বিএনপিকে ওবায়দুল কাদেরের শেষ বার্তা

নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন শেখ হাসিনা

নির্বাচনকালীন সরকারের প্রধানমন্ত্রী হবেন শেখ হাসিনা

বিএনপিকে শেষ বার্তা দিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আগামী নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা নির্বাচনী সরকারের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন। নির্বাচনের পর জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে শেখ হাসিনা আবারো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে বসবেন। এটাই আমাদের বার্তা। গতকাল বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে শেখ রাসেল দিবস উপলক্ষে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। 

ওবায়দুল কাদের বলেন, মির্জা ফখরুলের পকেট গরম, তার কথাও গরম। হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে। আমাদের ধমক দেয়, ভয় দেখায়। মির্জা ফখরুল পাঁচ তারকা হোটেলে নাস্তা খেয়ে অনশন করে তিন ঘণ্টা। বিদেশি জুস খেয়ে অনশন বন্ধ করে দেয়। এই আন্দোলন তারা করছে। আমাদের বার্তা দিচ্ছে, দিনক্ষণ বলে দিচ্ছে। বলে, ক্ষমতা ছেড়ে দিতে হবে। আমি ফখরুল সাহেবকে বলতে চাই, আজ নয় কাল এভাবে বলবেন না। আপনারা বার্তা দিচ্ছেন। কে আপনি বার্তা দেয়ার?

তিনি বলেন, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করবেন কোন দোষে? বাংলাদেশের ম্যাজিক লিডার শেখ হাসিনা। এয়ারপোর্ট থেকে ফার্মগেট ৮ মিনিটে রাস্তা শেষ। এই হলো ম্যাজিক লিডার। ৮ মিনিটে ওই পদ্মা সেতু এপার থেকে ওপার। আগে আড়াই ঘণ্টায়ও যাওয়া যেতো না। অপেক্ষা করুন। আগামী মাসে আগারগাঁও থেকে মেট্রোরেল মতিঝিলে পৌঁছবে। আগামী ২৮ তারিখ দক্ষিণ এশিয়ায় প্রথম নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধন হবে চট্টগ্রামে। খেলা হবে বিএনপি’র বিরুদ্ধে। এই অপশক্তির হাতে বাংলাদেশের ক্ষমতা আমরা ফিরিয়ে দিতে পারি না। তত্ত্বাবধায়ক মরে গেছে। আজিমপুর গোরস্থানে চিরনিদ্রায় শুয়ে আছে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, অবরোধ করবেন? পাল্টা অবরোধ দেবো। দাঁড়াতে দেবো না। অবরোধ যারা করবে, তারাই সাধারণ মানুষের জন্য বাধা। তাদের বিরুদ্ধে মার্কিনিদের ব্যবস্থা কী হয়, সেটাও দেখা হবে। 

তিনি বলেন, কেউ কেউ বলে বিরোধী দলে থাকলে আওয়ামী লীগের স্পিড বাড়ে। সরকারি দলে আসলে একটু নরম হয়। এখন তো দেখি স্পিড আছে। শান্তিপূর্ণ, নিরপেক্ষ, অবাধ, স্বচ্ছ নির্বাচন করতে হবে। বাধা যারা দেবে তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা। আমরা তো নির্বাচন চাই। আমরা কেন বাধা দেবো। অবরোধ যারা করবে, ঢাকা অচল করবে যারা তারাই বাধা দিচ্ছে। এই বাধা যারা দিচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে বন্ধুরা কী ব্যবস্থা নেয় সেটা দেখবো।

