মন্ত্রিসভার শপথ প্রত্যাখ্যান করে এবি পার্টির গণশপথ

মন্ত্রিসভার শপথ প্রত্যাখ্যান করে এবি পার্টির গণশপথ

প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত ‘ফাইভ পার্সেন্ট সংসদ’ ও ডামি মন্ত্রিসভার শপথ- প্রত্যাখ্যান করে ‘গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সুশাসন ভিত্তিক বাংলাদেশ’ গড়ার জন্য আজ অভিনব এক ‘গণশপথ’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে আমার বাংলাদেশ পার্টি ‘এবি পার্টি’। এতে গণতন্ত্র ধ্বংস করে দেশকে ‘এক পরিবারের রাজ্যে’ পরিণত করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ চালিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারসহ দেশবাসীকে নতুন শপথে বলীয়ান হওয়ার আহ্বান জানানো হয়। এবি পার্টির আহ্বায়ক ও সরকারের সাবেক সচিব এএফএম সোলায়মান চৌধুরীর সভাপতিত্বে মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় বিজয় নগরস্থ বিজয়-৭১ চত্বরে এ গণশপথ অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচন বর্জনকারী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ ছাড়াও এবি পার্টির নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণ এই গণশপথে অংশ নেন। এএফএম সোলায়মান চৌধুরী ও বিভিন্ন দলের নেতৃবৃন্দ যৌথভাবে উপস্থিত জনতাকে গণশপথ পাঠ করান। সমবেত শপথ বাক্যে বলা হয়, আমি ও আমরা দৃপ্তকণ্ঠে শপথ করছি যে, লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত আমাদের প্রিয় জন্মভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের নীতি রক্ষার জন্য আমাদের চেষ্টা এবং সংগ্রাম অব্যাহত রাখবো। গণতন্ত্রের ছদ্মাবরণে যারা আমাদের ভোটাধিকার হরণ করেছে, দুঃশাসন চাপিয়ে দিয়ে দেশকে লুটপাটের স্বর্গরাজ্য বানিয়েছে, জনগণের অধিকার পদদলিত করে "ফাইভ পার্সেন্ট" একদলীয় সরকার কায়েম করে এমপি ও মন্ত্রিসভার প্রতারণামূলক শপথ নিয়েছে আমরা সমবেত কণ্ঠে তাদের প্রত্যাখ্যান করছি।

যারা ছাত্র-ছাত্রীদের জীবন ও বিবেক ধ্বংস করার জন্য অনৈতিক ষড়যন্ত্রমূলক শিক্ষাব্যবস্থা চালু করেছে, সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে কোটি কোটি কৃষক শ্রমিক দিনমজুর খেটে খাওয়া মানুষকে দুর্ভিক্ষ ঘটিয়ে তিলে তিলে মৃত্যুমুখে ঠেলে দেয়ার ষড়যন্ত্র করছে, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিটেন্স লুটেপুটে বিদেশে পাচার করে দেশের রিজার্ভ শূন্য করে ফেলেছে, যাদের দুর্নীতি ও চুরির কারণে চরম ডলার সংকট দেখা দিয়েছে এবং সাধারণ ব্যবসায়ীরা আজ পথে বসতে যাচ্ছে, যারা দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশসহ আইন শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী, প্রশাসন ও বিচার বিভাগে কর্মরত নাগরিকদের বিতর্কিত করে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার দিকে ঠেলে দিচ্ছে।

যাদের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ক্যাম্পাস দখল, মাদক ব্যবসা, প্রশ্নপত্র ফাঁস ও দলীয় করণের কারণে ৯৫ ভাগ মানুষের জন্য দেশ আজ কষ্টকর জাহান্নামে পরিণত হয়েছে। আমরা এই ‘৫ পার্সেন্ট’ শোষক লুটেরাদের কবল থেকে মুক্তি চাই। আমরা মনে করি এরা দেশ ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের শত্রু। রাষ্ট্র ক্ষমতার অপব্যবহার করে মেরে, কেটে, গুম, খুন ও দমন নিপীড়নের মধ্যমে জনগণকে দাস বানিয়ে তারা আমাদের প্রিয় দেশকে এক পরিবারের রাজ্য বানাতে চায়- আমরা তা হতে দেবেনা।

আজ থেকে আমরা নতুন করে শপথ নিচ্ছি।

সকল বাঁধা, ভয়-ভীতি ও জুলুম-শোষনের বিরুদ্ধে আমরা আমাদের প্রতিবাদ জারি রাখবো। এই ফাইভ পার্সেন্ট জালেমদের বিরুদ্ধে আমরা ৯৫ পার্সেন্ট মজলুম জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করব এবং নিয়মতান্ত্রিকভাবে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার চেষ্টা করবো।

মহান মুক্তিযুদ্ধের ঘোষণাপত্রের অঙ্গীকার অনুযায়ী সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য থেকে আমরা কখনও বিচ্যুত হবোনা। সর্বশক্তিমান মহান সৃষ্টিকর্তা আমাদের শক্তি ও সামর্থ দিন আমরা যেন, স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ্ন রেখে এই বাংলাদেশকে গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও সুশাসন ভিত্তিক একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করতে পারি- আমীন। শপথ গ্রহণ শেষে এই নতুন শপথে বলীয়ান হওয়ার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু’র সঞ্চালনায় গণশপথ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন এবি পার্টির যুগ্ম আহবায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অবঃ) আব্দুল ওহাব মিনার। গণশপথে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সার, ভাসানী অনুসারী পরিষদের সদস্যসচিব হাবিবুর রহমান রিজু, জাগপার সহ সভাপতি ও ১২ দলের সমন্বয়ক রাশেদ প্রধান, এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমূল হক ও এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ।