আওয়ামী লীগ এবার ওয়াকওভার পাবে না: মির্জা ফখরুল

আওয়ামী লীগ এবার ওয়াকওভার পাবে না: মির্জা ফখরুল

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, কথা বেশি নয়, কথা একটাই, এ সরকারের পতন ঘটাতে হবে। এবার আমাদেরকে জয়ী হতেই হবে। ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চায় আওয়ামী লীগ। এবার আর ওয়াকওভার পাবে না আওয়ামী লীগ। এ দেশের জনগণ আর হতে দেবে না।

সোমবার বিকেলে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক আলোচনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৬তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষে উত্তরববঙ্গ ও বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম এ আলোচনা সভার আয়োজন করে।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, আসুন আমরা পণ করে সামনের দিকে এগিয়ে যাই, এ ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পুনরুদ্ধারের আন্দোলনকে দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ হিসেবে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা লড়াই করছি ফ্যাসিস্ট সরকারের পতন ঘটানোর জন্য, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে জন্যই লড়াই করে যাচ্ছি। স্বাধীনতার যে অর্জন এই সরকার সব নষ্ট ও ধ্বংস করে ফেলেছে। তারা এ দেশের আত্মাকে নষ্ট করেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার একটি লক্ষ্য নিয়েছে, যারা এদের বিরুদ্ধে কথা বলবে, আন্দোলন করবে তাদেরকে জেলে ঢুকিয়ে গ্রেপ্তার করে স্তব্ধ করতে চায়। কিন্তু এগুলো করে জনগণের আন্দোলন থামাতে পারবে না।

অনুষ্ঠানের প্রধান বক্তা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, কবিরা লিখেছেন, সকল দেশের রানী সে যে আমরা জন্মভূমি, কিন্তু এখন দেশে কেউ থাকতে পারে না। চায় না। কারণ যে দেশে রাজত্ব করে পাপীরা, সে দেশে আর ভালো মানুষ থাকতে পারে না। এমন এক অবস্থা যাচ্ছে দেশে। 

তিনি বলেন, প্রতিদিন কোর্টের লোহার শিকলে গিয়ে দাঁড়াতে হচ্ছে, পুলিশ আরও এক দাসত্ব বাহিনী হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। বিচারকরা অতিদ্রুত আমাদের সাজা দেওয়ার চেষ্টা করে যাচ্ছে, যাতে আমাদেরকে জেলে ঢুকিয়ে আগের মতো নির্বাচন করতে চায়। এজন্য আমাদের কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সবাই এখন এমপি আর মন্ত্রী হতে চায়, কিন্তু দেশটা বাঁচাতে চায় কয়জন? স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে এতো নেতা ছিল না আমাদের, কিন্তু আমরা তখনও বিজয়ী হতে পেরেছিলাম। এখন তো নেতা বেশি, কেউ কাজ করে না, ছাত্রদের তো আন্দোলনে দেখি না।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা যতই চেষ্টা করুক, সে এককভাবে নির্বাচন করতে পারবে না, এটা আমি বলে গেলাম। জয় নিশ্চিত, কারণ আমরা সত্যের পক্ষে আছি। জয় আমাদের হবেই।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, আজ প্রমাণিত হয়েছে, কেনো সেদিন আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তাদের টার্গেট হয়েছিল। সেটা আজ প্রমাণিত। তখন তারেক রহমান শুধু দেশে নয় আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্রকারীদের চক্ষুশূল হয়েছিল। এ জন্য তার ওপর জুলুম নির্যাতন করা হয়েছে। খালেদা জিয়ার পরই তারেক রহমান, এই কারণেই তার ওপর এতো নির্যাতন। এখনও সে ষড়যন্ত্র থেমে যায়নি, চালু আছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এখনও খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান বেঁচে আছেন। কিভাবে তাদেরকে নিশ্চিহ্ন করা যায়, সকল চেষ্টাই শেখ হাসিনা করে যাচ্ছে। কারণ শেখ হাসিনাকে দিয়ে বিদেশিরা যে স্বার্থ নিতে পারবে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে দিয়ে তো তারা তেমন স্বার্থ হাসিল করতে পারবে না।

রিজভী হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, পাতানো নির্বাচনে যারা সহযোগিতা ও কাজ করে যাবেন তারা এই দেশের জনগণের কাছে কালো তালিকাভুক্ত হবেন। আপনারা জানেন? শেখ হাসিনার ভয় কিসে? জনগণ। আর আমাদের ভরসা জনগণ আর গণমাধ্যম।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে অঙ্গীকার করব, যে আমাদের বিজয় না আসা পর্যন্ত আমরা আন্দোলনের মাঠ ছেড়ে যাবো না।

আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সভাপতিত্বে ও ব্যারিস্টার মীর হেলালের পরিচালনায় এতে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ফজলুর রহমান খোকন, ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রাশেদ ইকবাল খান, সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল, সহ-সভাপতি শেখ আল ফয়সল, মাহাবুব মিয়া, আসাদুজ্জামান আসাদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার পারভেজ আনোয়ার, সাফি ইসলাম, কৃষিবিদ মো. সোহরাব হোসেন সুজন, পাঠাগার সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিংকু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান প্রমুখ।