তিনি বলেন, নৌকা ছাড়া মুক্তিযুদ্ধ থাকবে না। নৌকা ছাড়া গণতন্ত্র থাকবে না। গণতন্ত্র চাইলে নৌকায় ভোট দিতে হবে। জিনিসপত্রের দাম সারা দুনিয়ায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা শাস্তি পাচ্ছি। দাম বাড়াচ্ছে বড় বড় শক্তি। কাজেই আজকে মূল্যবৃদ্ধি।
আজকে আইএমএফের ডিরেক্টর বলেছে, বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অর্থনীনিতে সঠিকভাবে এগিয়ে চলছে। ধীরে ধীরে হলেও মুদ্রাস্ফীতি কমে যাচ্ছে। বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল এই মন্তব্য ইন্টারন্যাশনাল মনিটরি ফান্ড করে গেছে। এখন একটু কষ্ট হচ্ছে। আমরা স্বীকার করি। তবে একজন আছেন এই কষ্ট থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য যার রাতে ঘুম নাই। তিনি তিন ঘণ্টা ঘুমান। বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধুর পর এমন সৎ নেতা আমরা আর দেখি না। সেই শেখ হাসিনা লিডার আমাদের বুকের সাহস।

সমাবেশে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ৭৫’ এ শেখ পরিবার হত্যার সময় ১০ বছরের শিশু শেখ রাসেলও রেহাই পায়নি। যেদিন আমরা কান্নায় ভেঙে পড়ছি, সারা দেশব্যাপী রাসেল দিবস পালিত হচ্ছে সেদিন ওই খুনি খালেদা জিয়ার পার্টি সমাবেশ ডেকেছে। কারণ ওরা সন্ত্রাসী দল। খুনের মধ্য দিয়েই ওদের দলের সৃষ্টি হয়েছিল। উপস্থিত নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনারা সাবধান থাকবেন। ওরা আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের উদ্দেশ্যে তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অবরোধ যদি করেন, দেশে যদি কোনো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি করেন, অশান্তি করেন, নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করেন তাহলে দাঁত ভাঙা জবাব দেয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।

প্রেসিডিয়াম সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, পূজার পরে আমরাও মাঠে নামবো। যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, আওয়ামী লীগ সকলে মাঠে থাকবে। ২৮ তারিখের পরে যদি রাস্তায় নেমে কোনো সন্ত্রাস করেন, প্যাদানি দিয়ে বুড়িগঙ্গায় নামাবো।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, দেশকে নিয়ে একটি ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। সেই ষড়যন্ত্র হচ্ছে এই বিএনপি-জামায়াত বিদেশি শকুন আমাদের দেশে নিয়ে আসতে চায়। তারা জনগণের দিকে তাকায় না। তার দেশের জনগণের দিকে না তাকিয়ে কখন বিদেশি শকুন আসবে, এসে আমাদের ছোবল মারবে সেদিকে তাকিয়ে আছে। এদের চিনে রাখতে হবে। এরা বিদেশিদের হাতে দেশ তুলে দিতে চায়। আমাদের শক্তি এই জনগণ। আর তাদের শক্তি বিদেশি শকুন। এই বিদেশি শকুনদের পদ আহরণকারীদের হাত থেকে দেশটাকে রক্ষা করতে হবে।

ঢাকা দক্ষিণ সিটির মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস বলেন, গভীর ষড়যন্ত্রে বহির্বিশ্বের বিভিন্ন শক্তি ও বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়াশীল শক্তি এক হয়েছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আওয়ামী লীগ ও সকল প্রগতিশীল শক্তিকে পরাজিত করে তারা সংবিধান বিরোধী গণতন্ত্রকে আহ্বান করে তারা একটি পুতুল সরকার বসাতে চায়। তাই এখন আর গলা ফাটিয়ে মিছিল করে লাভ হবে না। এখন আমাদের তৃণমূল পর্যায়ে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে অবস্থান নিয়ে দুর্গ গড়ে তুলতে হবে। এবং সকল ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে হবে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শাহজাহান খান বলেন, বাস্তবে বিশ্বাস নেই, বিএনপি নির্ভর করে পাকিস্তান আর আমেরিকার ওপর। আমাদের আস্থা এই দেশের জনগণ।

তিনি বলেন, বিএনপি যেই অবস্থান ধর্মঘটের কথা বলছে, এই ঢাকা শহরে সেই অবস্থান ধর্মঘট পালন করতে দেয়া হবে না। এই বাংলার মানুষকে দিয়ে আমরা তাদের প্রতিহত করবো।