যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবার পর এই প্রথম বারের মতো বিশ্বের শতাধিক দেশ নিয়ে গণতন্ত্র সম্মেলন আয়োজন করার উদ্যেগ নিয়েছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বাইডেন প্রতিশ্রুত ২ টি গণতন্ত্র সম্মেলনের প্রথমটি অনুষ্ঠিত হবে আগামী ৯-১০ ডিসেম্বর। যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যেগে করা এ গণতন্ত্র সম্মলেন আয়োজনে প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তানের নাম আমন্ত্রিতদের তালিকায় থাকলেও সে তালিকায় জায়গা পায়নি বাংলাদেশের নাম।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতি বিষয়ক পত্রিকা পলিটিকো'র এক প্রতিবেদনে আমন্ত্রিত দেশ সমূহের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সম্মেলনের বিষয়ে আনুষ্ঠানিক তালিকা এখনো প্রকাশ করেনি। তবে এ বিষয়ে খোঁজ নিয়েছে জাস্ট নিউজ।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের তথ্যমতে গণতান্ত্রিক ধারার বিকাশ এবং সুসংহত করতে ২ টি 'সামিটস ফর ডেমোক্রেসি'র আয়োজন করবে বাইডেন প্রশাসন। এ সম্মেলন দুটিতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ, সুশীল সমাজ এবং ব্যক্তি খাতের যৌথ সমন্বয় ঘটানোর হবে। সমসাময়িক সময়ে বিভিন্ন দেশে গণতন্ত্রের যে চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা মোকাবিলা এবং গণতন্ত্রের কার্যক্রমকে আরও গতিশীল করার এজেন্ডা থাকবে সম্মেলনের মূল বিষয়বস্তু।
স্টেট ডিপার্টমেন্ট জানিয়েছে প্রথম গণতন্ত্র সম্মেলনে তিনটি বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করে প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে যার প্রথমটিই হচ্ছে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া। বাকি যে দুটি বিষয়ে গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে তা হল- দুর্নীতির বিষয়ে সোচ্চার হওয়া, এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ অব্যাহত রাখা, এবং মানবাধিকার সমুন্নত রাখা।
যুক্তরাষ্ট্রের এই গণতন্ত্র সম্মেলনে ইন্টারনেট ব্যবহারের স্বাধীনতা নিয়ে 'দ্য এলিয়েন্স ফর দ্য ফিউচার অফ দ্য ইন্টারনেট' নামে একটি আন্তর্জাতিক জোট গঠন করার খসড়া আয়োজকরা তৈরি করছেন বলে প্রতিবেদনে জানিয়েছে পলিটিকো।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পৃথিবীতে যে সময়টাতে কর্তৃত্ববাদের বিকাশ ঘটে চলেছে সে সময়টাতে শুধু কথার আশ্বাস নয় বরং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে বিশ্বের গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করার উদ্যেগ দেখা যাচ্ছে প্রেসিডেন্ট বাইডেনের গণতন্ত্র সম্মেলনের কর্মপরিকল্পনাতে।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন এমন এক সময়ে এই গণতন্ত্র সম্মেলনের আয়োজন করেছেন যখন মিয়ানমার এবং সুদানে অন্তত ছয়টি সেনা অভ্যুত্থানের ঘটনা ঘটেছে।
প্রতিকী অর্থে গণতন্ত্র সম্মেলনের এ আয়োজন খুবি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন 'কারনেগি এনডোউমেন্ট ফর ইন্টারনেশনাল পিস' এর সিনিয়র ফেলো স্টিভেন ফেল্ডস্টেইন। তিনি বলেন, "এই একত্রিত হওয়াটা একটা গুরুত্ব বহন করে। কার্যত পরিবর্তন বিষয়ে সম্মেলনে যে ক্ষেত্রটা তৈরি হবে তার প্রতিফল সামনের দিকে দেখা যাবে।"
এ সম্মেলনের বিষয় পলিটিকো'র কাছে কোনো মন্তব্য করতে সম্মত হননি হোয়াইট হাউস ভিত্তিক ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিল মুখপাত্র। তবে আসন্ন সম্মেলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত একজন জানিয়েছেন পরিবর্তনশীল বিষয়গুলো সম্মেলন কেন্দ্রিক আলোচনায় রয়েছে।
তিনি বলেন, "প্রশাসন বিভিন্ন উদ্যেগ শুরু করা নিয়ে ভাবছে, গুরুত্ব পাচ্ছে ভিন্নধর্মী চিন্তা-ভাবনার মতো বিষয়গুলো।"
পলিটিকো'র পাওয়া তথ্য অনুসারে গণতন্ত্র সম্মেলনে তুরস্ক এবং হাঙ্গেরিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। দেশটির সরকার প্রধানদের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর ধরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে অবমূল্যায়ন করার অভিযোগ রয়েছে।
কেবি/