টি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৬ জনের ফোর্স মোতায়েন রাখা হয়েছে।

এবার রসিকের ৩৩টি ওয়ার্ডের দুই লাখ ১২ হাজার ৩০২ জন পুরুষ এবং দুই লাখ ১৪ হাজার ১৬৭ জন নারী ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পাচ্ছেন। আর তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার একজন।

এবারের নির্বাচনে মোট প্রার্থী রয়েছেন ২৬০ জন। এরমধ্যে মেয়র পদে নয়জন, সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১৮৩ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৬৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নগরীর ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের একজন কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

মেয়র পদে নয় প্রার্থী হলেন জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ-ইনু) শফিয়ার রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমিরুজ্জামান পিয়াল, খেলাফত মজলিশের তৌহিদুর রহমান মণ্ডল রাজু, জাকের পার্টির খোরশেদ আলম খোকন, বাংলাদেশ কংগ্রেসের আবু রায়হান এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মেহেদী হাসান বনি ও লতিফুর রহমান মিলন।

এই নির্বাচনে মেয়র পদে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও সদ্য সাবেক মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এবং আওয়ামী লীগ মনোনীত হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়ার মধ্যে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।