সরকারের পতন না হলে মানুষ চিরস্থায়ী বন্দী হয়ে যাবে: রিজভী

সরকারের পতন না হলে মানুষ চিরস্থায়ী বন্দী হয়ে যাবে: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বর্তমান সরকার অবৈধ। এদেরকে পতন ঘটাতে না পারলে চিরদিনের জন্য বাংলাদেশের জনগণ বন্দী হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, এই সরকারের পতন ঘটাতে হবে। আওয়ামী লীগের পতন ঘটাতে হবে। আমার আপনার সন্তানের নিরাপত্তার জন্য তার পতন ঘটাতে হবে। না হলে এই দেশে আর কেউ কথা বলতে পারবে না। চিরদিনের জন্য বাংলাদেশের জনগণ বন্দী হয়ে যাবে শেখ হাসিনার কাছে। এই বন্দিত্ব থেকে আমাদেরকে মুক্ত হতে হলে তার পতন ঘটাতেই হবে।

বুধবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী মহিলাদলের উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক রায়ের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

রুহুল কবির রিজভী হুঁশিয়ার করে বলেন, এইবার শেখ হাসিনা যে নির্বাচন দিবে আমাদেরকে চুপ থাকলে হবে না। আমরা শান্তিপূর্ণ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে, মিছিল মিটিংয়ের মধ্য দিয়ে জনগণকে সাথে নিয়ে শেখ হাসিনার নির্বাচন আমরা হতে দিবো না, দিবো না, দিবো না; যতক্ষণ না নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা না হয়, শেখ হাসিনা পদত্যাগ না করে। নির্বাচন নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনেই আমরা করবো এটা আমাদের অঙ্গীকার।

চোরদেরকে মর্যাদা দেন শেখ হাসিনা এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে ৮০০ কোটি টাকা নাই হয়ে গেল, পাচার হয়ে গেল। তখন যিনি গভর্নর ছিলেন আতিউর রহমান তার দায় নাই? সেখানে তার তো দায় আছে। তিনি গভর্নর থাকা অবস্থায় ৮০০ কোটি টাকা উধাও হয়ে গেল উনিই তো দায়ী। শেখ হাসিনা তাকে পুরস্কৃত করেছেন কি করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস প্রফেসর হিসেবে মর্যাদা দিয়েছেন। অর্থাৎ চোরদেরকে মর্যাদা দেন কে? শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, আমরা অনেক ঘটনা জানি-কখন কি ষড়যন্ত্র হয়, কাকে কোথায় ডেকে নিয়ে আসা হয়, কত কিছু করা হয়। আমাদের নেতাদেরকে ধরে উধাও করে চার পাঁচ দিন পর বলা হয় উনি গোয়েন্দা হেফাজতে আছে।

রিজভী বলেন, আজকে অনেকেই বলছেন মানুষ যখন তার অভিযোগ নিয়ে গোয়েন্দা কার্যালয়ে যায় সেখানে নানা ষড়যন্ত্র করা হয়। আমরা তো জানি গোয়েন্দা কার্যালয় অর্থাৎ ডিবি অফিস বিরোধীদলের জন্য একটি আতঙ্ক ঘর। অনেক আয়না ঘর সেখানে রয়েছে। আর এখন গোয়েন্দা দপ্তর হয়েছে ভাতের হোটেল। অনেক বিভ্রান্তি তৈরি করে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদেরকে অপধাস্ত করার জন্য শুধু মিথ্যা মামলা জুলুম নির্যাতনই করছে না অনেক চক্রান্ত ষড়যন্ত্র সেখানে করা হচ্ছে সরকারের পক্ষ থেকে।

রাশেদ খান মেননের সমালোচনা করে তিনি বলেন, আপনি সম্রাটের মতো আজীবন ক্ষমতা ভোগ করবেন, সুষ্ঠু নির্বাচন দিবেন না। আর আপনি কেউ গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বললে রেজিনচেঞ্জের ষড়যন্ত্র পান। আপনারা বিনা ভোটের এমপি নিশিরাতের এমপি কয়দিন আগে না মেনন সাহেব আপনি নিজেই বলেছিলেন ২০১৮ সালে কোনো নির্বাচন হয় নাই, সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি।

রিজভী বলেন, যখনই বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা কেউ বলেছে সেটা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রই হোক বা অন্য কোনো গণতান্ত্রিক দেশ তখনই সেই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক তথ্য খুঁজেছে এই ফ্যাসিবাদী সরকার। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি নির্বাচন তখন মার্কিন রাষ্ট্রদূত ছিলেন ড্যান মজিনা। সেই ড্যান মজিনা যখন সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলেছেন তখন তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছিলেন কাজের বুয়া মর্জিনা। উনি যখন দিল্লিতে গেছেন বাংলাদেশের অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে কথা বলতে তখন অনেকেই বলেছেন ড্যান মজিনা বিএনপির নাকি স্থায়ী কমিটির সদস্য। আজকে যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলা হয় তখন ছড়িয়ে দিচ্ছে তারা নাকি আমাদের সেন্টমার্টিন নিতে চায়, অথচ তারা বলছে বাংলাদেশের স্বার্বভৌমত্বের প্রতি তাদের কোনো আগ্রহ নেই।

বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস এবং সঞ্চালনা করেন মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান।