দেশে ভয়াবহ আর্থিক নৈরাজ্য বিরাজ করছে: রিজভী

দেশে ভয়াবহ আর্থিক নৈরাজ্য বিরাজ করছে: রিজভী

দেশে এক ভয়াবহ আর্থিক নৈরাজ্য বিরাজ করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ডামি সরকার জনগণের বাঁচা-মরাকে পাত্তা দেয় না। বিশেষ করে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও নিম্ন আয়ের মানুষের রক্ত চুষে নিতেই এরা তৎপর। সারাদেশের তীব্র গ্যাসের সংকট থাকলেও এরই মধ্যে গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোরও তৎপরতা শুরু হয়েছে। দখলদার সরকারের নীতিই হচ্ছে গরীব মানুষের পকেট কাটা। ইতোমধ্যে উত্তরাঞ্চলের ৪টি জেলায় গ্যাস সংগ্রহ বন্ধ হয়ে গেছে। গ্যাসের সংকটে সার কারখানা থেকে শুরু করে শিল্প কারখানা বন্ধ হওয়ার উপক্রম। দেশে এক ভয়াবহ আর্থিক নৈরাজ্য বিরাজ করছে।

তিনি বলেন, সরকার আবারও ওয়াসার পানির দাম বৃদ্ধির পাঁয়তারা করছে। তোড়জোড় শুরু হয়েছে দ্রুত পানির দাম বৃদ্ধির জন্য। জনগণের পকেট কাটার আরেকটি কৌশল নিয়েছে দখলদার সরকার।

ঢাকা ওয়াসা লাভজনক প্রতিষ্ঠান হওয়ার পরেও অন্যায়ভাবে পানির মূল্যবৃদ্ধির আয়োজন চলছে। দেশের শহরগুলোতে প্রায় ৮০% মানুষের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। বড় শহরগুলোতে সুপেয় পানির বড়ই সংকট। সেক্ষেত্রে অযৌক্তিকভাবে ওয়াসার পানির মূল্যবৃদ্ধি হলে নাগরিক জীবনে আরেকটি নতুন সংকট তৈরি হবে।

রিজভী বলেন, দু”দিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিমসটেকের মহাসচিব ইন্দ্র মনি পান্ডেকে বলেছেন, আওয়ামী লীগ টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় আসায় বাংলাদেশের সমস্ত জনগণ এখন গণতন্ত্র উপভোগ করছে। আবার বুধবার সকালে গণভবনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল। বিএনপি-জামায়াত তাদের অপকর্মের সাজা যেন যথাযথভাবে দ্রুত পায়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।’

এ প্রসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশ থেকে যে গণতন্ত্রের পদ্ধতি পরমতসহিষ্ণুতাকে মুছে ফেলে একদলীয় একনায়কতন্ত্র স্থাপন করেছেন তা তার এই সাংঘর্ষিক বক্তব্যেই প্রমাণ করে। সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে গণতন্ত্র ও সত্যের বদলে কায়েম করেছে অন্যায়ের রাজত্ব। দেশে মতপ্রকাশ, চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা নেই। জেনেটিক্যালি ফ্যাসিস্ট বাকশালী দল-আওয়ামী লীগের রক্তের মধ্যেই রয়েছে বাকশালী কর্তৃত্ববাদীর বীজ। যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে গণতন্ত্রের শেষ চিহ্নটিকে মুছে দেন। গত ১৬ বছর ধরে দেশের মানুষ গণতন্ত্র নয়, স্বৈরাচারের নিষ্ঠুর সাজা ভোগ করছে। ভোটাধিকার বঞ্চিত হওয়ার যন্ত্রণা ভোগ করছে। আর বাংলাদেশে সীমানায় শুধুই অশান্তির আগুন।

৭ই জানুয়ারি নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে ডামি প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঘুমিয়ে থেকে নির্বাচনের নামে যেই সংসদের জন্ম দিয়েছেন, আগামীতে দেশে জনগণের ভোটে জনগণের কাছে জবাবদিহিতামূলক সরকার গঠিত হলে জনগণের কাছে প্রতিটি টাকার হিসাব দিতে হবে।