
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ডা. মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, রাজনৈতিক সংস্কার নিয়ে চলমান সংলাপ ও আলোচনার মাধ্যমে একটি জাতীয় ঐকমত্যে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে। তিনি জানান, আগামী জুলাইয়ের মধ্যেই সংস্কার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে কাজ চলছে, এবং বেশিরভাগ রাজনৈতিক দল এর সঙ্গে একমত হয়েছে। তিনি বলেন, সংস্কার শেষ করে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন চায় জামায়াত।
সোমবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমীতে ঐক্যমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। ডা. তাহের জানান, চলমান আলোচনার ভিত্তিতে একটি নীতিগত দলিল ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়ন করা হবে। এই সনদে সব রাজনৈতিক দল স্বাক্ষর করবে এবং ন্যূনতম নীতিগত অবস্থান ঠিক করা হবে, যাতে নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা ও জনমনে বিভ্রান্তি দূর হয়।
নির্বাচন সময়সূচী নিয়ে ডা. তাহের বলেন, ‘আমরা ড. ইউনুসের নেতৃত্বে আস্থা রাখি এবং চাই একটি অংশগ্রহণমূলক, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক।’ তিনি জানান, নির্বাচন কবে হবে সে নিয়ে মতপার্থক্য থাকলেও ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে সময় নির্ধারণ করলে জনমনে আস্থা ফিরে আসবে। তার ভাষায়, ‘মে ও জুন মাসে নির্বাচন আয়োজনের পরিবেশ অনুকূল নয়। বরং ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে একটি সময় নির্ধারণ করলে রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনমুখী প্রস্তুতি নিতে পারবে, এবং জনগণের মধ্যেও একটি স্বস্তি তৈরি হবে।’
প্রবাসীদের ভোটাধিকারের বিষয়টি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বিদেশে থাকা প্রায় ১ কোটি ১০ লাখ প্রবাসী দেশের অর্থনীতিতে অনস্বীকার্য অবদান রাখছেন। কিন্তু এখনও তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করা হয়নি। এটি একটি বড় গাফিলতি। নির্বাচন কমিশনকে এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখতে হবে।’
ডা. তাহের আরও বলেন, ‘নির্বাচন শুধু তারিখ ঘোষণায় সীমাবদ্ধ নয়, বরং নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য একটি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড গড়ে তোলা জরুরি। প্রশাসন ও নির্বাচন-সম্পৃক্ত কাঠামো এখন থেকেই সেই প্রস্তুতি গ্রহণ করুক, যাতে নির্বাচন কেবল একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়া নয়, বরং জাতীয় উৎসব হিসেবেই উদযাপিত হয়।”
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে ডিসেম্বর মাসে নির্বাচনের বিরুদ্ধে কোনো আপত্তি নেই, যদি সংস্কার ও লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডের নিশ্চয়তা দেওয়া হয় এবং প্রবাসীদের ভোটাধিকার কার্যকর হয়। ডা. তাহের বলেন, ‘আমরা কোনো প্রহসনের নির্বাচনে আগ্রহী নই। রাজনৈতিক সহনশীলতা ও সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। তাহলেই একটি ঐক্যবদ্ধ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব হবে।’