ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামার আহ্বান মির্জা আলমগীরের

ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামার আহ্বান মির্জা আলমগীরের

সরকার হটানোর আন্দোলনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামতে আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এই সরকারের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। আপনারা একটা নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে চলে যান। দেশের মানুষকে বাঁচতে দেন। সরকার নির্বাচন কমিশন একটা বানিয়েছে, তাদের কোনো কিছু ঠিক নেই। তারাও বলছে, যদি পরিবেশ অনুকূল হয়। তার মানে পরিবেশ অনুকূল নয়। তাহলে দরকারটা কী, পদত্যাগ করেন।

শুক্রবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে নসরুল হামিদ মিলনায়তনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের জাতীয়তাবাদী দল সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন ‘সোনালী দল’ এর উদ্যোগে ‘কৃষি উপকরণ ও খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি-কৃষক এবং নাভিশ্বাস’ শীর্ষক এক সেমিনারে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সংগঠনের সভাপতি অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডী।

ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আমি এই কথাটা বলতে চাই যে, আজকে সকলকে রাস্তায় বেরিয়ে আসতে হবে। এই কথায় যদি আমরা সবাই বিশ্বাস করি তাহলে আসুন আগামী দিনগুলোতে যে কয়েকটা দিন আছে, এখন কিন্তু মাসও নাই, কয়েকটা দিন আছে-সেই দিনগুলোকে বুকের মধ্যে সাহস নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।
তিনি বলেন, আরে নামলে তো মারবে।

মারছেই তো। এই ১৫ বছরে আমাদের হাজার হাজার লোককে মেরে ফেলেছে, আমাদের লোককে গুম করেছে। আমাদের ৫০ লক্ষ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। গতকালও ঢাকা মহানগরীতে ৭৭ জনকে অ্যারেস্ট করেছে। কোনো কথাই নাই, নামটা ঢুকিয়ে দিলেই হয়ে গেলো। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

আন্দোলনের সফলতার বিষয়ে আশার কথা শুনিয়ে তিনি বলেন, কথা একটাই, আসুন সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাস্তায় নামি। আজকে দেশের সকল মানুষ এক হয়েছে। সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলো এক হয়েছে। বাম-ডান সকলেই কিন্তু একটা কথাই বলছে যে, এই সরকারের অধীনে কখনো সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে না। একটা নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে চলে যান। দেশের মানুষকে বাঁচতে দেন।

তিনি বলেন, শোনা যাচ্ছে ইতিমধ্যে ডিসি-এসপি যারা নির্বাচন পরিচালনা করবেন, তাদের কাছে টাকা পৌঁছে গেছে। বিষয়টা ওই জায়গায়। গত ১৫ বছরে কী হারে ওরা লুট করেছে, দুর্নীতি করেছে তা ভাষায় বর্ণনা করা যাবে না। প্রতিটি পয়সা আমাদের এই সমস্ত জিনিসপত্রের দাম সব মিলে আমাদের পকেট থেকে নিয়েছে। তারা যে ঋণ করেছে সেই ঋণের ভার আমাদের ঘাড়ে এসে পড়বে। এর বিকল্প কিছু নেই। একটাই বিকল্প, এই সরকারকে সরাতে হবে। এটা আমার জন্য নয়, আপনার জন্য নয়। এদেশকে বাঁচানোর জন্য করতে হবে।

সরকার দেশকে মগের মল্লুক তৈরি করেছে মন্তব্য করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ভোট দেয়ার অধিকার চলে গেছে। বিচার পাওয়ার অধিকারও আমার নাই। সবাই জড়িত হয়ে গেছে। তিনি বলেন, কালকে উনি (শেখ হাসিনা) বলেছেন, বিএনপি সন্ত্রাসী দল। বিএনপি সন্ত্রাসী দল হলে আপনারা কি? আপনারা সন্ত্রাসের বাবা। আপনারা এই রাষ্ট্রটাকে সন্ত্রাসী রাষ্ট্র বানিয়ে ফেলেছেন। ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য রাষ্ট্রযন্ত্রকে পুরোপুরি সন্ত্রাসের একটা রাজত্ব বানিয়ে দিয়ে আপনারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চাইছেন।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি গোলাম হাফিজ কেনেডীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের সঞ্চালনায় সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, অধ্যাপক তাজমেরী এস এ ইসলাম, কৃষক দলের হাসান জাফির তুহিন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।