সংসদে নামে-বেনামে-ছদ্মনামে সবাই আওয়ামী লীগের: রিজভী

সংসদে নামে-বেনামে-ছদ্মনামে সবাই আওয়ামী লীগের: রিজভী

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সংসদে নামে- বেনামে-ছদ্মনামে সবাই আওয়ামী লীগের লোক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই এদের অন্নদাত্রী। আওয়ামী লীগ এককভাবেই লুটেছে ২২৩টি আসন। ৬২ জন স্বতন্ত্র ডামি এমপির ৫৮ জনই আওয়ামী লীগের নেতা। সেই হিসাবে, ২৯৯ জনের মধ্যে ২৮০ জনই মূলত আওয়ামী লীগ নেতা। এরমধ্যে জাতীয় পার্টি শেখ হাসিনার আশীর্বাদের বিরোধী দল। এদেরও লালন-পালন করেন শেখ হাসিনা। শেখ হাসিনা দয়া করে ১১ আসন ছেড়ে দিয়েছেন তাদের জন্য।

মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, ডামি নির্বাচনের পর একটি অবৈধ সংসদ বহাল থাকা অবস্থায় ডামি শপথে অবৈধভাবে জন্মগ্রহণ করা এই তথাকথিত দ্বাদশ সংসদ বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এবং গণতান্ত্রিক বিশ্ব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। এই সংসদ জনগণের নয়, আমি আর মামুদের।

তিনি বলেন, জনগণের ভোট বর্জিত ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে বাংলাদেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় বাকশালীয় সংসদের কলংকিত যাত্রা শুরু হচ্ছে আজ। পৃথিবীতে অদ্ভুত সরকারের অভিনব কিসিমের অদ্ভুত এক সংসদের সকল সদস্যই এক দলের।

বিরোধীদল কারা হবে, তারা কে কি বলবে-করবে, স্বতন্ত্র লীগের ভূমিকা কি হবে সবকিছুই পুতুল খেলার মতো সুতার গোড়া ধরে রাখবেন একজন।

রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ ফ্যাসিবাদ, নাৎসীবাদ ও মধ্যযুগের ভাবধারায় পুষ্ট একটি রাজনৈতিক দল। অবৈধ আওয়ামী সরকার এক সর্বনাশা বিভিষিকা সঞ্চার করে নতুন নতুন অশুভ পরিকল্পনার মাধ্যমে জনগণকে বঞ্চিত করে ক্ষমতা ধরে রাখছে। এবারও তারা সাড়ে বারো কোটি ভোটারদের বঞ্চিত করার মনুষ্যত্বহীন চক্রান্ত করেছে। আওয়ামী লীগ যে বরাবরই গণতন্ত্রের শত্রু সেটির কুৎসিত স্বরুপ এবারও উন্মোচিত হয়েছে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতার নেশায় আচ্ছন্ন অপরাধপ্রবণ একটি রাজনৈতিক দল। জনগণের ইচ্ছা-অনিচ্ছা এদের কাছে মূল্যহীন। আওয়ামী লীগ এমন একটি রাজনৈতিক দল যারা মানবিক পরিবেশের মূল থেকে উৎসারিত নয়। এজন্য বহু মত ও পথকে তারা সহ্য করতে পারে না। সেজন্য সুষ্ঠু নির্বাচনকে আড়াল করতে সর্বশক্তি নিয়োগ করে।

তিনি আরও বলেন, একটি রাজনৈতিক দলের টিকে থাকার প্রধান ভিত্তি জনসমর্থন। আওয়ামী লীগের জনভিত্তি ধ্বসে গেছে, সেই কারণে তাদের নেতারা আবোল-তাবোল কথা বলা। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ সাহেবদের কথাবার্তার কোন মূল্য নেই জনগণের কাছে। হিটলার-মুসোলিনির অনুসারীরা যেভাবে কথা বলতো এরাও সেভাবে কথা বলছে।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ৭ই জানুয়ারি ছিলো বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের 'লিফলেট বনাম প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার 'ডামি ব্যালটের লড়াই। দেশের ৯৫ ভাগেরও বেশি ভোটার শেখ হাসিনার কথিত 'ব্যালট' বর্জন করে 'লিফলেট' গ্রহণ করেছে। এটি গণতন্ত্রকামী জনগণের বিজয়। এটি গণতন্ত্রের পক্ষের ৬৩টি রাজনৈতিক দলের বিজয়। গণতন্ত্রকামী জনগণের বিজয় ঠেকাতে আওয়ামী লীগ বিরোধী দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। এরা সকল গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে নির্বিকার ও নিবিষ্টচিত্তে। হিংসা, হানাহানি আর অশান্তি মূল আদর্শ হিসেবে গণ্য করে আওয়ামী নেতারা।