সরকারের জন্য ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত চলছে: রিজভী

সরকারের জন্য ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত চলছে: রিজভী

আওয়ামী লীগ সরকারের জন্য ১০ নম্বর মহাবিপদ সংকেত চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শুক্রবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, এবার আর যেনতেন নির্বাচন করতে পারবে না সরকার। চারদিক থেকে সরকারের ওপর অন্ধকার ধেয়ে আসছে। শেখ হাসিনার হুঙ্কারে আর কাজ হবে না। নির্দলীয় সরকারের অধীনেই আগামী নির্বাচন হবে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় আশ্রয়ে গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ভেঙেচুরে তছনছ করে গোটা জাতিকে বন্দিশালায় আটকে রাখার এক দমবন্ধ করা দুঃশাসনের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক বিশ্ব ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো সোচ্চার হয়েছে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে যে অন্যায়ভাবে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে বন্দি করে রাখা হয়েছে এবং তারেক রহমানের বিরুদ্ধে যে মামলা প্রতিহিংসামূলক তা আজ বিশ্ববাসীর কাছে পরিষ্কার।

রুহুল কবির রিজভী আরও বলেন, দেশে গণতন্ত্রের সংকট আড়াল করতে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরির চেষ্টায় লিপ্ত তথাকথিত আওয়ামী বুদ্ধিজীবী, কলামিস্টসহ উচ্ছিষ্টজীবীরা। তারা ‘বাঙালি জাতি, বাঙালি সংস্কৃতি’র কথা বলে অবৈধ সরকারকে বৈধতা দিতে মরিয়া প্রয়াসে লিপ্ত। আওয়ামী সরকার পাকিস্তানি শোষকদের কায়দায় দেশের মানুষকে ক্রীতদাসের পর্যায়ে নামিয়ে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছে। অথচ আওয়ামী বুদ্ধিজীবীরা বাঙালি সংস্কৃতির জিকির তুলে সরকারের গুম, খুন, ক্রসফায়ারে হত্যা, গুপ্ত হত্যা ও রক্তাক্ত সংস্ত্রাসকে জায়েজ করতে উঠেপড়ে লেগেছে।

বিএনপির এ মুখপাত্র বলেন, আজকে গ্রাম থেকে শহরে সব পর্যায়ে নানা শ্রেণিপেশার মানুষ জেগে উঠছে। জনগণ নিপীড়কদের প্রতিহত করতে শুরু করেছে। দেশের মানুষ আজ অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ। বর্তমান সরকারের দুঃশাসনে বিশ্ববিবেকও জাগ্রত হয়েছে।

তিনি বলেন, এবার নিরানন্দে কেটে মানুষের ঈদ। গরিবরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে যে মাংস সংগ্রহ করেছেন তা থেকে কিছু অংশ বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে মাংস রান্নার মসলা কিনছেন। এ দৃশ্য মর্মান্তিক ও বেদনাদায়ক। তথাকথিত উন্নয়নের জোয়ারে গরিবদের ঘরে চেয়ে আনা মাংস রান্না করার তেল-মসলাও থাকে না।

রিজভী আরও বলেন, ক্ষমতাসীনদের বাজার সিন্ডিকেটের কারণে প্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম যেভাবে হু হু করে বাড়ছে তাতে মধ্যম ও স্বল্প আয়ের মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকেছে। তাই অনেকে কোরবানির ঈদে সংসারের বাজারও ঠিকভাবে করতে পারেনি। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা অনেক কমে গেছে।

তিনি বলেন, দেশের জনগণই এখন আওয়ামী লীগ সরকারের সবচেয়ে বড় প্রতিপক্ষ। তাই এ সরকারের আমলে মানুষের জীবন কাটে আতঙ্কে, ভয়ে, অবহেলায়, অনাহারে ও অর্ধাহারে।

বিএনপি এ নেতা বলেন, ঈদের মধ্যেও আওয়ামী সন্ত্রাসের কোনো কমতি নেই। সশস্ত্র মহড়া থেকে শুরু করে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর আক্রমণ চালানো হচ্ছে। তিনি দলের গ্রেফতার নেতাকর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তির জোর দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবি-উন নবী খান সোহেল, স্বেচ্চাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর শরাফত আলী সপু, স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, ঢাকা জেলার সভাপতি খন্দকার আবু আসফাক ও নির্বাহী কমিটির সদস্য তারিকুল ইসলাম তেনজিং প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।