দেশে আওয়ামী স্টাইলের গণতন্ত্র চলছে : নজরুল ইসলাম খান

দেশে আওয়ামী স্টাইলের গণতন্ত্র চলছে : নজরুল ইসলাম খান

দেশে আওয়ামী লীগের স্টাইলে গণতন্ত্র চলছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।

বুধবার (৬ মার্চ) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের ৪৪তম প্রতিবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

তাঁতী দলের যুগ্ম আহবায়ক গোলাম মাওলা খান বাবলুর সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব হাজী মজিবুর রহমান ও সিনিয়র সদস্য মিলন ইসলাম খানের সঞ্চালনায় আরো বক্তব্য রাখেন- চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, গণ ও শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভুইঁয়া, তাঁতী বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন ইসলাম খান, সহ অর্থনৈতিক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, মৎসজীবী দলের সদস্য সচিব আব্দুর রহিম, তাঁতী দলের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।

তিনি বলেছেন, সংসদের ৩৫০টি আসনের মধ্যে সরকারের দয়ায় বিরোধী দল মাত্র ১৩টি আসন পেয়েছে। আবার স্বতন্ত্র ও অন্য দল থেকে যারা এসেছে তারাও সরকারপ্রধানকে স্যালুট দিয়ে এসেছে। এটা হলো বাংলাদেশ স্টাইলে গণতন্ত্র, আওয়ামী স্টাইলের গণতন্ত্র। কিন্তু এটা সত্যিকারের গণতন্ত্র নয়।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ১৯৭১ সালে আমরা সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলাম। ৭৫ সালে বাকশাল কায়েম করে সেই গণতন্ত্র কেড়ে নেয়া হয়েছিল। পরে ৭৯ সালে জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র চালু করেছিলেন। এরপর ৮২ সালে স্বৈরাচার এরাশাদ আবারো জোর করে ক্ষমতা দখল করে গণতন্ত্র হত্যা করেছে। তার বিরুদ্ধে লড়াই করে দেশে স্বৈবাচার এরশাদ পতন ঘটিয়ে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করেন খালেদা জিয়া। তাই এবারো বিএনপি সত্যিকারের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য রাজপথে আন্দোলনে নেমেছে।

তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক লড়াইয়ে বিএনপির মতো এতো ত্যাগ অন্য কোনো দল শিকার করেনি। আজকে হাজার হাজার নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে মিথ্যা মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া হয়েছে। গত কয়েক মাসে মিথ্যা ও হয়রানিমুলক মামলায় বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে সাজা দেয়া হয়েছে। এক এগারোর সময়েও অসংখ্য নেতাকর্মীকে সাজা দেয়া হয়েছিল, পরবর্তীতে সেগুলো টেকেনি। আগামী দিনেও লড়াই মুখে এসব মামলা ও সাজা টিকবে না।

বিএনপির এই সিনিয়র সদস্য বলেন, তেল-গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য ট্যাক্স নেয়া হচ্ছে। কিন্তু অনুসন্ধান না করে তা আমদানি করছে সরকার। আজকে সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য রাতারাতি বাড়িয়ে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করা হয়েছে। তাই সরকার পরিবর্তন ছাড়া, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ছাড়া লুটপাট ও দুর্নীতি বন্ধ হবে না। জনগণের কাছে দায়বদ্ধ সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

নজরুল ইসলাম বলেন, আজকে তাঁতী সমাজ বিপন্ন হয়ে পড়েছে। তাঁতী শ্রমিকরা যন্ত্রের কাছে পরাজিত হয়ে বেকার হয়েছে। আমাদের তাঁতের কাপড়ে ঐতিহ্য সেটাও লুট হয়ে যাচ্ছে। আজকে টাঙ্গাইল শাড়িও বাংলাদেশের সম্পদ নয়, পাশের প্রতিবেশী বন্ধু দেশ তাদের বলে দাবি করছে। অথচ সেই সময়ে সরকার প্রতিবাদ না করে চুপ থেকেছে। তাই তাঁতী শিল্পের সাথে প্রত্যেক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী দিনের আন্দোলনে রাজপথে নামার জন্য সবাইকে প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, আওয়ামী লীগ দেশের মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে দাবি করে দেশ শাসন করে দীর্ঘদিন ক্ষততায় থাকবে, আমাদের কোনো আপত্তি নেই। বুকে হাত দিয়ে বলেন, ২০২৪ সালে ভোট ডাকাতি মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছেন কিনা? তাই এই সরকারকে আমরা মানি না, তাদের আচার-আচরণ মানি না। সময় বেশিদিন দূরে নয়, হিসাব-নিকাশের দিন সামনে। আগামী দিনে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে, বিএনপিকে ক্ষমতায় আনতে হবে।

শিল্পমন্ত্রীর বরই দিয়ে ইফতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মাথা পুরোই খারাপ হয়ে গেছে। তারা যে ফল বা জিনিসের নাম নেয়, সেই জিনিসের দাম বেড়ে যায়। জনগণ খেজুর নাকি ফল দিয়ে ইফতারি করবে আপনারা ঠিক করে দেয়ার কে? দেশের মানুষ তাদের সার্মথ্য অনুযায়ী ইফতার করবে। পুলিশ নিরপেক্ষ হলে এক দিনও এ সরকার ক্ষমতায় থাকতে পারবে না।